Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

পায়ে হেঁটে ‘রোড শো’ পুণ্ডরীকাক্ষের

সকাল ১০টার রোদ্দুর গায়ে জ্বালা ধরাচ্ছে। সাদা আদ্দির পাঞ্জাবি গায়ের সঙ্গে আঠার মতো সেঁটে গিয়েছে। তবুও বিরামহীন ভাবে হেঁটে চলেছেন তিনি।

প্রচারের ফাঁকে খুদেদের সঙ্গে পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। নবদ্বীপে।—নিজস্ব চিত্র

প্রচারের ফাঁকে খুদেদের সঙ্গে পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। নবদ্বীপে।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০০
Share: Save:

সকাল ১০টার রোদ্দুর গায়ে জ্বালা ধরাচ্ছে। সাদা আদ্দির পাঞ্জাবি গায়ের সঙ্গে আঠার মতো সেঁটে গিয়েছে। তবুও বিরামহীন ভাবে হেঁটে চলেছেন তিনি। আগু-পিছু শ’খানেক সমর্থক। কোনও হইচই নেই। চড়া গলায় স্লোগানও নেই। নেই মাইকের দাপাদাপিও। সোমবার ভোটের প্রচারে বেরিয়ে এ ভাবেই নেহাত সাদামাটা ভাবে ‘রোড-শো’ করলেন নবদ্বীপের তিনবারের বিধায়ক ও বিদায়ী মন্ত্রী তৃণমূল প্রার্থী পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা ওরফে নন্দ।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুরের চৈতন্য জন্মস্থান আশ্রমে পুজো দিয়ে প্রচারে নামেন পুণ্ডরীকাক্ষবাবু। তারপর দু’টি পর্বে নবদ্বীপের উত্তরে প্রাচীন মায়াপুর থেকে দক্ষিণে হরিতলা হয়ে নবদ্বীপ স্টেশন শেষ করেন প্রচার। দুপুর দু’টো পর্যন্ত হাঁটেন রাধাবাজার পর্যন্ত। বিকেল ৪টে থেকে ফের সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাধাবাজার থেকে স্টেশন।

এ দিন রোড শোয়ে বেরিয়ে প্রথমেই অস্বস্তিতে পড়েন পুণ্ডরীকাক্ষবাবু। তাঁকে ঘিরে চাকবাঁধা ভিড়টা সবে উত্তরের মণ্ডলপাড়া ছেড়ে স্থানীয় বাজারের কাছে পৌঁছতেই এক ব্যক্তি সটান এগিয়ে এসে আর্জি জানান, তাঁকে একটা প্রণাম করব।’’ আবদার শুনেই নন্দবাবু তাঁকে বোঝান, তিনি কারও প্রণাম নেন না। কিন্তু ওই ব্যক্তি নাছোড়। অন্যরা বহু কষ্টে তাঁকে নিরস্ত করেন।

যদিও নন্দবাবু নিজেও প্রণাম করতে ভালবাসেন। বিজয়া দশমীর পরদিন সকালে নবদ্বীপ শহরের প্রায় হাজার খানেক ভিক্ষাজীবীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম তাঁর অভ্যাস। তখনও তিনি এলাকার বিধায়ক বা রাজ্যের মন্ত্রী হননি। কিন্তু সেই অভ্যাসের কোনও বদল হয়নি। পথেঘাটে মেলার মাঠে প্রবীণ, বর্ষীয়ান কারও পা ছুঁয়ে তিনি প্রণাম করছেন এমন দৃশ্য হামেশাই চোখে পড়ে।

তিনি চাননি তাঁর এই প্রচারে শহরের বাসিন্দাদের কোনও অসুবিধে হোক। তাই কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, রোড শো যেখান দিয়ে যাবে সেই সময় কেবল সেই ওয়ার্ডের কর্মী সমর্থকেরাই হাঁটবেন। বাকিদের ভিড় জমানোর প্রয়োজন নেই। তাই অনেকটা রিলে রেসের মতো বিভিন্ন ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা এ দিন যোগ দেন। ভোটের প্রচারে লোক জড়ো করতে সবাই যখন ব্যস্ত তখন এমন উল্টো সুরে গাওয়া কেন? হাঁটতে হাঁটতে উত্তর দিলেন, “ দিন দুপুরে ব্যস্ত রাস্তায় মিছিল করলে লোকের অসুবিধা হবে। এই-ই ঠিক আছে।”

এমনিতেই কম কথা বলেন পুণ্ডরীকাক্ষবাবু। এ দিন রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে কেবল হাতজোড় করে প্রণাম। আর ছোটদের দেখলে তাদের সঙ্গে হাত মেলানো, একটু গল্পগাছা। এই করতে করতে পোড়ামাতলার মোড়। শহরের কেন্দ্রস্থলে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারেরা ততক্ষণে দু’ধারে ট্র্যাফিক আটকে দিয়েছে। নজর পড়তেই একজন দিয়ে বলে পাঠালেন, “ওদের জিজ্ঞাসা করে আয় তো কে বলেছে এভাবে গাড়িঘোড়া আটকাতে?” অবস্থা বেগতিক বুঝে মুহূর্তের মধ্যে জমানো গাড়ি ছেড়ে রাস্তা সাফ।

দুপুরের মতো একই ছবি সন্ধ্যায়। রিকশা, টোটো, বাইকে ঠাসাঠাসি পথের একপাশ দিয়ে সন্তর্পণে তাঁর পদযাত্রা যত এগিয়েছে, ততই অবাক হয়েছেন নবদ্বীপের মানুষ। এমন রোড-শো আগে যে দেখেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy