প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তৈরি হয়েছিল ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ নামের একটি সিনেমা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জীবনীমূলক সেই সিনেমার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, লোকসভা ভোটের আগে সিনেমার নামে মোদীর মহিমা প্রচার করা হবে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন আদর্শ আচরণবিধির যুক্তি দিয়ে বাধা দেওয়ায় ভোট পেরিয়ে সেই ছবি মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু ভোটের আগে মনমোহন সিংহ সরকারের নানা খামতি তুলে ধরে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ নামের সিনেমাটি মুক্তি পেয়ে যায়।
এ বার ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে মুক্তি পেয়েছে ‘আর্টিকল ৩৭০’ নামের সিনেমা। চলতি সপ্তাহেই জম্মুতে গিয়ে খোদ মোদী বলেছেন, এই সিনেমা থেকে মানুষ ‘সহি জানকারি’ বা সঠিক তথ্য পাবেন। বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, এ দেশেও কি বিদেশের মতো রাজনৈতিক প্রচারমূলক সিনেমা বা ‘প্রোপাগান্ডা ফিল্ম’ তৈরির ধারা জাঁকিয়ে বসল?
কংগ্রেস নেতাদের প্রশ্ন, মোদী কী ভাবে জানলেন, ‘আর্টিকল ৩৭০’ সিনেমায় সঠিক তথ্য দেখানো হয়েছে? মুখে মোদী বলেছেন, তাঁর এই সিনেমা সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা নেই। তিনি টিভি-তে দেখেছেন ওই সিনেমাটি মুক্তি পেতে চলেছে। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি বলছেন, এই সিনেমায় মানুষ সঠিক তথ্য পাবেন।
ঘরোয়া আলোচনায় এ কথা বললেও কংগ্রেস বা বিরোধীরা এ নিয়ে সরব হচ্ছেন না। কারণ দু’টি। এক, কোনও সিনেমার বিরোধিতা করলে বাক্স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠবে। পাল্টা অস্ত্র পেয়ে যাবে বিজেপি। বিশেষত এত দিন বিরোধীরাই বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে সিনেমা-নাটকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে এসেছে। দুই, বিজেপি বা সরকারি মদতে সিনেমা তৈরি হয়েছে, এমন কোনও প্রমাণ কংগ্রেস বা বিরোধীদের কাছে নেই।
কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এর আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ থেকে ‘কেরালা স্টোরি’র মতো ছবিতেও সঠিক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। কাশ্মীর ফাইলস ছবিতে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপরে হিংসা ও তাঁদের কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখানো হয়েছিল। তা নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় মোদী দলীয় বৈঠকে বলেছিলেন, এই সিনেমার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু যেটা সত্য, তা দেশের সামনে তুলে ধরতে হবে। একই ভাবে কেরলে ‘লাভ জেহাদ’ ও ইসলামিক সন্ত্রাসবাদ তৈরির সিনেমা ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সম্পর্কে মোদী বলেছিলেন, এই ছবি সন্ত্রাসবাদীদের ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে।
কংগ্রেসের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা, তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে দেখা গিয়েছিল ‘পিএম নরেন্দ্র মোদী’ সিনেমার ট্রেলার প্রকাশে। মনমোহন সিংহকে কটাক্ষ করে তৈরি ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ তৈরি করেছিলেন এক বিজেপি বিধায়কের পুত্র। ফলে কোথাও না কোথাও বিজেপির যোগ থেকেই যাচ্ছে।’’
সিপিএমের এক পলিটব্যুরো নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু ৩৭০ অনুচ্ছেদ বা লাভ জেহাদের মতো আরএসএসের বিষয় নয়। মোদী সরকারের ‘বীরত্ব ও সাহসিকতা’ তুলে ধরতে ‘উরি: দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’-এর মতো সিনেমাতেও কৌশলে মোদীর মহিমা প্রচার হয়েছে। মোদী নিজেও তাই মুম্বইয়ে ভারতীয় সিনেমার জাদুঘর উদ্বোধনে গিয়ে সেই সিনেমার সংলাপ ‘হাউ ইজ় দ্য জোশ’ আউড়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy