আমতায় জোটের মিছিলে কংগ্রেস প্রার্থী অসিত মিত্র। ছবি: সুব্রত জানা।
২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। হাওড়ার আমতার মুক্তিরচক গ্রামে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এক গৃহবধূ ও তাঁর জেঠশাশুড়ি। স্থানীয় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই ঘটনায় অভিযুক্ত। মামলার শুনানি চলছে আমতা আদালতে।
রবিবার সকালে সেই মুক্তিরচক থেকেই যৌথ মিছিল বের হলো কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের। গ্রামটি সিপিএম অধ্যুষিত। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রামের দু’জন নির্বাচিত সদস্যই সিপিএম সমর্থিত নির্দল। তৃণমূল প্রার্থীদের তাঁরা বিপুল ভোটে হারিয়ে দেন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বহু জায়গাতেই যখন বুথে সিপিএম কর্মী বসাতে পারেনি। এই মুক্তিরচক গ্রামে তখন তারা নির্বাচন করেছে দাপটের সঙ্গে। সেই দাপট এ বার দেখা যাবে বিধানসভা নির্বাচনেও, এমনটাই দাবি করলেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। গ্রামটি পড়ে উলুবেড়িয়া উত্তরকেন্দ্রে। এখানে এ বার জোটের প্রার্থী হয়েছেন কংগ্রেসের অমিয় মণ্ডল। তাঁরই সমর্থনে মুক্তিরচক গ্রাম থেকে মিছিল বার করে সিপিএম। সেই মিছিলে নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে যোগ দেন কংগ্রেস প্রার্থীও। আকারে বেশ দীর্ঘ এই মিছিল থেকে এ দিন আওয়াজ উঠল, মুক্তিরচকের গণধর্ষণে জড়িতদের শাস্তি চাই। উলুবেড়িয়া উত্তরকেন্দ্রে এদিন এটাই ছিল জোটের সব চেয়ে বড় প্রচার কর্মসূচি। এই কেন্দ্রের বিধায়ক তৃণমূলের নির্মল মাজি। তিনি এবারেও দলের প্রার্থী। রবিবারে অবশ্য থেমে ছিলেন না তিনিও। সকালেই আমতা শহর এবং ভান্ডারগাছায় দু’টি রোড শো করেন তিনি। হাজির ছিলেন ছোট পর্দার কিছু তারকাও।
বাগনানে বিকেলে জোট প্রার্থী সিপিএমের মীনা ঘোষ মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে কংগ্রেস এবং বামফ্রন্ট যৌথ মিছিল বের করে। বাগনান স্টেশন রোড পরিক্রমা করে এই মিছিলটি। লোক সমাগম ছিল ভালই। বাগনানের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের প্রার্থী অরুণাভ সেন এদিন সকাল থেকেই ব্যস্ত ছিলেন বাড়ি বাড়ি প্রচারে। শনিবারেই তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। রবিবার বড় মিছিল করলেন আমতার কংগ্রেস বিধায়ক তথা এবারের প্রার্থী অসিত মিত্র। বিকেলে তাঁর কেন্দ্রের বাকসিতে সিপিএমের সঙ্গে যৌথ মিছিল করল কংগ্রেস। তাতে প্রার্থীর সঙ্গে হাজির ছিলেন সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার। অন্য দিকে বাড়ি বাড়ি প্রচার করলেন জগৎবল্লভপুরের তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল গনি। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব জেলায় তৃণমূল রাজনীতিতে বহুচর্চিত বিষয়। বর্তমান বিধায়ক আবুল কাশেম মোল্লাকে দল এবারহ প্রার্থী করেনি। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একটি অংশের বক্তব্য, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব না মেটাতে পারার দরুনই এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়নি কাশেমকে। বদলে প্রার্থী করা হয়েছে ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান গনিকে।
তিনিও প্রথম কয়েকদিন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ‘ভুলভুলাইয়া’-র মাঝে পড়ে কার্যত দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন। পরে অবশ্য সব সামলে নিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। রবিবার জগৎবল্লভপুর ১ পঞ্চায়েত এলাকায় তিনি বাড়ি বাড়ি প্রচারে ব্যস্ত থাকলেন। প্রচারের ফাঁকে হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘সবাই মিলে একসঙ্গে প্রচারে নেমেছি। কোনও সমস্যা নেই।’’ সাঁকরাইলে জোট প্রার্থী সমীর মালিক আলমপুর থেকে আন্দুল পর্যন্ত রোড শো করেন। পাঁচলার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক তথা দলীয় প্রার্থী গুলশন মল্লিক রোড শো করলেন সাহাপুরে। এ ছাড়াও শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া পূর্ব, দক্ষিণ, ডোমজুড় সর্বত্রই একদিকে যেমন কংগ্রেস-বামফ্রন্ট জোট, অন্য দিকে শাসক দল নিজের নিজের মতো করে ছুটির দিনটিকে ব্যবহার করলেন। থেমে ছিল না বিজেপিও। এদিন রাস্তায় নেমেছিল তারাও। ছুটির দিন বলে কথা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy