বিজেপির মিছিলে বাধা। ডিসি (সাউথ) মুরলীধর শর্মার সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ালেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সোমবার হাজরায় সুদীপ্ত ভৌমিকের তোলা ছবি।
গণনার দিন রাজ্যে ফের ক্ষমতায় ফেরার ইঙ্গিত স্পষ্ট হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফল প্রকাশের পরে এনডিএ-তে স্বাগত জানিয়েছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। আর তার চার দিনের মধ্যে মমতার পাড়ায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির উপর আক্রমণ বন্ধ না হলে রাজ্যের সীমানা পেরোলেই উচিত শিক্ষা পাবে তৃণমূল! প্রয়োজনে ২৭ মে নতুন সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন রেড রোড ঘেরাও করার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দিলীপবাবুর হুমকিকে কোনও গুরুত্বই দেননি।
ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত দলের এক মহিলা কর্মীকে দেখতে কাকদ্বীপের সূর্যনগরে গিয়ে রবিবার হেনস্থার শিকার হন বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার হাজরা মোড় থেকে মমতার বাড়ি পর্যন্ত মিছিলের কর্মসূচি নেয় বিজেপি। সেই মিছিলের ফাঁকেই দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আপনাদের (মমতার) সাংসদরা দিল্লি যান। আমাদের উপর আক্রমণ বন্ধ না হলে আপনাদের সাংসদরা দিল্লি থেকে সহি-সালামৎ ফিরতে পারবেন কি না, সেটা আমরা দেখব!’’ তৃণমূল সাংসদরা দিল্লি গেলে কী করা হবে? দিলীপবাবুর জবাব, ‘‘তাঁদের আটকে রেখে খেত দেব না!’’ দিলীপবাবুই জানান, ২০ বছর আগে সিপিএমের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে পলিটব্যুরো বৈঠক চলাকালীন তাদের নেতাদের ঘরে আটকে রেখেছিল আরএসএস। তৃণমূলের ক্ষেত্রেও সেটাই করা হবে। তৃণমূলকে দিলীপবাবুর হুমকি, ‘‘আপনাদের সীমা পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপি কিন্তু সারা ভারতে রয়েছে। এখানে আমাদের সঙ্গে যেমন ব্যবহার করবেন, পশ্চিমবঙ্গের বাইরে গিয়ে তেমনটাই সুদ সমেত ফেরত পাবেন! আমি দিলীপ ঘোষ বলে যাচ্ছি।’’ সন্ত্রাস বন্ধ না হলে ২৭ মে নতুন সরকারের শপথ অনুষ্ঠান বয়কট করে রেড রোড ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন দিলীপবাবু। যা শুনে তৃণমূলের মুখপাত্র ডেরেক ও’ ব্রায়েন বলেন, ‘‘কে দিলীপ ঘোষ?
আমি কিছু বলব না।’’
প্রত্যাশিত ভাবেই এ দিন দিলীপবাবুরা হাজরা মোড় থেকে মমতার বাড়ি পৌঁছতে পারেনি। মিছিল কয়েক পা এগোতেই পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সামান্য ধস্তাধস্তি হয়। লকেট চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, পুলিশ তাঁর শাড়ি ছিঁড়ে দিয়েছে। ১৫ মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভ শেষ হয়ে যায়।
এ বার বিধানসভা ভোটে রাজ্যে তিন জন বিধায়ক এবং ১০%-এর বেশি ভোট পেয়ে বিজেপি উজ্জীবিত। তার উপরে দক্ষ সংগঠক হিসেবেই দলে দিলীপবাবুর পরিচিতি। তিনি সঙ্ঘের প্রচারক হওয়ায় হিন্দুত্বের প্রশ্নে কট্টরপন্থী। এই ত্র্যহস্পর্শেই রাজ্য বিজেপি উগ্রতার পথে হাঁটছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মত। তাদের এ-ও মত, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মমতার যতই বোঝাপড়া থাকুক, রাজ্য দল কিন্তু আগামী দিনে তৃণমূল-বিরোধী সুর আরও চড়াবে। কারণ, মমতা বিরোধী ভোটে ভাগ বসিয়ে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে ফয়দা তুলতে চায় তারা। তাই বাম-কংগ্রেসের থেকেও বেশি গরম গরম কথা
বলছেন দিলীপবাবুরা।
তবে এর মধ্যেই বিজেপির নিজের ঘরেই সুর কেটেছে! রূপার উপর আক্রমণকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করলেও দলীয় সূত্রের মতে, ওই নেত্রীর অতি সক্রিয়তায় খুশি নন রাজ্য সভাপতি। তিনি কাকদ্বীপের ওই আক্রান্ত দলীয় কর্মীর কাছে যাওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন লকেটকে। কিন্তু হঠাৎই রূপা সেখানে চলে যান এবং জানান, দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নির্দেশে তাঁর ওই সফর। রূপা অবশ্য এ দিনের মিছিলে যাননি। কাকদ্বীপের ঘটনায় রূপার বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রীকে মারধর এবং বিজেপি-র দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পশ্চিম) জেলা সভাপতি অভিজিৎ দাসের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ জমা পড়েছে
থানায়। তার ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআরও করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy