দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাংলাতেও রোজ বৃদ্ধি পাচ্ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে শেষ তিন দফার ভোট এক দফায় করার যে জল্পনা চলছিল, তা বৃহস্পতিবার উড়িয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম দফার নির্বাচন একসঙ্গে করতে গেলে যত বাহিনীর প্রয়োজন, তা বাংলায় নেই। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে লেখেন, ‘অতিমারির মধ্যে কমিশনের ৮ দফা ভোট করার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি। বর্তমানে যে ভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আমি কমিশনকে অনুরোধ করছি, বাকি দফার ভোট একটি দফাতেই সারা হোক। এর ফলে কোভিড সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে পারবেন মানুষ’।
নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন নতুন নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র। কমিশন সূত্রে খবর, সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম দফার নির্বাচন একসঙ্গে করা সম্ভব নয়। কমিশনের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে বলেছেন, তিন দফার ভোট এক দফায় করতে গেলে যত সংখ্যক বাহিনীর প্রয়োজন, এত দ্রুত তার ব্যবস্থা করা যাবে না। সূত্রের খবর, তিন দফার ভোট এক দফায় করতে গেলে আরও বাড়তি দেড় হাজার কোম্পানি বাহিনীর প্রয়োজন। যা এই মুহূর্তে ব্যবস্থা করা সমস্যার। কমিশনের আশঙ্কা, রাজ্য বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হলে বুথ দখলের আশঙ্কা থাকবে।
Amid an ongoing pandemic, we firmly opposed @ECISVEEP's decision to conduct WB polls in 8 phases.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 15, 2021
Now, in view of the huge surge in #COVID19 cases, I urge the ECI to consider holding the remaining phases in ONE go. This will protect the people from further exposure to #COVID19.
এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বাকি চার দফা ভোটের আগে রাজ্যে বাড়ানো হচ্ছে পুলিশ পর্যবেক্ষকদের সংখ্যা। কমিশন সূত্রে খবর, এক ধাক্কায় ২০ জন অতিরিক্ত পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু তা হচ্ছে না। আপাতত আরও ১১ জন পর্যবেক্ষক আসছেন। ফলে আগে যে পর্যবেক্ষকদের সংখ্যাটা ৫৫ ছিল, তা বেড়ে এখন হল ৬৬।
এমনিতে কোনও মতেই নির্বাচনী প্রচারের জন্য জমায়েতে রাশ টানা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় শুক্রবার সর্বদল বৈঠক ডেকেছে নির্বাচন কমিশন। বাকি চার দফার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনও রদবদল করা যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে।
কমিশনের তরফে রাজ্যের ১০টি রাজনৈতিক দলকে চিঠি লিখে এ কথা জানানো হয়েছে। ১৬ এপ্রিল, শুক্রবার, দুপুর ২টোর সময় কমিশনের রাজ্য দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে তাদের। স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি দল থেকে ১ জন করে প্রতিনিধি যাবেন এই বৈঠকে। কোভিড বিধির কথা মাথায় রেখেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুধু রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নয়, শুক্রবারের বৈঠকে এডিজি আইনশৃঙ্খলা জগমোহন ও স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে। তার আগে বৃহস্পতিবার কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, তিন দফার ভোট এক দফায় করার পরিকল্পনা নেই তাদের।