Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
গড়ে ফাটল ধরাতে মরিয়া জোট

অধিকারী গড়ে নিরঙ্কুশ থাকার লড়াই ঘাসফুলের

এ যেন শাসকের মান রক্ষার লড়াই। এ বারও ১৬-০ হবে তো? নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর তো বটেই সারা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নই।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

এ যেন শাসকের মান রক্ষার লড়াই। এ বারও ১৬-০ হবে তো? নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর তো বটেই সারা রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এখন ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নই।

জমি রক্ষা আন্দোলনের আবহে ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ-সহ অধিকাংশ পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়লাভ করে পরিবর্তনের হাওয়া তুলে দিয়েছিল। আর ২০১১ তো ইতিহাস। পরিবর্তনের সেই ঝড়ে বিরোধী থেকে শাসকদলে পরিণত হয় তৃণমূল। আর পূর্ব মেদিনীপুরের পুরনো সব হিসেব বদলে ১৬টি বিধানসভার সবক’টিই দখল করে তৃণমূল। তারপর ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটেও শাসক তৃণমূলের জয় অব্যাহত ছিল।

কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে অনেকটাই। তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে জোট বেঁধেছে বাম-কংগ্রেস। সেটা ভাবনা বাড়িয়েছে শাসকদলের। আবার ভোটের মুখেই নারদ কাণ্ডের কাঁটাও শাসক দলের কাছে বড় ভাবনা। কারণ এমন কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের অন্যতম কাণ্ডারি শুভেন্দু অধিকারীর। তবে তৃণমূল নেত্রীর আগাম ঘোষণা অনুযায়ী তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দুবাবু এ বার নিজে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন। এ বার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শাসকদল তৃণমূলের অপরাজিত থাকার মরিয়া লড়াই। আর তাই জেলায় ভোট প্রচারে আসা তৃণমূল নেত্রীর সামনেই শুভেন্দু অধিকারীর ঘোষণা, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ১৬ টি আসন আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দেবই।’’

অধিকারীদের গড়ে এ বার জয় পেতে মরিয়া লড়াই চালাচ্ছে বাম-কংগ্রেস জোটও। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে ভোটপ্রচারে জেলায় এসেছেন খোদ কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুদের সঙ্গে একমঞ্চে সভা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, মানস ভুঁইয়া-সহ প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা। আর শেষ দফায় ভোটের আগে কলকাতায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ বিরোধীদের আরও উজ্জীবিত করেছে বলে রাজনৈতিক
মহলের অভিমত।

শাসক-বিরোধীদের রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মাঝে প্রশ্ন উঠছে জেলায় তৃণমূলের ঘাঁটি কি আগের মত অটুট থাকবে না কি কিছু আসন খুইয়ে বিরোধীরা তাঁর দখল নেবে?

রাজনৈতিক মহলের মতে, নন্দীগ্রাম, খেজুরির মত এলাকায় শাসকদলের আধিপত্য বজায় থাকলেও জেলার বেশ কিছু এলাকায় শাসকদলের সঙ্গে বিরোধীদের জোড়দার লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। লড়াইয়ের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই জোরকদমে প্রচার চালিয়েছেন জোটের প্রার্থীরা। হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের তাপসী মণ্ডল, পূর্ব পাঁশকুড়া বিধানসভা কেন্দ্রে ইব্রাহিম আলি, তমলুক বিধানসভায় সিপিআই জেলা সম্পাদক অশোক দিন্দা , সদ্য তৃণমূল ছেড়ে ডিএসপি দলে যোগ দেওয়া মামুদ হসেনকে এগরা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে। আর রামনগর কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন যুব নেতা তাপস সিংহ। তাঁদের প্রত্যেকেই দুর্নীতি, সারদা ও নারদ কেলেঙ্কারি-এমনই নানা বিষয় নিয়ে সুর চড়িয়েছেন।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির বক্তব্য, ‘‘অবাধ ভোট হলে অনেকগুলি আসনেই আমরা জিতব।’’ যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর দাবি, ‘‘এ বারও জেলার ১৬টি আসনেই জিতবে তৃণমূল।’’ লড়াইয়ে রয়েছে বিজেপিও। কারণ পরিসংখ্যান বলছে, গত লোকসভা নির্বাচনে পূর্বের বহু কেন্দ্রে ভাল ফল করেছিল বিজেপি।

তৃণমূলের জমি রক্ষার লড়াই আর বিরোধীদের জমি পাওয়ার লড়াইয়ে কে জেতে সেটাই দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy