শেষমেষ আশঙ্কাই সত্যি হল!
বর্ষা এলেই সিদ্ধেশ্বরী নদী কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেয় রাজনগরের তিনটি গ্রামকে। নদীতে সেতু তৈরি করা হোক। দীর্ঘ দিন ধরেই সেই দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকার তিনটি গ্রাম কুড়ুলমেটিয়া গোয়াবাগান ও পটলপুরের বাসিন্দারা। একটার পর একটা ভোট পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি। এ বার সেই দাবি আদায়ে ভোটের দিনটিকে হাতিয়ার করলেন তিনটি গ্রামের মানুষ। কেন সেতু হল না সেই প্রশ্ন তুলে ভোটই দিতে গেলেন না তাঁরা! ঘটনার কথা মেনেছেন রাজনগরের বিডিও দীনেশ মিশ্র।
আর রামপুরহাটের বেলিয়া গ্রামেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেখানে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল ট্রান্সফর্মার পাল্টানোকে কেন্দ্র করে। রাজনগরে অসমর্থ হলেও বেলিয়ায় সফল হয়েছে প্রশাসন। শেষ মুহূর্তে এলাকার লোকজনকে বুথমুখো করতে পেরেছে তারা।
রাজনগরের ওই এলাকায় সেতুর দাবি দীর্ঘ দিনের। হবে নাই বা কেন! বর্ষা এলেই সিদ্ধেশ্বরী নদী কার্যত বিচ্ছিন্ন করে দেয় কুড়ুলমেটিয়া, গোয়াবাগান এবং পটলপুরকে। ভোটের আগে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়ে প্রতিবাদ মিছিলও করেন। শাসক দল-সহ ভোট চাইতে আসা সবক’টি রাজনৈতিক দলের কাছে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছিলেন , ‘‘কেন ভোট দেব? আমরা কী মানুষ নই?’’ ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীর কথায়, ধৈর্যচ্যুতি বলেও তো একটা বিষয় আছে! ভোটের মুখে জমাটি ক্ষোভ দেখে অস্বস্তিতে পড়েছিল দল।
অন্য দিকে, বিদ্যুৎ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ক্ষোভ রয়েছে রামপুরহাটের ওই এলাকায়। গত তিন দিন ধরে বেলিয়ায় বিদ্যুৎ ছিল না। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী, ট্রান্সফর্মার পাল্টানোর দাবি তোলেন। প্রতিকার না হলে হুঁশিয়ারিও ছিল। কিন্তু ৭৮৪ জন ভোটার যে গ্রামে রয়েছেন, সেখানে কি এত সহজে এতগুলো ভোট নষ্ট করা যায়? পরিস্থিতি দেখে গ্রামে পৌঁছন রামপুরহাট কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামবাসীদের তিনি আশ্বাস দেন, নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো হবে। এবং সেটা রবিবারই। গ্রামবাসীর সামনেই ফোন করেন প্রশাসনের কোনও এক আধিকারিককে। এর পরই আশিসবাবু জানিয়ে দেন, দুপুরের মধ্যেই ট্রান্সফর্মার পাল্টানো হবে। বেলা একটা নাগাদ সেই ট্রান্সফর্মার এসে পৌঁছয় রামপুরহাটের বেলিয়া গ্রামে। তারপরেই বুথে লাইন দেন গ্রামবাসী।
কিন্তু, তাতে তৈরি হয়েছে বিতর্কও। কেমন? প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূল প্রার্থীর ভূমিকা নিয়ে। বিরোধীদের প্রশ্ন, ভোটের দিন এ ভাবে সরকারি অফিসারকে দিয়ে কাজ করাতে পারেন কি? তবে দিনের শেষে কাজের কাজ হওয়ায় খুশি বেলিয়া গ্রাম।
সকাল থেকেই ওই কেন্দ্রের ভোটারদের আসার অপেক্ষায় ছিল কৌড়বেলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ। ফাঁকা বুথে সব রাজনৈতিক দলের এজেন্টরা বসে ছিলেন। বুথ চত্বরও ছিল ফাঁকা। সকালের দিকে কংগ্রেসের বুথ এজেন্ট সদানন্দ দাস যেমন বলেন, ‘‘গ্রামে তিন দিন ধরে বিদ্যুত্ নেই। ভোট দেওয়ার কথা কোন মুখে বলব বলুন তো মানুষগুলোকে!’’ একই কথা ছিল তৃণমূলের এজেন্ট জীবনসাধন মণ্ডলেরও। তিনি বলেন, ‘‘গ্রামবাসী হিসেবে আমরাও তো সমব্যাথী। শুধুমাত্র দল করি বলে বুথে বসে থাকতে বাধ্য হয়েছি।’’ বেলা একটা নাগাদ গ্রামবাসীরা ভোট দিতে এলে তিনি যেন স্বস্তির শ্বাস পড়ে! (সহ-প্রতিবেদন: দয়াল সেনগুপ্ত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy