Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

রাজু বিস্তা বাদ গেলে ইস্তফা, হুমকি পাহাড়ে

বিজেপির একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, পাহাড় এবং সমতলের বেশ কিছু নেতা বিস্তার দিকে রয়েছেন। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বিস্তার ঘনিষ্ঠতা আছে।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও রাজু বিস্তা।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ও রাজু বিস্তা। ছবি: টুইটার।

কৌশিক চৌধুরী , বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা, শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৮
Share: Save:

রাজু বিস্তা না হর্ষবর্ধন শ্রিংলা? পাহাড়ি পথের চড়াই-উতরাইয়ের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে দার্জিলিং আসনে দুই সম্ভাব্য প্রার্থীকে নিয়ে টানাপড়েন। কখনও শ্রিংলা দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, তো কখনও রাজু বিস্তা। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার সময়ে বিস্তা কার্যত একা হাতে সবটা সামলেছেন। শ্রিংলাকে সেই সময়ে ধারেকাছে দেখা যায়নি বলেই খবর। সেই সময়ে বিজেপির মধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছিল, তা হলে কি শেষ বাজি বিস্তাই মারলেন?

কিন্তু সম্প্রতি নতুন করে শ্রিংলার নাম ভেসে উঠেছে। আর তাতেই তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে পাহাড় বিজেপির মধ্যে। একাধিক জায়গা থেকে পদত্যাগের হুমকি আসতে শুরু করেছে। বিক্ষুব্ধের দলে আছেন দার্জিলিঙের বিজেপি বিধায়ক নীরজ জিম্বাও। আবার উল্টো দিকে, বিস্তা প্রার্থী হলে ইস্তফার হুমকি দিয়েছেন কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা।

বিজেপির একটি সূত্রে বলা হচ্ছে, পাহাড় এবং সমতলের বেশ কিছু নেতা বিস্তার দিকে রয়েছেন। বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বিস্তার ঘনিষ্ঠতা আছে। আবার শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের সঙ্গেও বিস্তার যোগাযোগ সুবিদিত। বিজেপি সূত্রে দাবি, শুভেন্দু ঘনিষ্ঠমহলে দাবি করেন, বিস্তা পাহাড়ের উন্নয়নে যা কাজ করেছেন, তাতে তাঁরই প্রার্থী হওয়া উচিত। এই একই দাবি শোনা যায় পাহাড়ের নেতা ও পদাধিকারীদের মুখেও। গত বছরের শেষ দিকে উৎসব মুখর ম্যালে দাঁড়িয়ে বিস্তা ঘনিষ্ঠ এক নেতা একই সুরে বলেছিলেন, ‘‘দাদাই প্রার্থী হবেন।’’ তার পরেই তিনি অবশ্য উদ্বেগ জানিয়ে বলেছিলেন, ‘‘তবে চিন্তা উল্টো দিকে যেন একাধিক প্রার্থী হয়। তা হলে ভোট ভাগ হয়ে দাদা আড়াই লক্ষ ভোটে জিতবেন।’’

কেন এই উদ্বেগ? পাহাড়ের মানুষের একাংশের মতে, পাঁচ বছরে কেন্দ্রের কাছে কিছু স্মারকলিপি দেওয়া এবং সংসদে কিছু বিবৃতি ছাড়া বিস্তা কাজের কাজ কিছুই করেননি। এমনকি, পাহাড়ের ১১ জনজাতির দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে তাঁদের তফসিলি জনজাতি তকমার ব্যবস্থাও করতে পারেননি। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া আছে। এর মধ্যে দার্জিলিং পুরভোটে জিতেছে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি, জিটিএ-তে জিতেছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।

বিজেপি সূত্রের দাবি, এমতাবস্থায় শ্রিংলার নাম উঠে আসে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটা বড় অংশ শ্রিংলার হয়ে সওয়াল করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, গত ১৫ বছরে বিজেপি পাহাড়ে কিছু করেনি বলে যে বিরোধী-প্রচার হচ্ছে, তার মোকাবিলা করতেই শ্রিংলাকে প্রার্থী করা যেতে পারে। শ্রিংলার হয়ে দিল্লির সচিবদের একটা অংশও এ বার সক্রিয়। তাঁরা বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও অনুরোধ জানিয়েছেন বলেও খবর।

এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভ পাহাড় বিজেপিতে। সুকনা-৩ মণ্ডলের সভাপতি অজয় শর্মা থেকে দার্জিলিং পার্বত্য জেলার যুব মোর্চার সহ-সভাপতি সুপেন্দ্র প্রধান, সকলেই দাবি করেছেন, রাজু বিস্তার বদলে অন্য কেউ প্রার্থী হলে তাঁরা মানবেন না। সুপেন্দ্র বলেন, ‘‘তেমন কিছু হলে যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চা, তফসিলি জাতি, জনজাতি, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি-সহ সব ক’টি মোর্চার কর্মীরা বসে যাবেন।’’ পোকরিয়া বং-চামং মণ্ডলের বিজেপি নেতা সঞ্জীব লামার কথায়, ‘‘রাজু বিস্তাকে প্রার্থী করার দাবি বিজেপির নয়, গোটা পাহাড়ের মানুষের। তিনি প্রার্থী না হলে পাহাড়ে বিজেপি বরবাদ হয়ে যাবে।’’ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য বলেন, ‘‘কোনও কর্মী আমার কাছে এই বিষয়ে কিছু বলেননি। বিষয়টি তাই আমার জানা নেই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE