Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

হুমকি, অভিযুক্ত রবীন্দ্রনাথ

নির্বাচন কমিশনের হয়ে যারা কাজ করছেন, তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তুফানগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:২৬
Share: Save:

নির্বাচন কমিশনের হয়ে যারা কাজ করছেন, তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে। রবিবার তুফানগঞ্জের ঘোগারকুঠি এলাকায় দলের একটি নির্বাচনী বৈঠকে নাটাবাড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী রবীন্দ্রনাথবাবু নির্বাচন কমিশনের হয়ে যারা এমসিসি দলের কাজ করছেন তাদের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। প্রকাশ্য সভায় তিনি ওই কর্মীদের ‘সাবধান’ করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ওই এমসিসি একটা খুলছে। নির্বাচন কমিশনের থেকে। তোমরা কোথাও একটা ব্যানার লাগালে খুলি নিয়ে যাবে। তোমরা কোথাও একটা ঝান্ডা লাগালে খুলি নিয়ে যাবে। কোথাও একটা পোস্টার লাগালে খুলি নিয়ে যাবে। ওদের কয়ে দেবেন ৫ তারিখ পর্যন্ত ভোট। দাবাও দাবাও। ৫ তারিখের পর আমরাই থাকব।” সেই সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর সংযোজন, ‘‘তারপর আমাদের আন্ডারেই থাকা লাগবে। সাবধান।’’

সভার পরে এমসিসি দলের বিরুদ্ধে ওই ক্ষোভের ব্যাখাও দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, তাঁর নির্বাচনী এলাকায় এমসিসি দল ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। অনুমতি নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার, ব্যানার লাগানোর পরেও সে সব খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নাটাবাড়ি বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন অসংখ্য ব্যানার, পোস্টার খুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ পোস্টার, ব্যানার খোলার আগে নিয়ম অনুযায়ী নোটিস দিয়ে সময় বেঁধে দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। এমসিসি দলে থাকা বাম প্রভাবিত কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যেরা ওই সব কাজ করছেন বলে দাবি। ওই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগও করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “নিয়মের তোয়াক্কা না করে নোটিস কিংবা সময় দেওয়া হচ্ছে না। এমসিসি তাণ্ডব করছে। বেশিরভাগই কো-অর্ডিনেশন কমিটির লোক। পুলিশ নিয়ে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে পোস্টার, ব্যানার খোলা হচ্ছে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হচ্ছে না। আমরা তাই বাসিন্দাদের বলছি, ভয় পাবেন না।”

ওই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবু কৌশলে এমসিসি দলের সদস্যদের পরে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “৫ তারিখের পর ওদের কোনও মূল্য থাকবে না। তখন কোনও বাসিন্দা যদি বলেন, আমার অনুমতিতে লাগানো পোস্টার কেন খুলেছিলেন, কী জবাব দেবেন?” অভিযোগ ওই সভাতেই সিপিএমের উদ্দেশেও তিনি বলেন, “৫ তারিখ পর্যন্ত কমরেডদের দাপাদাপি থাকবে। গণনার পর আমরাই থাকব। কাজ করব।”

গোটা ঘটনায় রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কো-অর্ডিনেশন কমিটির কোচবিহার জেলা সম্পাদক আশিস গোস্বামী বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। সংগঠনের সদস্য সরকারি কর্মীরা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই কাজ করছেন। এ ধরনের বক্তব্যে কেউ রাখলে ওই কর্মীদের অনেকের মধ্যে ভয় তৈরি হবে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। গোটা বিষয়টি প্রশাসনের দেখা দরকার।” সিপিএমের নাটাবাড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী তমসের আলি বলেন, “ওই বক্তব্যের বিষয়টি শুনেছি। পরোক্ষ ভাবে এটা কমিশন ও ভোটারদের হুমকির নামান্তর। অভিযোগ জানাব।”

এ নিয়ে শোরগোল পড়েছে প্রশাসনের অন্দরেও। প্রশাসন সূত্রের দাবি, এমসিসি দল সঠিক ভাবেই কাজ করছে। সভার বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক কী মন্তব্য করা হয়েছে, সেটা যাচাই করা হবে। তারপর প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “কমিশনের নির্দেশ মেনে কাজ হচ্ছে। বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ দেখা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy