ধৃত সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দীপঙ্কর নন্দী।
কন্যাসন্তান তার প্রয়োজন নেই। তাই মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে গলা টিপে খুন করে কাপড়ে জড়িয়ে গঙ্গার পাড়ে ফেলে আসার অভিযোগ উঠল ওই শিশুরই বাবার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার হাওড়ার বেলুড়ে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, সন্তানের খুনের অভিযোগে বুধবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয়েছে বেলুড়ের রামলোচন সাহা স্ট্রিটের বাসিন্দা চটকল শ্রমিক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে।
সুব্রতবাবুর এক প্রতিবেশী জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ পাশের বাড়ি থেকে সদ্যোজাত এক কন্যাসন্তানের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেই কানে আসে তাঁকে গঙ্গায় ফেলে দিয়ে আসার কথা বলছেন সুব্রতবাবু। এর পরে হঠাৎই ওই শিশুর কান্না থেমে যায়।
এর পরে প্রায় এক ঘণ্টা আর কোনও কান্নার শব্দ পাননি তিনি। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ তিনি এলাকার লোককে বিষয়টি জানান। তাঁর মুখে সব কিছু শোনার পরেই এলাকার এক দল লোক সুব্রতবাবুর বাড়িতে চড়াও হন। তাঁদেরই এক জন জানান, তখন প্রায় রাত ১১টা। সুব্রতবাবুকে বাড়িতে গিয়ে ডাকতে একেবারে স্বাভাবিক ভাবেই তিনি সকলের সামনে হাজির হন। পাড়ার লোকজন জানতে চান তাঁর মেয়েটি কোথায়? তিনি দাবি করেন, তাঁর মরা মেয়ের জন্ম হয়েছে। এর পরেই বেশ কয়েক জন তাঁকে মারধর করে বলে জানা গিয়েছে। এলাকার মানুষের দাবি, কিছু ক্ষণ পরে সুব্রতবাবু স্বীকার করে নেন যে তিনিই তাঁর কন্যাসন্তানকে গলা টিপে খুন করেছেন। খবর দেওয়া হয় বেলুড় থানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১২টা নাগাদ সুব্রতবাবুকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গঙ্গার পাড় থেকে কাপড়ে মোড়া অবস্থায় উদ্ধার হয় ওই কন্যাসন্তানের দেহ। সুব্রতবাবু স্ত্রী পুতুলদেবীকে ওই দিন রাতেই স্থানীয় টি এস জায়সবাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাওড়া সিটি পুলিশের এডিসি (নর্থ) শ্রী হরি পান্ডে বলেন, “আটক করার পরে জেরায় সুব্রত তার কন্যাসন্তানকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। তার ভিত্তিতেই বুধবার দুপুরে তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
এলাকার মানুষ জানান, পুতুলদেবী সুব্রতবাবুর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। প্রথম পক্ষের একটি ১৬ বছরের ছেলে রয়েছে। স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ায় ওই ছেলেটি সুব্রতবাবুর কাছেই থাকে। এরই মধ্যে বছরখানেক আগে পুতুলদেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় সুব্রতবাবুর। এক বছর আগে একটি পুত্রসন্তানও হয় তাঁদের। মঙ্গলবার কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy