রাহুল গাঁধী ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর আগে আপত্তি এসেছিল বাঁ দিক থেকে। এ বারের আপত্তি উল্টো দিক থেকে। কিন্তু বাংলায় নির্বাচনের প্রক্রিয়ার উপরে কেরলের দক্ষিণী ছায়া পড়া অব্যাহতই!
বিধানসভা ভোটের প্রচারের দামামা বাজাতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেড সমাবেশ করছে বামেরা। জোটসঙ্গী কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে এ বারের ব্রিগেড হবে যৌথ মঞ্চ। সেই মঞ্চে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, রাহুল গাঁধীদের বক্তা হিসেবে চেয়েছিল কংগ্রেস ও সিপিএম, দু’পক্ষই। শারীরিক কারণে সনিয়ার পক্ষে এখন এমন সমাবেশে হাজির হওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কেরলে বিধানসভা ভোটের সমীকরণের কথা তুলে রাহুলের বঙ্গ-যাত্রায় আপত্তি তুলেছে কেরলের কংগ্রেস। রাহুলকে পাওয়া যাবে না বুঝে চেষ্টা শুরু হয়েছে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে ব্রিগেডে পাওয়ার। কিন্তু সেই চেষ্টার কোনও ফল এখনও পর্যন্ত মেলেনি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সনিয়া-কন্যার ক্ষেত্রেও কেরলের তেরঙা শিবিরের আপত্তি আছে! এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের ব্রিগেডে আসার কথা।
কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা নিয়েই আগে প্রবল আপত্তি ছিল সিপিএমের কেরল শিবিরের। যে কারণে ২০১৬ সালে সিপিএমের বঙ্গ ব্রিগেড কংগ্রেসের হাত ধরেছিল দলের কেন্দ্রীয় লাইনের সঙ্গে সংঘাতে গিয়েই। হায়দরাবাদে ২০১৮ সালের পার্টি কংগ্রেসে বৃহত্তর সমঝোতার রাস্তা খুলে যাওয়ার পরে অবশ্য সিপিএমের অন্দরে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এ বার বাংলার ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটের বিযয়েও পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে সায় দিয়েছেন পিনারাই বিজয়নেরা। কিন্তু কংগ্রেসের অন্দরের ছবি ঠিক উল্টো!
অমেঠীতে পরাজিত হওয়ার পরে স্বয়ং রাহুল এখন কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদ। কেরলের বিধানসভা ভোটে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন শাসক জোট এলডিএফের সঙ্গে সম্মুখ সমর কংগ্রেস পরিচালিত ইউডিএফের। কেরল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে রাহুল বাংলার ব্রিগেড সমাবেশে গিয়ে বামদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রচারে নামলে তাঁদের রাজ্যে কংগ্রেসের প্রচারের ধার কমে যাবে। প্রিয়ঙ্কাকে নিয়েও তাঁদের আপত্তির জায়গা সেখানেই।
এআইসিসি নেতৃত্ব অবশ্য বোঝানোর চেষ্টা করছেন, বিভিন্ন রাজ্যের বাস্তবতা মাথায় রেখেই তাঁরা কৌশল ঠিক করছেন। এআইসিসি-র এক সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘রাহুল নিজে কেরলের সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও বাংলায় বামেদের সঙ্গে জোটে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড কিন্তু বাধা দেয়নি! সেটাও মনে রাখতে হবে।’’ তবে কেরল কংগ্রেসের যুক্তি মেনে চললে বাংলায় ভোটের গোটা প্রচারেই রাহুলের আসা চলে না! এখনও পর্যন্ত যা ঠিক আছে, কংগ্রেসের অন্দরের টানাপড়েন বুঝে রাহুল ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ তামিলনাড়ুতে দলের কর্মসূচিতে থাকার পরিকল্পনা করছেন। এরই মাঝে কলকাতায় হবে ব্রিগেড। যদিও সিপিএম শিবিরে প্রশ্ন, তামিলনাড়ুতেও ডিএমকে-র সঙ্গে কংগ্রেস ও বামেদের জোট হচ্ছে। বাংলার প্রভাব যদি কেরলে পড়ার কথা আসে, তা হলে পাশের রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে তো আরও বেশি করে পড়া উচিত!
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এআইসিসি নেতৃত্বের সঙ্গে ইতিমধ্যে দু’বার কথা বলেছেন, যাতে তাঁদের তরফে ওজনদার কাউকে ব্রিগেডে পাওয়া যায়। প্রিয়ঙ্কাকে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়াকে চিঠি দিয়েছেন এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও। কংগ্রেস শেষ বার যখন ব্রিগেডে সমাবেশ করেছিল, সেই ২০০৪ সালে বক্তা ছিলেন সনিয়াই। এ বারের ব্রিগেড নামে যৌথ হলেও আয়োজনে বহু যোজন এগিয়ে সিপিএমই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy