প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: ফেসবুক থেকে।
নরেন্দ্র মোদী পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখান, গত কয়েক বছরে রেলের কী কী প্রকল্প হয়েছে। তার পরেই ভোটের আর্জি জানান তিনি। জানান, যত বেশি ভোট প্রার্থী অরূপকান্তিকে দেবেন, ততই হাত শক্ত হবে তাঁর। ‘বন্দে মাতরম’ বলে শেষ করেন বক্তব্য।
মোদী বলেন, ‘‘রাজ্যে শুধুই দুর্নীতি। শিক্ষক, পুরো নিয়োগে দুর্নীতি। তৃণমূল আমাদের অন্নদাতা কৃষকদেরও ছাড়েনি। কৃষকদের ধানের কম মূল্য দেয় তৃণমূল। মোদী কৃষক সম্মান নিধি দেয় বলে তাঁরা একটু সুবিধা পান। নয়তো তৃণমূল বাংলার কৃষকদের বরবাদ করার জন্য কোনও চেষ্টা বাদ রাখেনি। সব্জির স্টোরেজের সুবিধা দেবে মোদী। এটা ট্রেলার। এখনও অনেক কিছু করা বাকি।’’
আরামবাগে মোদী বলেন, ‘‘১০ বছরে বিজেপি তফসিলি জনজাতি পরিবারের পাঁচ কোটির বেশি বাচ্চাকে ৩২ হাজার কোটি টাকার বৃত্তি দিয়েছে। তফসিলি জনজাতি যুবরা যাতে নিজেদের ব্যবসা, কাজ শুরু করতে পারেন, সে জন্য তহবিল তৈরি করেছে। কোটি কোটি টাকার সেই তহবিল। কিন্তু তৃণমূলের কাছে বাংলার থেকে ভাইপো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে ভাবে বাংলাকে লুটছে, তা পাপ।’’
মোদীর অভিযোগ, তফসিলি জনজাতির মানুষের জন্য অনেক চেষ্টা করছেন। এই রাজ্যেও করার চেষ্টা চলছে। ব্লক স্তরে। কিন্তু তৃণমূল করতে দিচ্ছে না। কংগ্রেস যখন কেন্দ্রে ছিল, এসটিদের জন্য ৪০ হাজার কোটির টাকার বাজেট দিত। বিজেপি এখন এক লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছে তফসিলি জাতি, জনজাতি দফতরকে।
মোদীর কথায়, ‘‘কেন্দ্র সরকার যদি আপনাদের হিতে কোনও যোজনা তৈরি করে, এই তৃণমূল সরকার সেগুলি আটকে দেয়। মোদী বড় অভিযান চালান। ‘অ্যাসপিরেশনাল ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম’। দেশের যে সব জেলায় তফসিলি জাতির মানুষ থাকেন, তাঁদের জন্য। বিরোধী জোটের নেতারা এঁদের সব থেকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। মোদী বলেন, এ সব চলবে না। এই জেলাগুলি পিছনে থাকবে না। বিকাশে সকলের আগে উঠে আসবে। ১১০টির বেশি জেলায় অনেক পরিশ্রম করা হয়েছে। ওই জেলাগুলিতে সব থেকে ভাল অফিসার পাঠিয়েছি। দিল্লিতে বসে সব পরখ করা হচ্ছে। এই জেলাগুলি এখন ওই রাজ্যের বাকি জেলা থেকে এগিয়ে গিয়েছে। শিক্ষা, জল, কল, সব কিছুই সুবিধা পাচ্ছেন তাঁরা। এখন ব্লক স্তরে হচ্ছে। ’’
মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম সব এক। এরা এখন জনজাতি, তফসিলি জাতি, অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণ ছিনিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করতে চায়। গবাদি পশুখাদ্য দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এক নেতাই সব প্রকাশ করে ফেলেছেন। অসুস্থতার কারণে জেলের বাইরে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, সংরক্ষণ মুসলমানদের দিয়ে দেওয়া হবে। কংগ্রেস খেলাতেও সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের কথা বলেছে। আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন, বঞ্চিতদের যে অধিকার, মোদীজি তার চৌকিদার।’’
মোদী বলেন, ‘‘মতুয়া শরণার্থীদের ভুলে গিয়েছে তৃণমূল। যাঁরা প্রতারিত হয়ে এসেছেন, মনে রাখেনি এরা। মোদী সরকার যখন সিএএর মতো আইন আনল, যা নাগরিকত্ব দেবে, তখন এরা ধমকাচ্ছে। ভয় দেখাচ্ছে। মিথ্যে বলছে। অপপ্রচার করছে। সকল শরণার্থীকে বলছি, সিএএ সংবিধানের গ্যারান্টি। মোদীর গ্যারান্টি। পৃথিবীর কোনও শক্তি একে আটকাতে পারবে না। তৃণমূলও কান খুলে শোনো, ভুগতে হবে।’’
মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূলের কাজে বাংলার সংস্কৃতির কোনও ছাপ নেই। ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে এরা সব করতে পারে। ঘোর জনজাতি বিরোধী। মহিলা বিরোধী। এরা নিজেদের দলের তফসিলি নেতাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। বাগদিদের সঙ্গে কী ব্যবহার হয়েছে, আপনারা দেখেছেন। ’’
মোদী বলেন, ‘‘এখানে মহিলাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থারও খারাপ হাল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতেও দুর্নীতি চলছে। নিয়োগেও দুর্নীতি। বিধানচন্দ্র রায়ের ভূমিতে এই অবস্থা।’’
মোদী বলেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দ, সুভাষবাবুর ভূমি এই বঙ্গ। কিন্তু তৃণমূল সরকার সব ভুলিয়ে দিতে চায়। পারলে রাজা রামমোহন রায়ের নাম থেকে রাম শব্দ বার করে দেয়।’’
মোদী বলেন, ‘‘তৃণমূল পারলে বাবা তারকেশ্বর ধামেও বিধিনিষেধ চালু করবে। এই ভূমি গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সত্যজিৎ রায়ের ভূমি। কিন্তু এখানে তৃণমূলের শাসনে, মানুষের স্বাধীনতা নেই। বিপক্ষকে, স্বতন্ত্র কণ্ঠকে দাবিয়ে রাখা হয়। কেউ হাসিঠাট্টা করলে বা সমাজমাধ্যমে কার্টুন শেয়ার করলেও ধমকানো হয়। তাঁর বাঁচা মুশকিল করে দেয়।’’
মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় লোকের আস্থার উপর, বিশ্বাসের উপর পাহারা দেওয়া হয়। এখানে রামমন্দিরের নাম নেওয়া অপরাধ হয়েছে গিয়েছে।’’
আরামবাগে বিজেপি প্রার্থী অরূপকান্তি দীগরের হয়ে রবিবার প্রচার করেন মোদী। জনসভার শুরুতেই তিনি বলেন, ‘‘আবার আশীর্বাদ চাইতে এসেছি আপনাদের কাছে। ২০২৪ সালের ভোট বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার বাচ্চাদের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তৃণমূল ভাবে, বাংলার সংস্কৃতিতে ওদের একচ্ছত্র অধিকার। আসলে এটা মা কালী, দুর্গার ভূমি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy