‘অনিলায়ন’ আর নয়! বাম জমানায় যে অভিযোগটা আগাগোড়া তাঁদের দল তথা সরকারের বিরুদ্ধে উঠত, ভোটের মুখে সাংবাদিক বৈঠকে তা কার্যত মেনে নিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বললেন, ‘‘জোট ক্ষমতায় এলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে নিরপেক্ষ ভাবে চলতে পারে, তা দেখব, এ কথা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলছি।’’
বাম জমানায় শিক্ষার সব স্তরে সিপিএমের দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছিল দস্তুর।
সিপিএমের প্রয়াত রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের নামে এর নাম হয়েছিল
‘অনিলায়ন’। পরিবর্তনের ডাক দিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এলেও শিক্ষাকে দলতন্ত্র থেকে মুক্ত করেননি। উল্টে শিক্ষার তৃণমূলীকরণ করছেন। কখনও যাদবপুর, কখনও প্রেসিডেন্সি, কখনও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়— স্বশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপরে গত পাঁচ বছরে আগাগোড়াই ছড়ি ঘুরিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা।
এক দিকে যেমন শিক্ষা, অন্য দিকে আইন-শৃঙ্খলা। বিরোধীরা বলেন, রাজ্যের থানাগুলি এখন নিয়ন্ত্রিত হয় তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব, কাউন্সিলর, বিধায়কদের অঙ্গুলিহেলনে। ঠিক একই ভাবে বাম জমানায় সিপিএমের লোকাল কমিটিগুলির বিরুদ্ধে থানার উপরে খবরদারির অভিযোগ উঠত। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এই সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে তার পুরোপুরি বিরোধিতা করেননি সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। বরং ‘কিছু ব্যতিক্রম’ ছিল বলে মেনে নেন তিনি। ক্ষমতায় এলে শিক্ষাকে দলীয় হস্তক্ষেপ-মুক্ত রাখার অঙ্গীকারের পাশাপাশি সূর্যবাবু বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন যাতে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করে, তা আমরা দেখব। নির্বাচনের পরে জোট সরকার গঠন হলে আমাদের প্রথম কাজ হবে, তৃণমূলের এক জন কর্মী-সমর্থকও যেন বাড়ি-ছাড়া না হন, সেটা দেখা।’’
ভোটের পরে রাজ্যে বাম, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠিত
হবে বলে দাবি করেন সূর্যবাবু। রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়ে দু’বছর আগে সিপিএম-কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি’ মঞ্চ গড়েছিলেন। সেই মঞ্চে প্রথম থেকেই যোগ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। অশোকবাবুর দেওয়া বিভিন্ন নির্দেশকে মমতা শুধু উপেক্ষাই করেননি, তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করেছিলেন। ঠিক একই ভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংঘাতেও বার বার মীরার পক্ষ নিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেস। এ দিন সূর্যবাবুর আশ্বাস,পুলিশ-প্রশাসন এবং শিক্ষার মতো ওই দুই কমিশনকেও রাজনীতি-মুক্ত রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হবে। মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশ যাতে রাজ্য সরকার মানতে বাধ্য তাকে,তার জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংস্কারের পথে এগোনোর কথাও বলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy