—ফাইল চিত্র।
তৃণমূলে থাকাকালীন রাজনৈতিক ‘পোর্টফোলিয়ো’ বলে তাঁর সে রকম কিছু ছিল না। সেই রুদ্রনীল ঘোষকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া ভবানীপুর কেন্দ্রে দাঁড় করিয়ে বড় চমক দিল বিজেপি। সেখানে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা বাংলায় তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে নবাগতা শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করাতেও অবাক হয়েছেন অনেকে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট’ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী। বেহালা পূর্বে আগেই প্রার্থী করা হয়েছে পায়েল সরকার। অর্থাৎ বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম, দুই গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রেই বিজেপি-র প্রার্থিতালিকা তারকা সম্বলিত।
বিজেপি সূত্রে খবর, রুদ্রনীলকে দেওয়া ভবানীপুর কেন্দ্রে দাঁড়াতে আগ্রহী ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা দলের প্রবীণ নেতা তথাগত রায়। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের সঙ্গে টুইট-বিবাদের পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে তাঁকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর কেন্দ্রটি তাঁর হাতে ছাড়তে ভরসা পাননি দলীয় নেতৃত্ব। বরং টলিপাড়ায় তৃণমূলে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে যে ভাবে পথে নামতে দেখা গিয়েছে রুদ্রনীলকে, তাঁর হাতেই শেষমেশ ভবানীপুর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুদ্রনীল নিজে যদিও জন্মস্থান হাওড়া শিবপুরে দাঁড়াতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। প্রকাশ্যে একাধিক বার তা জানিয়েওছিলেন অভিনেতা। কিন্তু বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র তথা আর এক তৃণমূল-ত্যাগী রথীন চক্রবর্তীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে দলের সিদ্ধান্তই তাঁর কাছে শেষ কথা বলে জানিয়েছেন রুদ্রনীল। তিনি বলেন, ‘‘দল যা ভাল মনে করেছে, তা-ই করেছে। শিবপুরের সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তবে ভবানীপুরের আসনটি আমার কাছে চ্যালেঞ্জের। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই আসন থেকে লড়াই করতেন। এই মুহূর্তে বিদ্যুৎমন্ত্রীর মতো হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। এই আসন থেকে লড়াই করার অর্থ, আদর্শ এবং রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণের লড়াই।’’
অন্য দিকে, সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া শ্রাবন্তীকে বেহালা পশ্চিমে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। তিনি যে প্রার্থী হতে চলেছেন, সে ব্যাপারে যদিও আগে থেকেই নিশ্চিত ছিলেন অভিনেত্রী। গত সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বিজেপি-র সভা থেকেই সে কথা জানান তিনি। বলেন, ‘‘এত দিন অভিনয় করতাম। এখন রাজনৈতিক জীবনে পা রেখেছি। খুব শীঘ্র প্রার্থীও হতে চলেছি হয়তো। আপনাদের আশীর্বাদ চাইছি।’’ তবে বেহালা পশ্চিমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো ‘হেভিওয়েট’ নেতার সামনে নিজের রণকৌশল নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত মুখ খোলেননি তিনি। আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন তোলেননি অভিনেত্রী।
অভিনেত্রী পার্নো মিত্রকে বরাহনগরে প্রার্থী করেছে বিজেপি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই জানাননি অভিনেত্রী। অসুস্থ মা-কে নিয়ে তিনি এখন হাসপাতালে বলে জানা গিয়েছে। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই বিজেপি-র সঙ্গে আর সক্রিয় ভাবে জড়িত নন পার্নো। ২০১৯-এর ১৮ জুলাই টলিপাড়ার একঝাঁক তারকার সঙ্গে হাতে পদ্মপতাকা তুলে নেন পার্নো। কিন্তু গত দু’ছরে দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়িয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে দলের কোনও কর্মসূচি বা সভাতেও দেখা যায়নি তাঁকে।
দলের মহিলা মোর্চার প্রধান অগ্নিমিত্রা পালকে আসানসোল দক্ষিণে প্রার্থী করেছে বিজেপি। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। সায়নী ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। তবে অগ্নিমিত্রার প্রচারাভিযান শুরু হয়নি এখনও পর্যন্ত।
গত ১০ মার্চ বিজেপি-তে যোগ দেন অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত। তাঁর সঙ্গে ওই একই দিনে পদ্মশিবিরে নাম লেখান অভিনেত্রী রাজশ্রী রাজবংশী। রাজশ্রীকে মধ্যমগ্রামে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিজেপি। বনি-কে এখনও পর্যন্ত কোথাও প্রার্থী করা হয়নি। তবে তাঁকে মূলত প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে বলেই জানা গিয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রের কাছে হেরে যাওয়া ফুটবলার কল্যাণ চৌবেকে এ বার মানিকতলায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। সাংবাদিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়কে সিউড়িতে প্রার্থী করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy