Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠল, কমিশন বলল শান্তিপূর্ণ

বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি। বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল, বুথ জ্যাম, এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা নিয়েই শেষ হল রাজ্যে প্রথম দফার দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোট। প্রায় ১৮০০ অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের কাছে।

খড়্গপুরে ভোটদাতাদের লাইন। ছবি: দেবাশিস রায়।

খড়্গপুরে ভোটদাতাদের লাইন। ছবি: দেবাশিস রায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৬ ২০:৫০
Share: Save:

বড়সড় কোনও অঘটন ঘটেনি। বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল, বুথ জ্যাম, এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা নিয়েই শেষ হল রাজ্যে প্রথম দফার দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোট। প্রায় ১৮০০ অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের কাছে।

এ দিন তিনটে জেলার ৩১টি কেন্দ্রের ভোট ছিল। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ৮৪.৭৮ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ৭৮.৮৭ শতাংশ এবং বর্ধমানে ৭৫.১২ শতাংশ ভোট পড়েছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই বুথে বুথে লম্বা লাইন চোখে পড়েছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ভোটারেরা নিজের ভোট নিজে দিতে পেরেছেন বলে বিরোধীরা মনে করছে। তবে ভোট অবাধ হতে না দেওয়ার জন্য বুথের বাইরে শাসক দল নানা চেষ্টা চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনী যে হেতু বুথের বাইরে ছিল না, তাই বাইরের ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে বিস্তর।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর, গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, দাঁতনের পাশাপাশি বর্ধমানে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের বেশ কিছু বুথে গণ্ডগোলের খবর পাওয়া গিয়েছে। আর এ সব নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা। তার পাশাপাশি কমিশনের ভূমিকা নিয়েও এ বার বিরোধীরা সরব হয়েছে। তার অন্যতম কারণ, বুথের মধ্যে মোতায়েন করা ছাড়া কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে এলাকায় টহল দেওয়া হয়নি। এ দিন দিল্লিতে নির্বাচন সদনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদীর সঙ্গে দেখা করে সিপিএম নেতা নীলোত্পল বসু অভিযোগ জানিয়েছেন। জৈদীর কাছে তাঁর অভিযোগ, কমিশন প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোটের আগের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে এলাকায় টহলদারির কাজে ব্যবহার করা হয়নি। এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনেই হিংসা, হামলা হয়েছে।

যদিও তৃণমূল নেতা মুকুল রায় জানিয়েছেন, ভোট ভালই হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বুথে দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে মানুষ আমাদেরই ভোট দিয়েছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, তৃণমূল অবাধ ভোট করতে বাধা দিলেও মানুষ নিজের ভোট নিজেই দিয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রদীপবাবু।

অন্য দিকে, দ্বিতীয় পর্যায়ের ভোটের পর নির্বাচন কমিশন, বিশেষত রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল গুপ্তের বিরুদ্ধে তোপ দাগল রাজ্য বিজেপি। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের মদতে তৃণমূল সাধারণ ভোটার এবং বিজেপি সমর্থকদের গ্রামের ভিতরে ঢুকে ভোট দিতে যেতে বাধা দিয়েছে। অনেক জায়গাতেই জাল ভোট দিয়েছে এবং বুথ দখলের চেষ্টা করেছে তৃণমূল। জামুড়িয়া, কুলটি, আসানসোল দক্ষিণ, খড়্গপুর সদর, কেশপুর, চন্দ্রকোণা, দাঁতন, বিষ্ণুপুর, শালতোড়া, বড়জোড়া এবং ইন্দাসের বিভিন্ন বুথে শাসক দল সন্ত্রাস ও কারচুপি করেছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। দলের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। আমরা নির্বাচন কমিশন এবং দিল্লির নেতৃত্বকে রিপোর্ট দিয়েছি। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান হয়েছে। তবে সব ক্ষেত্রে হয়নি। এর জন্য আমরা কমিশনের সিইও-কে দায়ী করছি।’’ সুনীলবাবুর নাম না করে প্রতাপবাবুর অভিযোগ, ‘‘এক জন আমলা আর বেশি দিন পদে বা কলকাতায় থাকছেন না। তাই তিনি তৃণমূলের তাঁবেদারি করছেন।’’

একই সুর শোনা গিয়েছে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কমিশনকে বিভিন্ন ব্যাপারে আগে থেকেই বহু বিষয় অবগত করেছিলাম। কিন্তু, কমিশনের ভূমিকায় শিথিলতা দেখা দিয়েছে। রাজ্য পুলিশের উপর আমাদের কোনও আস্থা ছিল না। তবে কমিশনের যে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল, তার তুলনায় এ দিন তারা বেশি শিথিল ছিল। তার পরেও বলছি, যেখানে যেখানে অনিয়ম হয়েছে, তার ভিত্তিতেই ভোটের চূড়ান্ত ফল নির্ধারিত হবে না। ভোটের ফলাফল মানুষ ঠিক করবেন।’’

যদিও এত কিছুর পরেও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। বুথের ভেতর কোনও বড় ঘটেনি। শুধু রানিগঞ্জের একটি ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Assembly Election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy