আগাম সূচি জানাই ছিল। প্রস্তুতিরও সময় পাওয়া গিয়েছিল অনেকটাই। তা সত্ত্বেও পুলিশ ভিড় সামলাতে না পারায় শিলিগুড়ির মহকুমার নকশালবাড়িতে তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিংহের সমর্থনে আয়োজিত ঘাটালের সাংসদ তথা অভিনেতা দেবে’র জনসভা ভেস্তে গেল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সভাস্থলে ভিড়ের চাপে ভেঙে পড়ে বাঁশের তৈরি ব্যারিকেড। ভিড় সামলাতে লাঠি নিয়ে তেড়ে যেতে হল পুলিশকে। হুড়োহুড়িতে চোটও পান বেশ কয়েক জন মহিলা ও শিশু। পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় সভায় আসা নকশালবাড়ির বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হল বলে অভিযোগ উঠেছে।
দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘বিষয়টি ঠিক কী হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ আবার শিলিগুড়িতে দেবকে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মুকুল রায় দুটি সভা করলেও তৃণমূলের আশানুরূপ ভিড় হয়নি। বিশেষ করে, চম্পাসারির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের লাগোয়া মাঠে ভিড়ের সভায় বাসিন্দা ও তৃণমূল কর্মীদের নেতাদের বক্তব্য শোনার থেকেও উৎসাহ ছিল অভিনেতাকে নিয়েই। যদিও লোক ঠিকঠাক না হওয়ায় সন্ধ্যা ৬টায় সভা শুরু হয় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ।
আবার নকশালবাড়িতে সভা ভেস্তে য়াওয়া নিয়ে দার্জিলিং পুলিশের একাংশের দাবি, হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী না থাকাতেই সমস্যা হয়েছে। তা ছাড়া দেব নির্ধারিত সময়ে এলে এত জমায়েতও হত না। বাসিন্দারা আড়াই ঘন্টা দাঁড়িয়ে অধৈর্য হয়েই হুড়োহুড়ি শুরু করে। নকশালবাড়ির সার্কেল ইন্সপেক্টর কল্যাণ গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘আমাদের প্রাথমিক কাজ ছিল ‘ভিআইপি’ দের নির্বিঘ্নে সভায় ঢোকা বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করা। সেটা ভাল ভাবেই হয়েছে। তবে জায়গাটা ছোট হওয়ায় সমস্যা হয়েছে।’’
সভা শুরু হতেই অত্যুৎসাহী জনতাকে সামলানো যাচ্ছে না দেখে, মঞ্চে উঠে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বক্তব্য রাখবেন না বলে জানিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, ‘‘গোলমালে পড়ে গিয়ে অনেকে চোট পেতে পারেন। মেয়ে ও বাচ্চারা রয়েছে। তাই সভা দ্রুত শেষ করা উচিত বলে মনে করছি।’’
আর বক্তব্য রাখতে উঠলেও গোলমাল দেখে এক মিনিটের মধ্যেই স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দেওযার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন দেব। নকশালবাড়ির নেতা পৃথ্বীশ রায় বলেন, ‘‘এ ভাবে সভা হয় না। সমস্যা হয়েছে অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু হওয়ায়।’’
একই ভাবে সভা দেরিতে শুরু হয় শিলিগুড়ির চম্পাসারিতেও। সন্ধ্যা ছ’টায় সভা শুরুর কথা থাকলেও সেই সময় ছিল মাঠ ফাঁকা। চেয়ারও পাতা হয়নি। পরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার এবং জেলার নেতা কৃষ্ণ পাল ৭ টা নাগাদ সভায় গিয়ে মঞ্চ পরিস্কার, আলো, চেয়ার পাতার তদারকি শুরু করেন। কৃষ্ণবাবু মাইক নিয়ে বাসিন্দাদের সভায় আসার আহ্বান করতে থাকেন। তারপরে ধীরে ধীরে লোকজন সভায় আসতে থাকে। এখানেও প্রায় আড়াই ঘন্টা পর দেব’কে সঙ্গে নিয়ে আসেন মুকুলবাবু। প্রথমেই রাজ্য রাজনীতি, জোটের সমালোচনা করে তিনি বক্তব্য রাখেন। ৮টা নাগাদ ভাইচুং ভুটিয়া জেলার নেতা মদন ভট্টচার্যকে নিয়ে সভা আসেন। ইতিমধ্যে মোবাইলে দেবের সভা তোলা, হাত মেলানোর হিড়িক শুরু হয়ে যায়। মঞ্চে বসা নেতারাও মোবাইলে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পুলিশ সভায় সামনে ‘ডি জোন’ তৈরি করলেও তাতে লোক ঢুকতে থাকে। সভার শেষ নাগাদ দেব বক্তব্য রাখতে উঠলেই বাসিন্দারা উৎসাহ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। মঞ্চের একপাশের সিঁড়ির ধারে রশি দিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড দিয়েও লোক ঢুকতে থাকে। দেব মাইকে বলেন, ‘‘আপনার দীর্ঘ ক্ষণ আমাদের জন্য দাঁড়িয়ে থেকেছেন, এই জন্য অসংখ্যা ধন্যবাদ। ভাইচুং দেশের আইকন। ওঁকে জেতান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy