ভোট চলছে।—নিজস্ব চিত্র।
খাতায়কলমে প্রথম দফার ভোটে ব্যাপক সাড়া পড়ল। সোমবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত তিন জেলায় গড়ে ভোট পড়েছে মোট ৭৫.২৪ শতাংশ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৮০.৪৪, পুরুলিয়ায় ৭৯.৪৮ এবং বাঁকুড়ায় ৭৮.৮৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সমস্ত ভোট কেন্দ্রের হিসেব আসা বাকি। সেই হিসেব ধরলে ভোটের শতাংশ আরও বাড়বে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া ভোটপর্ব মোটামুটি শান্তিতেই মিটেছে।
রাজ্যে বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে সাধারণ মানুষের খালি হাতে ফিরে আসার ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছিল। এ বার প্রথম পর্বে অন্তত তেমন ঘটনা বিশেষ ঘটেনি বলে বিরোধীরা মনে করছে। এ বারের ভোটে বিরোধীদের প্রথম আহ্বান ছিল, নিজের ভোট নিজে দিন, আর দ্বিতীয় আহ্বান ছিল সরকারকে পাল্টে দিন। প্রথম পর্বের ভোট দেখে অন্তত মানুষ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন বলেই বিরোধীরা মনে করছেন। যে কারণে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘প্রথম পর্বের ভোটেই বাংলার মানুষ ছক্কা মেরেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে এখন উইকেট আগলানোর জন্য লড়তে হবে। যেখানে যেখানে তৃণমূলের উইকেট আছে সেখানে আরও পড়বে।’’
একই কথা শোনা গিয়েছে বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পেরেছেন। তার জন্য নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ধন্যবাদ।’’ তবে, কমিশন এবং বাহিনীর সার্বিক কাজকর্মে আরও উন্নতির প্রয়োজন আছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের মত। রাজ্য স্তরের বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘কোনও কোনও জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বদলে রাজ্য পুলিশকে বুথের ভিতরে দেখা গিয়েছে। গ্রামের ভিতরে এবং বুথের ২০০ মিটারের বাইরে শাসকদল ভয়ও দেখিয়েছে। শালবনি, নয়াগ্রাম, মেদিনীপুর এবং গোপীবল্লভপুর থেকে অভিযোগ এসেছে। কমিশনকে আরও বেশি কোমর বেঁধে নামতে হবে, যাতে পরবর্তী পর্বের ভোট পুরোপুরি ত্রুটিমুক্ত হয়। অভিযুক্ত রাজ্য পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তারা আরও সাহস পেয়ে যাবে।’’
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে অভিযোগ জানালেও মোটের উপর মানুষ ভোট দিতে পেরেছে বলেই জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় কর্তৃত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খামতি ছিল। আমরা বার বার এই কর্তৃত্ব বজায় রাখার কথা বলেছি। বলরামপুর, শালবনি এবং জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে তৃণমূলের সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। আমি নিজে আজ তিন বার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদীকে ফোন করে কথা বলেছি।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘সর্ব শেষে বলতে পারি, তৃণমূলের মৃত্যুঘণ্টা বেজে গিয়েছে।’’
কমিশনের ভূমিকায় সিপিএমও সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট নয়। তার ইঙ্গিতও তারা এ দিন দিয়েছে। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘‘মানুষের আস্থা বাড়ানোর জন্য নির্বাচন কমিশন এ বার আগে থেকে ব্যবস্থা নিয়েছিল। নির্বাচন কর্মী, সরকারি আধিকারিক কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশ কর্মীদের অনেকেই দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের অভিনন্দন জানাই।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘কিন্তু, ব্যাপক পরিমাণে ছাপ্পা না হলেও প্রথম পর্বে কিছু জায়গায় নির্বাচনের যাবতীয় রীতি নীতি ভাঙার চেষ্টা হয়েছে। তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী মানুষকে ভয় দেখিয়েছে। এখনও ছ’দফা ভোট বাকি। আমরা চাই, প্রথম পর্বের ভোট থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিশন বাকি পর্যায়ে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’
শাসক দলের তরফে এখনও পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। ভোটপর্বের যাবতীয় ছবি পরিষ্কার হলে এবং বিরোধীরা কী বলছে সব জানা হয়ে গেলে রাতের দিকে তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের বক্তব্য জানাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy