Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
CPIM

নন্দীগ্রামে লড়তে পারে সিপিএম, কংগ্রেসকে নিয়ে মোর্চায় বহাল জোট-জটও

নন্দীগ্রামের স্থানীয় এক নেতা এবং অন্য এক জনের নাম প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় রেখেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২১ ০৬:৫৯
Share: Save:

বিধানসভা ভোটে এ বার সব চেয়ে বেশি নজর নন্দীগ্রামের যুদ্ধক্ষেত্রে। যেখানে তৃণমূলের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ বার সংযুক্ত মোর্চার তরফে ওই আসনে প্রার্থী দিতে পারে সিপিএম। নন্দীগ্রামের স্থানীয় এক নেতা এবং অন্য এক জনের নাম প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় রেখেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে বামফ্রন্টের শরিক হিসেবে অতীতে প্রার্থী দিত সিপিআই। এ বার সংযুক্ত মোর্চার শরিক ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) ওই আসনে লড়তে পারে বলে প্রথমে কথা হয়েছিল। কিন্তু মালদহের মতো উত্তরবঙ্গের কোনও জেলা থেকে আসন পাওয়ার দাবি তুলে আইএসএফ বামেদের জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা নন্দীগ্রামে লড়বে না। স্বয়ং মমতা সেখানে প্রার্থী হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা চালিয়েছে সিপিএমও। আলিমুদ্দিন সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রাম আসন এ বার নিজেদের হাতেই সিপিএম রাখতে পারে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর আরও যে দুই আসন নিয়ে জোটের মধ্যে টানাপড়েন চলছিল, সেই এগরা ও পিংলা কংগ্রেসকে ছেড়ে দিয়েছে সিপিএম।

আলিমুদ্দিনে গিয়ে রবিবার সকালে সিপিএমের বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। সূত্রের খবর, আইএসএফের জন্য যে ৭টি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা কংগ্রেস বলেছিল, তার মধ্যে এখন কিছু রদবদল চেয়েছে তারা। একই ভাবে বামেদের সঙ্গে রফার ক্ষেত্রেও কিছু আসনের অদল-বদলের নতুন প্রস্তাব দিয়েছে তারা। যার ফলে, সিপিএমকে আবার আইএসএফের সঙ্গে কথা বলে কংগ্রেসের প্রস্তাবের বিযয়ে ফয়সালা করতে হবে।

সিপিএমের সঙ্গে বৈঠকের পরে আসনের তালিকা নিয়ে দিল্লি গিয়েছেন অধীরবাবু ও মান্নান। দিল্লিতে আজ, সোমবার এআইসিসি-র স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার কথা তাঁদের। অন্য দিকে, বিধান ভবনে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) মনোজ চক্রবর্তী ঘোষণা করেছেন, ৮২টি আসনে বাম ও কংগ্রেসের সমঝোতা চূড়ান্ত। তার মধ্যে শনিবার প্রার্থী ঘোষণা হওয়া ১৩টি আসনও আছে। আরও কয়েকটি আসনের বিষয়ে জোটে আলোচনা জারি আছে বলে মনোজবাবু জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল, এই দুই দলকে নিয়েই বাংলার মানুষ তিতিবিরক্ত। এই দুই শক্তিকে পরাস্ত করে জোটই বাংলার মানুষকে বিকল্প দেবে।’’

বিধান ভবনে এ দিন প্রদেশ নির্বাচন কমিটির (পিইসি) বৈঠকও ছিল। সেখানে অধীরবাবু, মান্নান, প্রদীপবাবুদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন দীপা দাশমুন্সির মতো নেতা-নেত্রীরাও। কংগ্রেসের বর্তমান বিধায়কদের মধ্যে ২১ জনকে ফের প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত ওই বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। দুই বিধায়কের টিকিট এখনও নিশ্চিত নয় বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর।

কংগ্রেসকে নিয়ে মোর্চায় অন্য জটিলতাও অবশ্য বহাল। পুরুলিয়ার জয়পুরের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ আসনেও প্রার্থী দিতে চায় প্রদেশ কংগ্রেস। তেমন হলে ওই দুই আসনেই ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ হবে, যা কংগ্রেসের অন্দরেই অনেকে চান না। জয়পুর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা না হওয়া নিয়ে এ দিনই কোটশিলায় কংগ্রেস কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। কয়েকশো কর্মী তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে জয়পুর কেন্দ্রে কংগ্রেস লড়বে কি না, তা স্পষ্ট করার দাবি জানাতে থাকেন। দলীয় কার্যালয়ে কিছু সময় আটকে পড়েন নেপালবাবু। পরে নেপালবাবু বলেন, ‘‘তিনটি কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। জয়পুরে প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় কর্মীরা বিষয়টি জানতে চাইছেন। রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি, দল এই কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে।’’ বাম শিবিরের অবশ্য ধারণা, তাদের কংগ্রেসের প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে ‘চাপ’ সৃষ্টির জন্য এই ঘটনা ‘ঘটানো’ও হয়ে থাকতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress CPIM West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy