তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে লাগানো একাধিক ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকা ছিঁড়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার বরুণা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাজিয়ার এলাকায়। উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জে এ বার তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলে যোগ দেওয়া কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বসন্ত রায়। তাঁর বিপক্ষে কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোট প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন কালিয়াগঞ্জের বিদায়ী কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়। এ দিন সকালে তৃণমূলের কর্মীরা মাজিয়ার এলাকার বাসিন্দা দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির সদস্য হেমন্ত দাসের বাড়ির সামনে বসন্তবাবুর সমর্থনে লেখা একাধিক ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকা ছেঁড়া ও অর্ধপোড়া অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপরেই ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। সিপিএমের দাবি, তৃণমূল কর্মীরা সহানুভূতি পেতে নিজেরাই ওই কাণ্ড করে জোটের উপরে দায় চাপাচ্ছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, নির্বাচনে হারের আশঙ্কা করে শনিবার গভীর রাতে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় কংগ্রেস সদস্য দুলালচন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে কংগ্রেস ও সিপিএমের কর্মীরা বসন্তবাবুর সমর্থনে লেখা ৬টি ফ্লেক্স ও ২৫টি দলীয় পতাকা নানা জায়গা থেকে খুলে ছিড়ে হেমন্তবাবুর বাড়ির সামনে ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ দিন দুপুরে তৃণমূলের তরফে কালিয়াগঞ্জ থানায় দুলালবাবু সহ কংগ্রেস ও সিপিএমের অজ্ঞাতপরিচয় একদল কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য বা আইনানুগ পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়।’’
কালিয়াগঞ্জের তরঙ্গপুর এলাকার বাসিন্দা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের নেতৃত্বে গত এক মাস ধরে বসন্তবাবু কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় প্রচার চালাচ্ছেন। দলের রাজ্য কমিটির তরফে অসীমবাবুকে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার দলীয় নির্বাচনী প্রচার কমিটির উপদেষ্টার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। অসীমবাবুর অভিযোগ, গত এক সপ্তাহ ধরে বরুণা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কংগ্রেস ও সিপিএমের কর্মীরা হুমকি দিচ্ছে। নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পরাজিত হলে তৃণমূল কর্মীদের এলাকা ছাড়া করারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অসীমবাবুর দাবি, প্রচারে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এত দিন কোনও প্রতিবাদ করেননি। কালিয়াগঞ্জের সাধারণ মানুষ কংগ্রেস ও সিপিএমের অনৈতিক জোট মানতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘নির্বাচনে হারের আশঙ্কা করে শনিবার রাতে গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য দুলালবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেস ও সিপিএমের কর্মীরা বসন্তবাবুর সমর্থনে একাধিক ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকা নানা জায়গা থেকে খুলে সেগুলি ছিঁড়ে হেমন্তবাবুর বাড়ির সামনে ফেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। দলের তরফে পুলিশের কাছে অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছি।’’
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, ‘‘কংগ্রেস ও বামেদের নেতৃত্বে কালিয়াগঞ্জের সাধারণ মানুষ শান্তি ও আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে তৃণমূলকে হটাতে একজোট হয়েছেন। তাই তৃণমূলই হারের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের সহানুভূতি পেতে নিজেরাই নিজেদের ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকা নষ্ট করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে অপপ্রচার শুরু করেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy