ফাইল চিত্র।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ব্ল্যাকমেল’ করার অভিযোগ উঠল বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তা-ও উঠল তৃণমূলেরই শীর্ষনেতার তরফে। তিনি আবার রাজ্যের মন্ত্রীও বটে। ফিরহাদ (ববি) হাকিম। নেটমাধ্যমে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ফিরহাদকে ওই অভিযোগ করতে শোনা গিয়েছে। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার ডিজিটাল যাচাই করেনি।
গত মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার বন্দর এলাকার ৭৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ছিল। সেখানে বক্তা ছিলেন ফিরহাদ। ওই ওয়ার্ডের দীর্ঘ দিনের কাউন্সিলর তৃণমূলের নিজামুদ্দিন শামস। মঞ্চে ফিরহাদের পাশেই ছিলেন তিনি। তাঁর দাদা মইনুদ্দিন শামস বীরভূমের নলহাটি বিদায়ী বিধায়ক। কিন্তু মইনুদ্দিনকে এ বার টিকিট না দিয়ে তৃণমূল নলহাটিতে প্রার্থী করেছে রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহকে। ক্ষুব্ধ মইনুদ্দিন টিকিট না পেয়ে শেষমেশ ওই আসন থেকেই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন। মইনুদ্দিনের ভাই নিজামুদ্দিনকে পাশে বসিয়ে ফিরহাদ তাঁর বক্তব্যে মইনুদ্দিনকে তৃণমূলের টিকিট না-দেওয়ার প্রসঙ্গটি তোলেন। সেই বক্তব্য নিজামুদ্দিনের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ‘লাইভ’ করা হয়। পরে সেটি ভাইরালও হয়।
ওই ভিডিয়োয় ফিরহাদকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কেন আমরা মইনুদ্দিনের টিকিট কাটব? যখন প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হচ্ছিল, তখন আমি দিদির (মমতা) পাশেই বসেছিলাম। আমারও জানা ছিল না, ওঁর নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। যখন ওঁর নাম তালিকায় প্রকাশ পেল না, তখন আমি মমতা ব্যানার্জিকে জিজ্ঞাসা করলাম। উনি বললেন, অনুব্রত আমাকে ব্ল্যাকমেল করায় ওঁকে টিকিট দেওয়া যায়নি। জবরদস্তি অন্যের নাম দিয়ে ওর নাম কেটে দিয়েছে। আমি কী করব?’’ এখানেই শেষ নয়। ওই ভিডিয়োয় ফিরহাদকে আরও বলতে শোনা যায়, মমতা তাঁকে বলেছেন, ‘‘আমাকে সবাইকে রাখতে হয়। সবাইকে সামাল দিতে হয়।’’ মইনুদ্দিন টিকিট না পাওয়ায় তিনি যে ‘ব্যথিত’, সে কথাও বলেছেন ফিরহাদ। ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘উনি টিকিট না পাওয়ায় আমিও ব্যথিত হয়েছি। পরদিনই আমি নিজামভাইকে বলেছি। একজন ভাল মানুষ। কখনও কোনও ঝামেলায় থাকেন না। চুপচাপ নিজের কাজ করেন। কিন্তু এতকিছু করেও তিনি টিকিট পাননি। কোনও নেতা এসব কথা বলবে না। কিন্তু আমি বোকা। এসব কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করছি।’’
নিজামুদ্দিনের ফেসবুকে ওই বক্তৃতা ‘লাইভ’ হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেটি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন মইনুদ্দিনের অনুগামীরা। পরে সেটি ভাইরালও হয়। যদিও পরে ফিরহাদ দাবি করেন, তিনি ‘ব্ল্যাকমেল’ শব্দটি উচ্চারণ করেননি। কিন্তু কলকাতা বন্দরের বিদায়ী বিধায়কের এমন ‘ভাষণ’ নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। পরে ফিরহাদের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে নলহাটি আসনে জিতেছিলেন মইনুদ্দিন। তাঁর বাবা তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রয়াত কলিমুদ্দিন শামস ওই নলহাটি কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক হয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। এবার সেই কেন্দ্রে প্রার্থী বদল করে তৃণমূল টিকিট দিয়েছে নলহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্রপ্রসাদকে। সে বিষয়ে নেটমাধ্যমে সরাসরি দল ও দলনেত্রী মমতার বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশও করেছিলেন মইনুদ্দিন। দলের ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তিনি। ফিরহাদের ভিডিয়ো-বক্তব্য সম্পর্কে মইনুদ্দিন বলেন, ‘‘অনুব্রতর ব্ল্যাকমেলিংয়ের কারণে আমাকে টিকিট দিতে পারেনি দল। মানুষ যা বোঝার বুঝে নিয়েছে। আমি নলহাটির মানুষের প্রার্থী। এই জায়গার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক দিনের। নির্বাচনেই মানুষ এর জবাব দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy