সারা দিন ধরে বুথ থেকে বুথে ছুটে বেড়ালেন এক যুবক, এক যুবতী।
যেখান থেকে অভিযোগ এসেছে, দু’জনে ছুটে গিয়েছেন সেখানেই। সেই যুবকটি যখন প্রিসাইডিং অফিসারকে শান্ত স্বরে বলেছেন, ‘‘আপনি প্লিজ দেখে নিন, এখানে খুব আস্তে ভোট হচ্ছে’’, যুবতী তখন তাড়া খাওয়া ক্ষিপ্ত জনতার মাঝে গিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেছেন তাঁদের।
সেই যুবক, জোট-প্রার্থী, সিপিএমের রাজীব মজুমদারের বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানোর পূর্ব-অভিজ্ঞতা নেই। এ বার মানিকতলা কেন্দ্রে তাঁকেই দাঁড় করানো হয়েছে সাধন পাণ্ডের বিরুদ্ধে।
অন্য দিকে, ১৯৮৫ সাল থেকে একটানা জিতে আসা তৃণমূলের সাধন পাণ্ডে মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে দিনটা মূলত কাটিয়ে দিয়েছেন বাড়িতে বসে। দিনের শেষে ‘যাই, একবার ঘুরে আসি’ মেজাজে বেরিয়ে পড়ে তৃণমূল কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউতের ওয়ার্ডের এক বুথে ঢুকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বেশ একটু বকাঝকা করে ফিরে এসেছেন।
তাঁর হয়ে পথে নেমে ছুটে বেড়িয়েছেন তাঁর যুবতী মেয়ে শ্রেয়া। জোট-প্রার্থীর ধাঁচেই যেখান থেকে অভিযোগ পেয়েছেন, ছুটে গিয়েছেন। তবে বুথে ঢুকতে পারেননি। ঘন ঘন ফোন করে বলেছেন, ‘‘আমাদের মহিলাদের পুলিশ মেরেছে। কেন এ ভাবে মার খাবেন মহিলারা?’’
পড়ন্ত বিকেলে সাধনবাবু বলেন, ‘‘কী করব! পুলিশের বড়কর্তাকে ফোন করে বলেছিলাম। তিনি বললেন, থানার ওসি-রাই যা করার করছেন। এখন থানার পুলিশ যদি আমাদের ছেলেদের ধরে মারধর করে, কিছু বলার নেই।’’ এ দিন সব ঘুরে রাজীববাবু তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোথাও ভোটারদের ভয় দেখানোর, কোথাও বুথ জ্যাম করার, কোথাও তাঁর সঙ্গীকে মারধরের, কোথাও তাঁর এজেন্টকে বুথ থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। শ্রেয়ারা কিন্তু তখন তৃণমূলের লোকদের মারধর করা, খাবার ফেলে দেওয়া, ভোটার স্লিপ ছিঁড়ে দেওয়া, বুথের ভিতরে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারকে হুমকি দেওয়া — সব অভিযোগই করেছেন হয় পুলিশ, নয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। সারা দিন রাস্তা-ঘাটে, বুথে, বুথের বাইরে পুলিশ ও বাহিনীর সক্রিয়তা নিয়ে তাই বিরোধীরাও কোনও প্রশ্ন
তুলতে পারেননি।
এলাকার বেশ কয়েকটি বুথে সকাল থেকে এত আস্তে ভোটগ্রহণ হয়েছে যে সকাল ৮টায় লাইনে দাঁড়ানো বৃদ্ধ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন সাড়ে দশটার পরে।
এতে কোথাও কোথাও ধৈর্য্যচ্যুতিও হয়েছে ভোটারদের।
নিস্তরঙ্গ ভোটের মধ্যে ছোটখাটো এ রকম আরও দু’তিনটি ঘটনা উল্লেখ করার মতো। যেমন, কেষ্টপুর থেকে ভোট দিতে আসা দুই যুবককে ধরে তৃণমূল কর্মীরা আলু ছোলানোর কাজ করিয়েছেন। অভিযোগ, এঁরা সিপিএমের ভুয়ো ভোটার। পরে তাঁদের বিরিয়ানি খাইয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাগমারি সিআইটি স্কুলে ইভিএম-এর ঘেরাটোপের সামনে একসঙ্গে দুই মহিলাকে ভোট দিতে দেখা গিয়েছে।
এত কিছু ঘটনার মধ্যে রাস্তায় কিছু ক্যাম্প অফিস ছাড়া বিজেপি-র অস্তিত্ব সে ভাবে চোখে পড়েনি। প্রার্থী সুনীল রায়কে দুপুরে পাওয়া গিয়েছে তাঁর বাড়িতেই। বলেন, ‘‘সংগঠন বলতে আমাদের তো কিছুই নেই। তবুও বলছি, এ বার একটা মিরাকল ঘটতে চলেছে — আমিই জিতব।’’
চামড়া পোড়ানো গরমে এক ঝলক খুশির হাওয়া!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy