Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Sensitive booths

সব বুথ ‘সংবেদনশীল’, বাংলায় সর্বত্রই বাহিনী

কমিশন সূত্রের খবর, সোমবারেই সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী লাভলি মিত্রের স্বামী সৌম্য রায়কে হাওড়ার পুলিশ সুপারের (গ্রামীণ) পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কমিশন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২১ ০৫:১০
Share: Save:

কোন বিধানসভা বা লোকসভা কেন্দ্রের চরিত্র কেমন, তা বোঝাতে ‘সেনসিটিভ’ বা সংবেদনশীল, ‘ভার্নারেবল’ বা গোলমেলে-উপদ্রুত, ‘ক্রিটিক্যাল’ বা জটিল ইত্যাদি বিশেষণ প্রয়োগ করা হয়। ভোট পর্বে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাও গৃহীত হয় সেই প্রকৃতি অনুযায়ী। পশ্চিমবঙ্গে খাতায়-কলমে সংবেদনশীল বা উপদ্রুত এলাকার সংখ্যা যা-ই হোক না কেন, এ বার সব বুথকেই সংবেদনশীল ধরে নিয়ে বিধানসভার ভোট করাতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। আপস না-করে প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইছে তারা। সেই কাজ শুরুও করেছেন রাজ্যের ভোটে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে।

কমিশন সূত্রের খবর, সোমবারেই সোনারপুর দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী লাভলি মিত্রের স্বামী সৌম্য রায়কে হাওড়ার পুলিশ সুপারের (গ্রামীণ) পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কমিশন। কোনও প্রার্থীর নিকটাত্মীয় সরকারি কর্মচারী হলে তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকতে পারেন না— এই যুক্তিতেই ওই পুলিশ সুপারকে সরানো হচ্ছে বলে খবর। ‘‘নির্বাচন কমিশন বিধি অনুযায়ী তাদের কাজ করছে। আমি তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে আমার দায়িত্ব পালন করব,’’ বলেছেন লাভলিদেবী।

কমিশন-কর্তাদের বক্তব্য, গত লোকসভা ভোটে বাংলার যত উপদ্রুত এলাকা ছিল, সেই সংখ্যা ইতিমধ্যেই অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সেই জন্য পশ্চিমবঙ্গের ভোটকে রীতিমতো ‘চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিচ্ছেন তাঁরা। তাই সব বুথে সমান নজর এবং গুরুত্ব দিতে চাইছে কমিশন। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, সব বুথের নিরাপত্তার ভার ন্যস্ত হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের উপরেই। এক-একটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জন জওয়ান থাকতে পারেন। জঙ্গলমহলে সেই সংখ্যা আট পর্যন্ত হতে পারে।

ভোটকেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে বাহিনী মোতায়েনের চূড়ান্ত পরিকল্পনা কেমন হবে, তা স্থির হবে শীঘ্রই। তবে এমন হতেই পারে যে, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতেও রাজ্য পুলিশের সঙ্গে আধাসেনা থাকবে। প্রথম দফার ভোটের আগেই কমিশনের হাতে থাকছে ৪৯৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। ফলে এই জল্পনা বেড়েছে। রবিবার রাতে এক কোম্পানি এবং সোমবার রাতে আরও দুই কোম্পানি আধাসেনা এসেছে শহরে।

রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সঞ্জয় বসু জানান, কমিশন এ-পর্যন্ত ১৩৮৯টি অভিযোগের নিষ্পত্তি করেছে। ২৪ ঘণ্টায় নগদ ৫১.৬৩ কোটি টাকা, মদ এবং অন্যান্য সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাজ্যে এসে কেন্দ্র এবং রাজ্য নিয়ন্ত্রিত সংস্থাগুলির কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিশেষ ব্যয় পর্যবেক্ষক। এ-পর্যন্ত কত কী উদ্ধার হয়েছে, সেই তথ্য নিয়েছেন তিনি।

এ দিন মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্ত ও শিশির বাজোরিয়া। পোস্টাল ব্যালটের ভোট-প্রক্রিয়া কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তা নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের একাংশই বাহিনীর পোস্টাল ব্যালটের ভোটকে প্রভাবিত করতে পারে। ভোটকর্মী ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের সঙ্গে দেখা করে ভোটকর্মীদের শো-কজ় করার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনও একটি প্রশিক্ষণে যেতে না-পারলেই ভোটকর্মীদের শো-কজ় করা হচ্ছে। এটা রীতিমতো অপমানজনক।

অন্য বিষয়গুলি:

Election Commission Sensitive booths
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE