কোমরে দড়ি পরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতদের। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থী শম্পা ধাড়ার প্রচারে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের রবিবারই বর্ধমান আদালতে তোলা হয়। তারা বিজেপি-র সক্রিয় কর্মী বলে দাবি করেছে জোড়াফুল শিবির। তবে গেরুয়া শিবির এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকেই হামলার ঘটনা ঘটে বলে পাল্টা দাবি করেছে তারা।
শনিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার দুই জায়গায় প্রচার চলাকালীন হামলার ঘটনা ঘটে। প্রথমটি ঘটে রায়নার দেনো গ্রামে। সেখানে তৃণমূলের সভাধিপতি শম্পার প্রচার চলাকালীন কয়েক জন দুষ্কৃতী ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের দাবি, সমর্থকদের নিয়ে পায়ে হেঁটে প্রচার সারছিলেন শম্পা। সেই সময় একদল মদ্যপ যুবক তাঁদের সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে শুরু করে। প্রতিবাদ করলে হাতাহাতি বেধে যায়। তাতে ভেস্তে যায় প্রচার।
ওই দুষ্কৃতীরা সকলেই বিজেপি-র কর্মী এবং কুড়ুল, লাঠি এবং তির ধনুক নিয়ে তারা হামলা চালায় বলে অভিযোগ জোড়াফুল শিবিরের। তাতে সেলা সহ সভাধিপতি-সহ ৬ জন আহত হন বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ পেয়ে এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে মাধবডিহি থানার পুলিশ। তবে দুষ্কৃতীরা বিজেপি কর্মী এবং দলে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই বলে দাবি করেন তৃণমূলের ব্লক সহ-সভাপতি সৈয়দ কলিমুদ্দিন। তিনি বলেন, জানান, ‘‘এখানে কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। ওরা সবাই আগে সিপিএম করত। এখন বিজেপি করে। বিজেপি নিজের দলের কর্মীদেরই অস্বীকার করতে চাইছে।’’
অন্য দিকে, শনিবার মেমারির নওহাটি গ্রামে বিজেপি প্রার্থী ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের প্রচারে সঙ্ঘর্ষ বাধে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হন বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মী। সেই ঘটনায়তেও ৫ জকে গ্রেফতার করেছে মেমারি থানার পুলিশ। যদিও বিজেপি-র দাবি, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
তবে এই ঘটনায় বিজেপি-কেই কাঠগড়ায় তুলেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই মিছিল করছিল বিজেপি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। তার মধ্যেই প্রচার চলাকালীন ধুন্ধুমার বাধে। তাদের সমর্থকদের হাড়ি ও বাইক ভাঙচুর করা হয়। এমনকি মহিলাদেরও হেনস্থা হতে হয়েছে বলে দু’পক্ষই অভিযোগ তুলেছে। বিজেপি-র অভিযোগ, রাস্তা আটকে তাদের মিছিল আটকায় তৃণমূল। তাদের সমর্থকদের মারা হয়।
মেমারি ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি হিমাদ্রী মণ্ডল বলেন, ‘‘বিজেপি কাল বিনা অনুমতিতে গ্রামে ঢুকে ঝামেলা করে। আমাদের নেতা কর্মীদের বাড়ি ও গাড়িতে ভাঙচুর করে। ওদের সঙ্গে সশস্ত্র বহিরাগত ব্যক্তিরা ছিল৷’’ মেমারি বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মধুসূদন ভট্টাচার্য জানান বলেন, ‘‘বিজেপি প্রার্থী ভীষ্মদেব ভট্টাচার্য গ্রামে গ্রামে প্ররোচনা দিচ্ছেন। বিজেপি চাইছে, ভোটারদের ভয় দেখাতে, যাতে মানুষ ভোট দিতে ভয় পান। পরাজয় নিশ্চিত জেনেই এমন কাজ করছে।’’
কিন্তু বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী স্মৃতিকণা বসুর পাল্টা দাবি, ‘‘ আমাদের প্রার্থী ও কর্মীরা প্রচারে গিয়ে ছিলেন নওহাটি গ্রামে। শাসকদলের লোকেরা তাদের মারধর করে। আমাদের কর্মীদের বাড়ি ভাঙা হয়। উল্টে পুলিশ বিজেপিরই ৫ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আমরা যথাযথ জায়গায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’ শাসকদলের লোকেরাই হামলা করেছিলেন এবং তাঁদের কেউ গ্রেফতার হননি বলেও দাবি করেন স্মৃতিকণা।
পর পর এই দুই ঘটননায় থমথমে গোটা জেলার পরিস্থিতি। একাধিক গ্রামে পুলিশ মোতায়েন হয়েছে। এসডিপিও দক্ষিণ আমিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘দু’টি ঘটনায় পুলিশ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে’’। তবে শুধু মাত্র বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তা মানতে চাননি তিনি।বলেন, ‘‘বিজেপির পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ অভিযোগের পরিপেক্ষিতে সবাইকেই গ্রেফতার করবে’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy