আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত দুষ্কৃতীদের। ছবি: তাপস ঘোষ।
প্রতিবেশীকে মারধর করছিল এক দল যুবক। এমনকী গুলিও ছোড়ে তারা। কিন্তু, সেই গুলি তাঁর গায়ে না লেগে বিঁধল ঘটনাস্থলে হাজির কৌতূহলী এক ছাত্রের পেটে। রবিবার মধ্য রাতে হুগলির চুঁচুড়ার ঘটনা। মৃত ছাত্রের নাম সুদেব দাস (১৭)। সে ঘুটিয়াবাজার মল্লিকবাটি পাঠশালায় দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত।
কী ঘটেছিল ওই রাতে?
পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েবাড়ির কাজ সেরে ওই দিন রাতে বাঁশবেড়িয়া থেকে পীরতলার বাড়িতে ফিরছিল সুদেব। বাড়িতে ঢোকার মুখে পীরতলা মাঠের কাছে প্রতিবেশী অজিত প্রামাণিকের বাড়িতে হইচইয়ের আওয়াজ কানে আসে তার। কৌতূহলী সুদেব কী হয়েছে তা দেখতে ওই বাড়িতে যায়। সেখানে ঢুকে দেখে সে দেখে, অজিতবাবুকে তিন জন মিলে বেধড়ক মারধর করছে। এই পরিস্থিতিতে সুদেব প্রশ্ন করে, “ওকে মারছেন কেন?” ঠিক সেই সময়েই দুষ্কৃতীদের এক জন অজিতবাবুকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তবে তা তাঁর গায়ে না লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সুদেবের পেটে বেঁধে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে সে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখনই চম্পট দেয় তারা। সুদেবকে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকালে এলাকায় বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। ভাঙচুর চালানো হয় অজিত প্রামাণিকের বাড়িতে। তাঁদের অভিযোগ, ওই বাড়িতে বাইরের ছেলেদের আনাগোনা ছিল। রাতের দিকে সেই আসা-যাওয়া বেড়ে যেত বলে তাঁদের অভিযোগ। ফলে এলাকার সুস্থ পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল বলে দাবি। পুলিশ ও স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, অজিতবাবুর দুই মেয়ে। তাঁর বড় মেয়ে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে চুঁচুড়ার মিলনপল্লির একটি ছেলের সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন সকালে অজিতবাবুর বাড়িতে ওই ছেলেটি আসে। কথা কাটাকাটিও হয়। তখনকার মতো সেখান থেকে চলে যায় সে। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে অজিতবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় ওই ছেলেটি। পুলিশ যদিও এই ঘটনায় ওই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।
সুদেবের মৃত্যুকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারেননি স্থানীয়েরা। এলাকায় নিরীহ ছেলে বলেই পরিচিত ছিল সুদেব। আগামী বছর তার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার কথা। বাবা-মা এবং এক দাদার সঙ্গে পীরতলার ছাতাগলির বরুয়াবাগানে থাকত সে। সুদেবের বাবা স্বপনবাবু রিকশা চালাতেন। কিন্তু শারীরিক কারণে এখন আর তা পেরে ওঠেন না। মা পরিচারিকার কাজ করেন। অভাব অনটনের সংসারে পড়াশোনা চালানোটাই অসম্ভব হয়ে পড়েছিল সুদেবের। সে কারণেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানবাড়িতে ফুল দিয়ে সাজানোর কাজ শুরু করে সে। ওই রাতে বাঁশবেড়িয়ার এক বিয়েবাড়িতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিল সে। কিন্তু, এ ভাবে প্রাণ দিতে হবে তাকে, তা ভাবতে পারেননি বাসিন্দারা।
বনগাঁয় লক্ষ্য ছিলেন নেতা, কিন্তু গুলি বিঁধল শিক্ষিকার বুকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy