মিঠুন চক্রবর্তী। ফাইল চিত্র
বছর পনেরো আগে মুক্তি পাওয়া একটি ছবির সংলাপ বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রিগেড মাতিয়ে দিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। সেই সংলাপই এখন ‘কাঁটা’। ‘নকশাল’ মিঠুনের রাজনৈতিক ‘পরিক্রমা’ নিয়ে ছোড়া হচ্ছে একের পর এক ব্যঙ্গ-বাণ। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাকমুহূর্তে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শাণিত আক্রমণ চালাচ্ছেন অনেকেই। যদিও, এ সব শুনে মিঠুন জানিয়েছেন,তাঁর এ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই।
বাম, তৃণমূল শিবির হয়ে এ বার সটান বিজেপি-তে। বাঙালির আরও এক ‘দাদা’র এই রাজনৈতিক অবস্থান মানতে পারছেন না অনেকেই। ২০০৬ সালে তাঁর অভিনীত ছবি ‘অভিমুন্য’র সংলাপ ধার করে বিজেপি-র হয়ে ‘জাত গোখরো’ স্লোগান দিয়েছিলেন মিঠুন। সেই সংলাপকে হাতিয়ার করে তাঁকে পাল্টা খোঁচা দেওয়াও চলছে নেটমাধ্যমে।
শনিবার মিঠুন ছিলেন ‘সাজঘর’-এ। তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের জল্পনা সত্যি হয় রবিবার। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে আদ্যোপান্ত বাঙালি সাজেই তিনি উপস্থিত হন বিজেপি-র ব্রিগেড সমাবেশে। মিঠুনকে মঞ্চে পেয়ে তাঁর অভিনীত ছায়াছবির সংলাপ শুনতে চান বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে মিঠুন নিজের ছবির সংলাপ ধার করে প্রথমে বলেন, ‘‘মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে, এই ডায়লগটা চলবে।’’ এর পরই তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার প্রচার শুরু করার আগে, একটা জিনিস মাথায় রাখবেন। এখানে সকলের ভাষণ এক জায়গায় করলে যা দাঁড়ায় তা হল, আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলে ছবি।’’
ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে মিঠুনের নতুন রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে চলছে ব্যঙ্গের বিস্ফোরণ। যেমন একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে, দরজা ছুঁয়ে রয়েছে একটি গোখরো সাপ। ছবিতে স্পষ্ট করে কোনও ইঙ্গিত করা হয়নি বটে। তবে ব্রিগেড সমাবেশে মিঠুনের ‘জাত গোখরো’ সংলাপের প্রেক্ষিতে স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে ওই ছবিতে কাকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। আরও একটি মিমের বক্তব্য, ‘গোখরো তাড়াতে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহার করুন’। ওই মিমে একটি মিঠুনের ছবি দেওয়া কার্বলিক অ্যাসিডের একটি বোতলও দেখানো হয়েছে। কেউ আবার ‘ডিস্কো ড্যান্সার’-এর এই রাজনৈতিক মতাদর্শ বদলের সঙ্গে টেনেছেন নাচের ভঙ্গিমা বদলের তুলনা।
নেটমাধ্যমের এই শোরগোল অবশ্য প্রভাব ফেলেনি ‘মহাগুরু’র উপর। এ সব শুনে স্বকীয় ভঙ্গিমায় মিঠুন বলছেন, ‘‘আমি এ সব দেখিও না, আমি এ সব জানিও না। কে কী বলছেন, সেটা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। আমি কাজ করতে এসেছি, কাজ করব।’’ সদ্য বিজেপি-তে যোগ দেওয়া মিঠুনের হয়ে অবশ্য ব্যাট ধরেছেন দলের নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, ‘‘মিঠুনদাকে নিয়ে যে রসিকতা করা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ওঁর মতো এমন এক জন বড় মাপের মানুষকে নিয়ে এমন রসিকতা করা উচিত নয়।’’
এরই পাশাপাশি বিজেপি-ক তরফেও নেটমাধ্যমে সামনে এসেছে বেশ কিছু প্রচার। সেখানে তাঁকে সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তিনি পথশিশুকে নিজের সন্তানের মতো মানুষ করছেন। আরও দাবি করা হয়েছে, যে সব সুসন্তান বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন মিঠুন তাঁদের অন্যতম।
রবিবার বিজেপি-র ব্রিগেড মঞ্চে মিঠুনের উপস্থিতি জোরালো ‘ধাক্কা’ দিয়েছিল অনেককেই। তার জেরেই নেটমাধ্যমে স্রোতের মতো আছড়ে পড়েছে মিঠুনকে নিয়ে একের পর এক ব্যঙ্গচিত্র। তার পর কয়েকটা দিন কেটে গেলেও ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’কে ঘিরে আলোচনা থামেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy