—প্রতীকী চিত্র।
কোন দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল অনেক শহরবাসীরই। কিন্তু চুঁচুড়া বিধানসভায় প্রধান দুই প্রতিপক্ষ— বিজেপি ও তৃণমূল নেতাদের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন অতীত।
গত লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভাভিত্তিক ফলাফলে চুঁচুড়ায় ২১ হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। ‘ক্ষত’ মেরামত করে দু’বছর পরের বিধানসভা নির্বাচনে ১৮ হাজারের বেশি ভোটে এই কেন্দ্রে তৃণমূল জেতে। পুরভোট বা পঞ্চায়েত ভোটেও সেই জয়ের ধারা অব্যাহত ছিল। এ বার লোকসভা নির্বাচনে তারকা প্রার্থী পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভাসতে চাইছে না দল। ২০১৯-এর ‘ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রত্যেক ভোটারের মন জয়ে জোর দিচ্ছে তারা।
সেই চেষ্টা কেমন?
প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে প্রচারেই শুধু আটকে না-থেকে আলাদা ভাবে বাড়ি বাড়ি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বুথভিত্তিক তৃণমূল কর্মীরা। মানুষের সমস্যা শুনে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন তাঁরা। কলিং বেল বাজিয়ে ঘরে ঢুকছেন পরিচিত তৃণমূল কর্মীরা। কয়েকটি প্রশ্ন রেখে কেন তৃণমূলকে ভোট দেবেন, তার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
গত লোকসভায় হুগলি কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় ধনেখালি ও চন্দননগরে সামান্য পিছিয়ে থাকলেও বাকি পাঁচটি বিধানসভাতেই তৃণমূলের রত্না দে নাগকে ধরাশায়ী করেন। সে বার ফলাফলে পুলওয়ামা-কাণ্ডের রেশ থাকলেও হুগলি কেন্দ্রে হারের জন্য দলের অন্দরের কোন্দলকেই বেশি দায়ী করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। টিকিট ঘোষণার পর এ বার চুঁচুড়ায় সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সে ভাবে প্রকট হয়নি। ‘ভিন্ন গোষ্ঠী’র কর্মীরাও একজোট হয়ে রচনাকে জেতাতে পথে নেমেছেন।
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের কণ্ঠে প্রত্যয়, ‘‘গত লোকসভায় জিতে লকেট এলাকা ছেড়েছিলেন। কোভিড ও আমপানের মতো বিপদে কেউ ওঁকে দেখতে পাননি। মানুষের সব মনে আছে। ’২১-এর বিধানসভা ভোটের চেয়েও বেশি ব্যবধানে এ বার চুঁচুড়ার মানুষ লকেটকে হারাবেন।’’
টিকিট ঘোষণার আগে থেকেই লকেটকে নিয়ে দলীয় কোন্দল বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। এই কেন্দ্রে লকেটকে না চেয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। প্রকাশ্যেও মুখ খুলেছিলেন কেউ কেউ। বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় পোস্টারও পড়েছিল। টিকিট ঘোষণার পর সেই কোন্দল আরও প্রকট হয়। দলের একটি বড় অংশকে প্রচারের কাজে দেখা যায়নি। একাধিকবার রাজ্য নেতৃত্ব এলেও মানভঞ্জন হয়নি অনেকের। তবে, দিন দশেক ধরে আবারও একজোট হয়েছেন ‘বিক্ষুব্ধ’রা।
বিজেপি সূত্রের খবর, হুগলি কেন্দ্রে জয় ধরে রাখতে মরিয়া কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃত্ব। বুথ স্তরে 'মোদীর গ্যারান্টি'র লিফলেট বিলি, মণ্ডলভিত্তিক ছোট পথসভা করে প্রচারও চলছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে বসে যাওয়া ‘বিক্ষুদ্ধ’ নেতা-কর্মীরা সক্রিয় হয়েছেন। কিন্তু ময়দানে থেকেও তাঁরা জল ঢালবেন না তো! এই আশঙ্কাও রয়েছে নেতা-কর্মীদের একাংশের মনে।
গোষ্ঠী কোন্দলের কথা মানেননি লকেট। তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপিতে কোনও গোষ্ঠী নেই। সকলেই মোদীর সৈনিক। ছোটখাটো কিছু সমস্যা থাকলেও ভোটে তার প্রভাব পড়বে না।’’
হারানো ভোটব্যাঙ্ক ফেরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বামেরাও। এ বার কংগ্রেসকে তারা পাশে পেয়েছে। ফলে, নেক হিসাব পাল্টে যেতে পারে বলে দাবি করছেন বামনেতারা। এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী মনোদীপ ঘোষ নিত্যদিন বিভিন্ন বিধানসভার অলিগলি ঘুরে প্রচার সারছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy