Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Polls 2021

জোটে জট কাটাতে চেষ্টা দফায় দফায়

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রদের সঙ্গে বুধবার বহরমপুর থেকে ফোনে কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৬:৫৪
Share: Save:

জট কাটিয়ে আসন-রফার পথ ঠিক করতে উদ্যোগী হল সংযুক্ত মোর্চার তিন শরিক সিপিএম, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)। আগের দিন যেখানে জট পেকেছিল, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সিপিএম এবং আইএসএফ কিছুটা নমনীয় হয়েছে।

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রদের সঙ্গে বুধবার বহরমপুর থেকে ফোনে কথা বলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ‘সফল’ ব্রিগেড সমাবেশের পরেও আসন-রফা নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন যে ভাল বার্তা দিচ্ছে না, সেই ব্যাপারে একমত দু’পক্ষই। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ থেকে গোটাদুয়েক আসন ছেড়ে দিতে পারলে রফা-সূত্রের পথ যে অনেকটাই পরিষ্কার হয়, সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসকে। রাতে আবার আইএসএফের চেয়ারম্যান নৌসাদ সিদ্দিকিকে আলিমুদ্দিনে ডেকে কথা বলেছেন সিপিএম নেতারা। অন্য দিকে, এআইসিসি-র পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে দলের রাজ্য ও জেলা নেতাদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

নতুন দল আইএসএফ-কে বেশি আসন ছাড়তে গেলে যে মূল জোটই ভেস্তে যেতে পারে, তা বুঝতে পারছেন বাম ও কংগ্রেস, উভয় পক্ষের নেতৃত্বই। সেই বার্তা দেওয়া হয়েছে আইএসএফ-কেও। রাতের খবর, কংগ্রেসের অনুরোধ মেনে ৯২টি আসনের তালিকা তাদের পাঠিয়ে দিয়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। কিন্তু তালিকা দেখে কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত মতামত জানায়নি। আবার মুর্শিদাবাদ, মালদহ থেকে কোনও আসনই না পেলে আইএসএফ-ও রফা সম্পূর্ণ করতে রাজি নয়।

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মতে, ‘কড়া’ অবস্থান নিয়ে অধীরবাবু আইএসএফের মতো শক্তিকে বেঁধে রাখতে চাইছেন। তাতে রাজনৈতিক ভাবে সংযুক্ত মোর্চারই লাভ। আবার অন্য একাংশের বক্তব্য, কংগ্রেসের জন্য জোট প্রক্রিয়া কিছুতেই সম্পূর্ণ হচ্ছে না। জোট যে হেতু ত্রিপাক্ষিক, সব পক্ষই কিছু জায়গা না ছাড়লে সকলেরই একসঙ্গে সমস্যা থাকবে। এই অংশের মতে, টানাটানির চোটে জোট-প্রক্রিয়া বানচাল হলে আখেরে তো বিজেপির লাভ! আবার আরও একটা পাল্টা মত, আইএসএফের মতো শক্তি জোটে থাকলে বিপরীতে মেরুকরণের ফায়দাও বিজেপি তুলতে পারে।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আইএসএফের প্রধান পৃষ্ঠপোষক আব্বাস সিদ্দিকি এ দিন বলেছেন, ‘‘বাংলার মানুষ জোট চাইছেন। কংগ্রেস কী করবে, তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তবে দু-তিনটে আসনের জন্য জোট ভেঙে যাবে, সেটা আমরা হতে দিতে চাই না।’’ আলিমুদ্দিনে বৈঠকে যোগ দিতে এসে নৌসাদও ইঙ্গিত দিয়েছেন, সংখ্যার দাবিতে তাঁরা অনড় থাকতে চান না।

ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মঙ্গলবার আইএসএফের জন্য সব মিলিয়ে ৭টি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু তাদের দাবি ছিল, কংগ্রেসের মোট আসন ৯২ রেখে আইএসএফের জন্য ছাড়া আসন ‘পুষিয়ে’ দিতে হবে বামেদের। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এ দিন এই বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। আইএসএফ এবং কংগ্রেসের জন্য গোড়া থেকেই দল বেশি ‘নমনীয়’ হয়ে গিয়েছে কি না, এই প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ। সিপিএমের মতে, মালদহ ও মুর্শিদাবাদে গোটাদুয়েক আসন পেলে আইএসএফের উত্তরবঙ্গ নিয়ে দাবির নিষ্পত্তি করা যায়। সে ক্ষেত্রে আইএসএফ-কে তাদের মোট আসন-সংখ্যার দাবি থেকে কিছুটা নেমে আসতে হবে। তবে এই গোটা প্রক্রিয়ার জন্যই আসন রদবদল করে হলেও কংগ্রেসের ‘সহযোগিতা’ চাইছেন সিপিএম নেতৃত্ব।

সংযুক্ত মোর্চার জোটের বার্তাকে জোরালো করতে পথে নামার কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে। পেট্রল, ডিজ়েল, গ্যাস এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং কর্মসংস্থানের দাবিতে আগামী ৬ মার্চ বিধানসভা কেন্দ্রভিত্তিক মিছিলের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফ। কলকাতায় সে দিন এন্টালি বাজার থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মিছিলে অংশগ্রহণ করার কথা তিন পক্ষের নেতা-কর্মীদের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy