শেষ অস্ত্রও তো প্রয়োগ হয়ে গেল! এরপর কি? জানা নেই আউশগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের আমানিডাঙা, বাবলাবুনি, ধোডাঙার ভোটারদের।
পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়ক ধরে তিন কিলোমিটার গিয়ে সেখান থেকে এক কিলোমিটার মোরাম রাস্তা। শেষ দু’কিলোমিটার আলপথে হাঁটলে তবে পৌঁছনো যায় মহল্লায়। বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে বছর দশেক আগে। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের অর্থে আইসিডিএস কেন্দ্র গড়া হয়েছে। সেই বাড়িতে আলো, পাখাও লাগানো আছে। কিন্তু গ্রামে আজও বিদ্যুৎ আসেনি। মূল বসতি থেকে বছরের পর বছর এ ভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তিন আদিবাসী গ্রাম!
কুনুর নদের একপাশে আমানিডাঙা। অন্য পাশে বাবলাবুনি, ধোডাঙা। দেবশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের এই তিন আদিবাসী গ্রাম মিলিয়ে ভোটারের সংখ্যা প্রায় একশো। গ্রামের মুখে সিপিএম ও তৃণমূলের পতাকা উড়ছে পতপত করে। বছরের পর বছর নেতারা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চেয়েছেন। কিন্তু, ভোট মিটলেই বেমালুম ভুলে গিয়েছেন প্রতিশ্রুতির কথা। এ বার তাই ভোট না দিয়ে প্রতিবাদ জানানোর রাস্তা নিয়েছিলেন। প্রায় তিনি কিলোমিটার মেঠো পথ হেঁটে কাঁকোড়া প্রাথমিক স্কুলের বুথে অন্যবার তাঁরা ভোট দিতে যান। এ বার আর বুথমুখো হননি।
ষাটোর্ধ্ব সোম সোরেন বললেন, ‘‘কেউ ভাবে না আমাদের কথা। কেউ অসুস্থ হলে খাটিয়ায় তুলে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়। রাতে হলে তো কথাই নেই। রাস্তা নেই বলে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা শেষ করতে পারে না।’’ শম্ভু সোরেন জানান, আড়াই কিলোমিটার দূরের পিয়ারিগঞ্জে স্কুল। বাচ্চাদের কোলে-পিঠে করে কেউ কেউ পৌঁছে দেয় স্কুলে। বর্ষায় সেই উপায়ও থাকে না। যোগাযোগের অসুবিধার জন্যই নবম শ্রেণিতে উঠে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। রবি মুর্মু বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ নেই। অথচ সরকারি বাড়িতে আলো-পাখা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা কি উপহাসের পাত্র?’’
ভোট বয়কট করে আশায় ছিলেন, প্রশাসনের কেউ হয়তো খোঁজ নেবেন। মিলবে রাস্তা, স্কুল কিংবা বিদ্যুতে প্রতিশ্রুতিটুকু। কিন্তু সেটুকুও হয়নি। দিনের শেষে সন্ধ্যায় হতাশা ঝড়ে পড়ল বুধি মুর্মু, বিশ্বনাথ সোরেনদের গলায়। বললেন, ‘‘কেউ আসেনি খোঁজ নিতে। আর কিছু জানি না।’’ সিপিএম প্রার্থী বিদায়ী বিধায়ক বাসুদেব মেটের দাবি, বাম আমলে অন্যত্র পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাসিন্দারা রাজি হননি।
তা হলে উপায়? উত্তর হাতড়াচ্ছেন তিন এলাকার বাসিন্দারা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy