বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুরের এই ছবিই দেখা গিয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙচুর, বোমাবাজি থেকে শুরু করে বিজেপি কর্মীর বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের অভিযোগ। পঞ্চম দফার ভোটে দফায় দফায় শাসক-বিরোধীর বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে উত্তপ্ত হল কল্যাণী বিধানসভায় গয়েশপুর। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও চরমে পৌঁছয়। বিজেপি সাংসদকে ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভে গয়েশপুরে উত্তেজনা বাড়ে। যুযুধান দু’পক্ষকে সামলাতে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। অন্য দিকে, বিজেপি-র উপর হামলার জড়িত সন্দেহে ২জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ২০৭ নম্বর বুথে ভোট চলাকালীন ঘটনার সূত্রপাত। তৃণমূলের দাবি, বিজেপি-র বুথ সভাপতি পার্থ হাজরা ওরফে পিন্টুর নেতৃত্বে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানো হয়। তাঁদের বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ওই ঘটনায় আহত হন সৌমেন দে নামে এক তৃণমূল কর্মী। এর পর ওই ঘটনার প্রতিবাদে পার্থর বাড়িতে চড়াও হন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। পাথর, লাঠিসোঁটা নিয়ে পার্থ-সহ এলাকার বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর চালান তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনেই পার্থর বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন। অভিযোগ, তাঁর মা এবং বৃদ্ধ বাবাকে মারধর, হেনস্থা করেন তাঁরা। যদিও তৃণমূলের দাবি, ‘‘জনরোষের ফলেই এটা ঘটেছে। বিজেপি-র দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এসেছে। বীজপুর থেকে বহিরাগতরা এলাকায় ঢুকেছে।’’ এক তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘ভোট চলার সময় পার্থই বন্দুক দিয়ে সৌমেনের মাথায় মেরেছে।’’ তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘ওদের ভয়ে ঘরে লুকিয়ে ছিলাম আমি। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছি বলে যা বলা হচ্ছে, তা একেবারেই মিথ্যে কথা। বিজেপি করি বলেই আমার বাড়িতে এই হামলা চালানো হয়েছে।’’ শনিবার ভাঙচুরের খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী। ঘটনাস্থলে যায় বিশাল পুলিশ বাহিনীও।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গয়েশপুরের আরও অশান্তি বাড়ে। বকুলতলা এলাকায় দফায় দফায় বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। দুপুরে ভোট দিয়ে ফেরার পথে বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। তাতে এক বিজেপি কর্মী আহত হন।
এই ঘটনার পরও গয়েশপুর অশান্তি থামেনি। এ বার বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর গয়েশপুরের বেদী ভবনে তৃণমূলের কার্যালয়ের কাছে পৌঁছলে, তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের অভিযোগ, শান্তনু ওই এলাকায় দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসেছেন। এক মহিলাকে চড়ও মেরেছেন। যা অস্বীকার করে শান্তনু বলেন, ‘‘এলাকায় গন্ডগোল হওয়াতে দেখতে এসেছি। পুলিশের সামনেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে।’’ জমায়েতের মধ্যে থেকে তাঁকে ‘বহিরাগত’ বলা হলে শান্তনু বলেন, ‘‘কে বহিরাগত? এক জন সাংসদ দেখতে আসবে না, এলাকায় কী হচ্ছে?’’
গয়েশপুরের পরিস্থিতি নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধীর। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষ যাতে পরিবর্তনের ভোট দিতে না পারে, সে জন্য ভয় পেয়ে তৃণমূলের গুন্ডারা এ সব করছে।’’ এই হামলার কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, ওই ঘটনার আগে বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের কর্মীদের উপর চড়াও হন। তারই প্রেক্ষিতে স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy