Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

আজ রান না বাড়লে ম্যাচ বাঁচানোই চিন্তা

দামি ব্যাট হলেই কি রান ওঠে! উত্তর জানা নেই। তবে আজকের ডার্বিতে বিরোধী টিম কিন্তু আগের মতো অগোছালো নয়। রান আটকে দেওয়ার পণ করে শনিবার থেকে তাঁরা শুধু গা ঘামাচ্ছেন তা না, গত বারের চ্যাম্পিয়ানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে স্লেজিংও শুরু করে দিয়েছেন বিক্ষিপ্ত কিছু এলাকায়। উপরি আম্পায়ারের মুখেও কড়া ভাব। তা হলে? দিদি রান রেট বাড়াতে পারবেন তো?

শঙ্খদীপ দাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:২০
Share: Save:

দামি ব্যাট হলেই কি রান ওঠে! উত্তর জানা নেই। তবে আজকের ডার্বিতে বিরোধী টিম কিন্তু আগের মতো অগোছালো নয়। রান আটকে দেওয়ার পণ করে শনিবার থেকে তাঁরা শুধু গা ঘামাচ্ছেন তা না, গত বারের চ্যাম্পিয়ানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে স্লেজিংও শুরু করে দিয়েছেন বিক্ষিপ্ত কিছু এলাকায়। উপরি আম্পায়ারের মুখেও কড়া ভাব। তা হলে? দিদি রান রেট বাড়াতে পারবেন তো?

উত্তরবঙ্গের ৪৫টি ও বীরভূমের ১১টি আসন-সহ মোট ৫৬টি আসনে আজ ভোট গ্রহণ হবে তৃতীয় দফায়। এর মধ্যে‌ ফরাক্কার উত্তরে খেলাটা একপেশে হবে ধরেই নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া শাসক দল আগাগোড়া যে সেখানে ‘ছাগলের তৃতীয় সন্তানের মতো’, তা খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন দিদিও। বরং দিদি জানেন, আসল খেলা হবে বীরভূমে। স্লগ ওভারে এই পিচেই রান তুলতে হবে। এবং এখানে রান রেট বাড়াতে না পারলে বিপদ অনিবার্য। এমনকী ম্যাচও ফস্কে যেতে পারে হাত থেকে!

কেন? কারণটা সহজ। বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া এবং দুই মেদিনীপুর-সহ মধ্য বঙ্গের পাঁচ জেলা মিলিয়ে কম বেশি নব্বইটা আসন রয়েছে। দিদি ও তাঁর ভাইদের লক্ষ্য এই ব্যাটিং পিচেই যত বেশি সম্ভব বাউন্ডারি হাঁকানো। ববি হাকিমের থেকে জানা গিয়েছিল, গত ভোটে এখানেই অনুব্রত মণ্ডলরা ডার্বির আগের রাতে বিরোধী দলের এজেন্টদের ঘরে ঢুকিয়ে ‘সিল’ করে দিয়েছিলেন। তার পর ফাঁকা মাঠে রান ঠেকাবে কে? বাউন্ডারির পর বাউন্ডারি হাঁকান দিদি। কিন্তু পিচটা এ বার নরম নরম ঠেকছে। ঘাস নেই। তাই বিরোধী দলের বেশির ভাগ এজেন্টকে সিল করে দেওয়া সহজ হবে কিনা, সন্দেহ রয়েছে ভরপুর। প্রশ্ন উঠছে সে কারণেই। রান রেট বাড়ানো যাবে কি? আর মধ্য বঙ্গে যদি রান রেট না বাড়ে, কলকাতা ও আশপাশের জেলায় খেলাটা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়বে না?

তাই বলা যেতে পারে, আজ বীরভূমের যুদ্ধটাই আসলে গোটা বাংলার যুদ্ধ। বিন্দুর মধ্যে সিন্ধু দর্শন হতে পারে আজকের খেলা দেখেই।

বীরভূমের ১১টি বিধানসভা আসনের মধ্যে গত লোকসভা ভোটে সাতটি আসনে এগিয়েছিলেন দিদি, জোট ৪টি আসনে। দিদির এ বার লক্ষ্য কত? অনুব্রত মণ্ডল বরাবরই জোর গলায় বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে দিদির ডাইরেক্ট কথা হয়।’’ তাই তাঁর টার্গেটটাই দিদির টার্গেট হিসেবে ধরা যেতে পারে। এ দিনও অনুব্রত বলেছেন, ‘‘১১টার মধ্যে ১১টা জেতাই লক্ষ্য।’’ তবে ড্রেসিংরুমে কান পেতে জানা গিয়েছে, অত দম নেই। টিম মিটিংয়ে বলা হয়েছে, অন্তত ৮টায় জিততেই হবে। কেন না ২০১৪-র ভোটের মতো রান রেট থাকলে অর্থাৎ তৃণমূল সাতটি আসনে থেমে গেলে, দক্ষিণবঙ্গে রান তোলার চাপ থাকবে। যা আরও কঠিন।

পরিস্থিতি যখন এমন, তখন প্রেসবক্স থেকে কিছু পরিসংখ্যান এ দিন প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত লোকসভা ভোটে রামপুরহাট, হাঁসন, নলহাটি, মুরারইতে জোটের ভোট শুধু বেশি ছিল তা নয়, দুবরাজপুরে জোটের তুলনায় দিদির ভোট ছিল মাত্র তিন হাজার বেশি। সিউড়িতে বেশি আট হাজার। এই দুই আসনেই চল্লিশ হাজারের বেশি ভোট ছিল বিজেপির। ফলে এখানে কয়েক হাজার ভোট এদিক ওদিক হলেই বীরভূমে সার্বিক রান রেট ঝুলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঘটনা হল, প্রথম দু’দফায় যে ৪৯টি আসনে ভোট হয়েছে, সেখানেও ব্যাটিং পিচ ছিল। কিন্তু রান রেট বেড়েছে কিনা, তা নিয়ে মতান্তর রয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা সেখানে রান রেট বাড়িয়েছেন বলে সদর্পে জানাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু এও ঠিক যে দ্বিতীয় দফার ভোটে আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, কুলটি, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জে আগের ভোটের থেকে কম ভোট পড়েছে। অর্থাৎ বিরোধীরা পাল্টা স্লেজিং শুরু করায় আগের তুলনায় জল কম মিশেছে বলে অনেকের মত। উল্টে প্রথম দু’দফার ভোটে ২২-২৩টি আসনে জিতবে বলে আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে জোট। এবং তারই জেরে শনিবার বিরোধী শিবিরে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠার ভাবটাও ছিল আগের থেকে বেশি। উত্তেজনার পরিবেশ সে জন্যই তৈরি হয়েছে। সঙ্গে সারদা-নারদ-গুড়-বাতাসায় মিলে মিশে পরিস্থিতিও থমথমে।

এখন দেখা যাক, দিদি রান রেট বাড়াতে পারেন কিনা!

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy