Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Civic Issues

Bengal Polls: ঘটনা ছোট ক্ষতি নেই, ‘রং’ তো রাজনীতিরই

নাগরিক সমাজের বক্তব্য, নিজেদের ‘সুবিধা’ করতে গিয়ে রাজনীতির কর্মীরা এলাকায় যে অশান্তি ছড়াচ্ছেন তার মাসুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২১ ০৭:৫৩
Share: Save:

দোল চলে গিয়েছে। কিন্তু রাজনীতির ‘রং’-এর প্রলেপ চলছেই শহরে!

আমজনতা থেকে পুলিশ-প্রশাসনের একাংশের অভিজ্ঞতা বলছে, ইদানীং যে কোনও ঘটনাতেই রাজনীতির রং লাগছে। সেই রং চড়িয়েই নিজেদের পালে নির্বাচনী হাওয়া কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে নাগরিক সমাজের বক্তব্য, নিজেদের ‘সুবিধা’ করতে গিয়ে রাজনীতির কর্মীরা এলাকায় যে অশান্তি ছড়াচ্ছেন তার মাসুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

ভোটের আগে গোলমালে রাজনৈতিক রং লেগে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য একেবারেই নতুন নয়। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর যেন তার প্রবণতা একটু বেশি বলেই মনে করছেন পোড়খাওয়া উর্দিধারীরা। তার উদাহরণ দিতে গিয়ে তাঁরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক দিনে সিঁথি থানা, পার্ক স্ট্রিট থানা, হরিদেবপুর থানা এলাকায় যে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে তা এই প্রবণতার বৃদ্ধিকেই প্রমাণ করছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, দোলের দিন সিঁথি থানা এলাকায় এক ব্যক্তি সাইকেলে চেপে যাচ্ছিলেন। তাঁর গায়ে রং দেওয়া এবং মশকরা করা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। ওই ব্যক্তিকে মারধরও করা হয়। এর পরেই অভিযোগ ওঠে, ওই ব্যক্তি বিজেপি করেন বলেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিক তদন্তে কোনও রাজনৈতিক বিরোধের ঘটনা খুঁজে পাননি তদন্তকারীরা। একই ভাবে হরিদেবপুর থানা এলাকায় বেহালা (পূর্ব) কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী ফ্লেক্স ছেঁড়ার ঘটনাতেও ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এক ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ ব্যক্তিকে ফ্লেক্স ছিঁড়তে দেখা গিয়েছে। কিন্তু সেই ব্যক্তির সঙ্গে স্থানীয় কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক এখনও মেলেনি। একই ভাবে সল্টলেক, নিউ টাউনেও তৃণমূল প্রার্থীদের ফ্লেক্স ছেঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার প্রচারে বেরিয়ে ‘আক্রান্ত’ হওয়ার অভিযোগ তুলে পার্ক স্ট্রিট অবরোধ এবং পার্ক স্ট্রিট থানা ঘেরাও করেন বালিগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী। প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে শ্যামপুকুর থানা এলাকার দুর্গাচরণ ব্যানার্জি রোডে। হোলির দিন মদ খাওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়, যাতে পরে রাজনীতির রং লাগে।

কেউ কেউ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ঠিক এক দশক আগে ‘পরিবর্তনের আবহে’ রাজনৈতিক পারদ চড়েছিল। তবে সে বারও খুচরো গোলমালে রাজনৈতিক রং এমন ভাবে লেগেছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। পুলিশেরও কেউ কেউ বলছেন, প্রতি বছরই ভোটের সময়ে খুচখাচ পোস্টার, ফ্লেক্স ছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায় এবং থেমেও যায়। এ বার যেন যুযুধান দলগুলির কর্মীরা সামান্য কিছু পেলেই তা নিয়ে তেড়েফুঁড়ে উঠছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এই গোলমালে রং চড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। তাদের একাংশের চিন্তা, তাতে গোলমাল অনেক বড় এলাকায় ছড়াতে পারে। সে দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে আইনরক্ষকদের।

আমজনতার প্রশ্ন, এ ভাবে শহরে ‘অহেতুক’ গোলমাল বাড়িয়ে লাভ কী? দলগুলি কি যেনতেন প্রকারেণ ভোটে জিততে চায়? তবে এ কথা কেউ কেউ বলছেন, জনতার একাংশও কিন্তু এই ধরনের গোলমালে উস্কানি দেয়। দমদমের এক যুবকের কথায়, ‘‘অনেকেই ভিন্ রাজ্যে বা বিদেশে থাকেন। কিন্তু সেখানে বসে কোনও ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ না-জেনেই গোলমালে উস্কানি দিতে থাকেন। কোনও কোনও শিক্ষিত ব্যক্তিও পাড়ায় বসে এই কাজ করে চলেছেন। এগুলি খুবই বিপজ্জনক মনোভাব।’’

পুলিশের বক্তব্য, ভোট পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক রং লাগবেই। সেটাই হয়তো রাজনীতির ‘দস্তুর’! তবে লালবাজারের দাবি, মিটিং-মিছিলের ক্ষেত্রে গোলমাল ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সব ধরনের গোলমালের ক্ষেত্রেই থানাগুলিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। যাতে গোলমাল বাড়তে না-পারে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy