পরীক্ষা আর ফল প্রকাশের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান থাকলে কার না চিন্তা হয়!
কিন্তু, সিউড়ির প্রধান তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর দু’জন জোর গলায় দাবি করছেন — ‘‘না, হয় না। টেনশন আবার কী?’’ তৃতীয় জন অবশ্য লুকোছাপা না রেখেই মেনে নিচ্ছেন, ‘‘মারাত্মক চিন্তায় আছি।’’
প্রথম দু’জন সেই মেডিক্যাল কলেজে পড়া ইস্তক বন্ধু। এ বারের ভোট ময়দানে তাঁরা অবশ্য দু’টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। প্রথম জন শাসকদলের প্রার্থী অশোক চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় জন, বাম-কংগ্রেস জোটের রামচন্দ্র ডোম। তৃতীয় জন অবশ্যই বিজেপি-র তারকা প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলায় ভোট শেষ হয়েছে সেই ১৭ এপ্রিল। আর ভোটের ফল বেরোবে ১৯ মে। দু’টির মধ্যে ব্যবধান এক মাস। এই অবসরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অনেকেই বেড়াতে চলে গিয়েছেন। যাঁরা যানটি তাঁদের অনেকে ইতিমধ্যেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন, কাছেপিঠে কোথায় যাওয়া যায়। কিন্তু, প্রার্থীদের তো ঘুম উবেছে! জেলা তো বটেই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খবর আসছে কোনও প্রার্থীর রক্তচাপ কমেছে, তো কারও হিমোগ্লবিনের মাত্রা বিপজ্জনক ভাবে কমে গিয়েছে। কেউ আবার উৎকণ্ঠায় বাড়ির চার দেওয়ালের মধ্যে এক মুহূর্ত তিষ্ঠতে পারছেন না। একটাই চিন্তা ফলাফল!
ঠিক সেখানে ব্যতিক্রম দুই চিকিৎসক বন্ধু।
পোড় খাওয়া সিপিএম নেতা রামচন্দ্রবাবু দীর্ঘ দিন ধরেই সংসদীয় রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন। প্রাক্তন বিধায়কও। এ বারও সিউড়ি থেকে লড়ছেন। বলছেন, ‘‘নির্বাচনী লড়াই আর জীবন সংগ্রামের মধ্যে তফাৎ তো কিছু নেই। ওঠা পড়া আছেই। বহুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। হার-জিতের উপরে যখন নিয়ন্ত্রণ নেই, তখন খামোকা চিন্তা করতে যাব কেন?’’
সিউড়ি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায়ও এক সুরে বলছেন, ‘‘কীসের টেনশন? বিন্দাস আছি। খাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি, আনন্দ করছি, রোগীও দেখছি।’’ পরের প্ল্যান জানাতেও ভুলছেন না। জানাচ্ছেন, আগামী সপ্তাহে সিমলা বেড়াতে যাচ্ছেন তিনি।
এতটা নিশ্চিন্ত কেন? জাবাবে দৃঢ় গলায় দু’জনেই জানাচ্ছেন, এ বার তিনিই জিতছেন। তাই চিন্তাটা একেবারেই নেই।
সিউড়ির বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দুই চিকিৎসক প্রতিদ্বন্দ্বীর মতো চিন্তা-মুক্ত হতে পারছেন না। কলকাতা থেকে ফোনে কবুল করলেন, ‘‘মারাত্মক টেনশনে আছি। দলের কাজে অন্য জেলার নির্বাচনে প্রচারে যোগ দিলেও সারক্ষণ মন পড়ে ফলাফলের দিকে! ভীষণ খেটেছি। ভাল ফলের আশা করছি। কিন্তু অস্থিরতা কমছে না কিছুতেই।’’ যোগ করছেন, ‘‘১৯ তারিখের আগে সেটা কমবে না।’’
তবে অশোকবাবু এবং রামবাবু উভয়েই মনে করছেন ফল প্রকাশটা একটু আগে হলে ভাল হত। তবে দু’জনের দু’রকমের ব্যাখ্যা রয়েছে। অশোকবাবু বলছেন, ‘‘যে বার জয়েন্ট দিই, সে বারও এই অনুভূতি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল চান্স তো পাব। কিন্তু, র্যাঙ্ক কী হবে? ভোটের ফলের ক্ষেত্রেও তাই।’’ আর রামচন্দ্রবাবু বলছেন, ‘‘রেজাল্ট দ্রুত বেরোলে প্রশাসনের কাজ গতি পেত যে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy