ফাইল চিত্র।
টিকিট না পেয়ে এ বার নির্দল প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া লাভপুরের বিদায়ী বিধায়ক মনিরুল ইসলাম। তাঁর এই সিদ্ধান্ত লাভপুরের লড়াই আরও জমিয়ে দেবে বলেই মনে করছেন জেলার রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।
শুক্রবার আনন্দবাজারকে মনিরুল বলেন, ‘‘লাভপুরের মানুষের স্বার্থে আমি নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ বিজেপিতে থাকা সত্ত্বেও কেন নির্দল প্রার্থী হচ্ছে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিজেপি-র হয়ে আমি দাঁড়াব কখনও বলিনি, কারও কথাতেও আমি লাভপুরে দাঁড়াচ্ছি না। শুধুমাত্র লাভপুরের মানুষের স্বার্থে উন্নয়নের দাবিদার হিসেবে আমার এই সিদ্ধান্ত।”
একটা সময় লাভপুর আর মনিরুল ইসলাম ছিল সমার্থক। তাঁর দাপটে বিরোধীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১১ ও ২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে মনিরুল লাভপুরের বিধায়ক নির্বাচিত হন। বিধায়ক ছাড়াও পাথরচাপুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান-সহ তৃণমূলের একাধিক পদে ছিলেন এই নেতা। কিন্তু, পরবর্তীতে নানা কারণে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। সূত্রের খবর, জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরাগভাজন হয়ে পড়েন তিন সিপিএম সমর্থক ভাই খুনে অভিযুক্ত এই নেতা। তার জেরে গত লোকসভা ভোটের পরেই তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। যদিও মনিরুলের দলের আসার প্রতিবাদে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে জেলা বিজেপি-র একটি অংশে। সেই থেকে মনিরুলকে জেলা বিজেপি-র কোনও কর্মসূচিতে সে ভাবে কখনও দেখা যায়নি।
এর পরে হঠাৎই দীর্ঘ প্রায় দু’বছর পরে বিধানসভা ভোটের মুখে জেলার রাজনীতিতে ফের আবির্ভাব ঘটে মনিরুল ইসলামের। গত মাসে বোলপুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে লাভপুরে তৃণমূল প্রার্থীকে ৫০ হাজার ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন লাভপুরের বিদায়ী বিধায়ক। এ বারের নির্বাচনে বীরভূমের বুকে বিজেপি ইতিহাস রচনা করবে বলেও দাবি করেন। সেউ সময় লাভপুরে জোর জল্পনা শুরু হয়ে যায়, তা হলে কি বিজেপি-র টিকিট পাচ্ছেন মনিরুলই?
যদিও প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে দেখা যায়, মনিরুলকে টিকিট দেওয়া হয়নি। এ বার নিজেই নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়তে চান। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, মনিরুলের জন্য আগাম মনোনয়নপত্রও তুলেছেন তাঁর অনুগামীরা। আগামী শনিবার বা সোমবার এই দুদিনের মধ্যে বোলপুর মহাকুমা প্রশাসনিক ভবনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রও জমা করার কথা রয়েছে তার।
ঘটনা হচ্ছে, লাভপুরে এখনও যখেষ্ট প্রভাব রয়েছে মনিরুলের। তাঁর অনুগামীর সংখ্যাও খুব কম নয়। ভোটে জিতে গেলে কি বিজেপিতে থাকবেন, তার উত্তরে মনিরুল বলেন, ‘‘এই নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। তবে, জেতার ব্যাপারে আমি একশো শতাংশ আশাবাদী।’’ এই বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “মনিরুল ইসলাম এখনও আমাদের দলেই রয়েছেন। উনি নির্দল দাঁড়াবেন কি না, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে, আমি এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে দেখব।’’ তাঁর দাবি, মনিরুল নির্দল হয়ে লড়লেও ভোটে বিজেপির কোনও প্রভাব পড়বে না।
বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলও। দলের জেলা সহ-সভাপতি তথা লাভপুরের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ সিংহ বলেন, “বিধায়ক হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করেননি ,গত দু'বছর ধরে যাকে এলাকায় দেখা যায়নি, সাধারণ মানুষকে যিনি পরিষেবা দেননি, তাঁকে আগামী দিনে যোগ্য জবাব দেবে মানুষই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy