আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ফাইল ছবি।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কি আদৌ প্রার্থী দিতে চাইছেন মিম শীর্ষনেতৃত্ব? এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজ্য মিম নেতৃত্বের মধ্যে। গত কয়েকদিনে ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিনি’-র শীর্ষনেতৃত্বের বার্তা তাঁদের এমনই মনে করাচ্ছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মেটিয়াব্রুজে জনসভা করার অনুমতি না পেয়ে ফুঁসে উঠেছিল আসাদউদ্দিনের দল। তারা তোপ দেখেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। ওইদিন কলকাতার পার্ক সার্কাসের দলীয় দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে ক্ষোভ প্রকাশ করে মিম মুখপাত্র মাজিদ হুসেন বলেছিলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস— প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি করার অধিকার রয়েছে। এমনকি, বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতারাও এসে কলকাতায় রোজ সভা করে যাচ্ছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হলেও ওয়াইসি সাহেবের সভার অনুমতি দেওয়া হল না। কিন্তু আগামী ৪ মার্চ কলকাতায় আসবেন ওয়াইসি এবং সভাও করবেন।’’
সেদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে কলকাতা ছাড়েন মাজিদ। সূত্রের খবর, তারপর থেকে আর রাজ্যনেতৃত্বের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি মিম শীর্ষনেতৃত্ব। তাই ওয়াইসির কলকাতায় এসে জনসভা করার কথা তো দূর অস্ত, নির্বাচনে আদৌ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে কিনা, তা নিয়েই প্রশ্নের মূখে পড়েছেন বাংলার মিম নেতারা। ৪ মার্চ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাজাবাগানে ওয়াইসির যে সভা করার কথা ছিল, তা হয়নি। একরাশ হতাশা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিম নেতা জামিরুল হাসান বলেছেন, ‘‘আমি জানি না দল কী ভাবে ভোটে লড়াই করবে। কারণ, শীর্ষনেতৃত্ব এখনও আমাদের এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তা ছাড়া, নির্বাচনে লড়াই একটা সংগঠিত প্রক্রিয়া। আমাদের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে।" ওয়াইসির সভা কবে, সেই প্রসঙ্গেও তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন এই মিম নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘আসাদ সাহেব কবে সভা করতে আসবেন বা আদৌ আসবেন কি না, সে বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হচ্ছে না।
দলের শীর্ষনেতাদের এমন ব্যবহারে ক্ষুব্ধ রাজ্য নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, গত বছর নভেম্বরে মাসে বিহার বিধানসভার নির্বাচনে ৫টি আসনে জয়ের পর বাংলার ভোটে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন ওয়াইসি। সেই ঘোষণার পর ধীরগতিতে সাংগঠনিক কাজ শুরু করেন বাংলার মিম নেতারা। মিম যেহেতু একটি সংখ্যালঘু-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল, তাই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলিকে লক্ষ্য করেই কাজ শুরু হয়। চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ফুরফুরা শরিফে এসে ওয়াইসি বৈঠক করে নির্বাচনী সমঝোতার কথা বলে যান আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে। এমন পদক্ষেপ দেখে মিমের রাজ্য নেতারাও আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেন যে, প্রথমবারের লড়াইয়েই পাশে পাওয়া যাবে একটি রাজনৈতিক শরিককে। শেষে আব্বাস বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা শুরু করলেও তাতে মিমের রাজ্যনেতারা ভোটের প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখেননি। বিভিন্ন ছোট রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট আলোচনা চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর শীর্ষনেতৃত্বের ‘গা-ছাড়া’ মনোভাবে ভোটে লড়াই করার আশা কার্যত ছেড়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy