মোদীর সমাবেশের মঞ্চে অন্যান্যদের সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়।
খুশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর কী চাই! স্বাভাবিক ভাবেই হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় আপ্লুত মোদীর প্রশংসা শুনে।
বিজেপি-তে সাংগঠনিক পদের শীর্ষে যিনিই থাকুন, এই সত্যি কথায় কেউ ‘না’ বলতে পারবেন না যে দলের আসল ‘মুখ’ নরেন্দ্র দামোদার দাস মোদী। সভাপতি জেপি নড্ডা থেকে অমিত শাহ, সকলেই তাই কথায় কথায় ‘মোদী’জি, মোদী’জি’ বলে থাকেন। সেই মোদী হুগলিতে এসে হুগলির সাংসদের প্রশংসা করে গেলেন। দলের প্রায় সব শীর্ষ রাজ্য নেতার সামনে বললেন, ‘‘বহুত বড়িয়া হ্যায় লকেট’জি।’’ মঞ্চের নীচ থেকে স্পষ্টই দেখা যায় সেই দৃশ্য। বক্তৃতা শেষ করার পরে সেখানে উপস্থিত রাজ্য নেতাদের সবাইকে একে একে নমস্কার জানান মোদী। একেবারে শেষে মুখোমুখি হন লকেটের। হাত জোড় করে মোদীর প্রণামের ভঙ্গির জবাবে হাত জোড় করেন লকেটও। এর পরেই দেখা যায়, মোদী বাঁ হাত তুলে কিছু একটা বলছেন লকেটকে।
সেখানে উপস্থিত রাজ্য নেতারা জানিয়েছেন, মোদী সেই সময়ে সোমবারের সমাবেশ সফল হওয়ার জন্য লকেটের প্রশংসা করছিলেন। এক নেতা জানিয়েছেন, সেই সময় মোদী উপরে হাত তুলে বলেন, ‘‘হেলিকপ্টারে আসার সময়েই আমি দেখেছি, কত মানুষের জমায়েত হয়েছে। শুধু ময়দানেই নয়, এলাকার সব রাস্তাতেও ছিল বহু মানুষের ভিড়। বহুত বড়িয়া হ্যায় লকেট’জি।’’
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে হুগলির প্রতি আলাদা নজর রয়েছে বিজেপি-র। গত লোকসভা নির্বাচনে জেলার একটি মাত্র আসনেই জয় মিলেছিল দলের। হুগলি কেন্দ্রকে নির্ভর করে এ বার জেলার অন্য লোকসভা এলাকার বিধানসভাগুলিতেও ভাল ফল করতে চাইছে বিজেপি। সেই কারণেই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই মোদীকে নিয়ে সভা করা হল জেলায়। কলকাতা মেট্রোরেলের সম্প্রসারণের ভার্চুয়াল মাধ্যমে সূচনার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে হুগলি জেলাকেই।
মোদীর এই সভা যাতে জনসমাগমের বিচারে সফল হয়, তার জন্য মরিয়া ছিল বিজেপি। একদিন বাদ দিয়ে বুধবার এই মাঠেই সমাবেশ করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল এই ঘোষণা করার পরে সোমবারের সমাবেশ সফল করাটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় বিজেপি-র কাছে। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে গত কয়েকদিন নিজের লোকসভা এলাকার মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন লকেট। তাঁর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সংসদের বাজেট অধিবেশনের জন্য বেশ কিছু দিন লকেট দিল্লিতে ছিলেন। কিন্তু ফেরার পরে এই সমাবেশ সফল করাটাই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। তবে লকেট এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার একার চেষ্টায় কিছু হয়নি। রাজ্যের সব নেতারাই এই সমাবেশ সফল করার উদ্যোগ নিয়েছেন। স্থানীয় নেতা, কর্মীরাও অনেক পরিশ্রম করেছেন। তবে স্থানীয় সাংসদ হিসেবে আমারও কিছু দায়িত্ব থেকে যায়। আমি যথাসাধ্য সেটা করার চেষ্টা করেছি। প্রধানমন্ত্রী সমাবেশ দেখে খুশি হয়েছেন জেনে সত্যিই ভাল লাগছে।’’
সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হুগলির সাংসদ নিজের এলাকার সংস্কৃতিকেই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। তাতেও মোদী খুব খুশি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সোমবার তাঁর বক্তৃতায় মোদী বারবার হুগলির পাট শিল্পের কথা উল্লেখ করেছেন। পাট শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নানা উদ্যোগের কথাও বলেছেন। তবে তার সুরটা শুরুতেই যেন বেঁধে দিয়েছিলেন লকেট। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ফুলের মালা আনেননি। এনেছিলেন জেলার বিখ্যাত তাঁত শিল্পের এলাকা থেকে বানানো বিশেষ মালা। যা তৈরি করা হয়েছে তাঁতের কাপড় দিয়ে। এ ছাড়াও মোদীর হাতে তুলে দেন চটের ব্যাগ। যার উপরে মোদীর ছবি সহ লেখা— ‘সোনার বাংলা, গড়ব আমরা’। মোদীকে স্বাগত জানানোর সময় ঘোষণার দায়িত্বে ছিলেন লকেট। কিন্তু মোদীর হাতে ওই ব্যাগ তুলে দিতে নিজেই চলে আসেন। সোমবারের সভাস্থলের কাছেই চন্দননগর। আর চন্দননগর মানে দেবী জগদ্ধাত্রী। সেই কথা মাথায় রেখে লকেট তাঁর পক্ষ থেকে একটি জগদ্ধাত্রী মূর্তিও তুলে দেন মোদীর হাতে। সেটিও পাটের তৈরি। লকেট বলেছেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে মূর্তি দেওয়ার সময় আলাদা করে উল্লেখ করেছি যে, পাশেই চন্দননগর মা জগদ্ধাত্রীর পুজো ও উৎসবের জন্য বিখ্যাত। খুব খুশি হয়েছেন মোদী’জি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy