সংগৃহীত চিত্র।
উচ্চ মাধ্যমিকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে যে রকম থাকছে সুযোগ, পাশাপাশি থাকছে ঝুঁকিও। একের অধিক বিষয়ে ৩০ শতাংশ না পেলে একাদশের দ্বিতীয় এবং দ্বাদশের চতুর্থ সিমেস্টার-এ পরীক্ষার্থীদের ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পরীক্ষা দিতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে ধারা ৯(১) এবং ধারা ৯(২) অনুযায়ী এক বারই একটি বিষয়ের ক্ষেত্রেই উল্লিখিত নিয়মটি প্রযোজ্য হবে।
সিমেস্টার পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি সিমেস্টারে থাকছে ছ’টি করে পেপার। এর মধ্যে থাকছে দু’টি ল্যাঙ্গুয়েজ পেপার, ‘কম্পালসারি ইলেকট্রিভ’ পেপার থাকছে তিনটি এবং থাকছে ঐচ্ছিক বিষয়ে । উচ্চ মাধ্যমিক মূল্যায়ন করা হবে মোট ৫০০ নম্বরের। অর্থাৎ প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে (বেস্ট অফ ফাইভ) পাঁচটি বিষয় উত্তীর্ণ হতে হবে। তা যদি না হয় তা হলে একাদশের ক্ষেত্রে বছর নষ্ট হবে এবং দ্বাদশের ক্ষেত্রে পরবর্তী সিমেস্টারের ওই বিষয়ে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়েছে, একটি সিমেস্টারে পাশ করতে গেলে একজন পড়ুয়াকে পাঁচটি বিষয়ে প্রতিটিতে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। আবার কোনও একটি বিষয়ে পাশ নম্বরের থেকে ৫ শতাংশ কম নম্বর পেলে পাশ করার বিশেষ সুযোগ থাকছে।
আর এ ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকে উল্লিখিত নিয়ম রয়েছে তার ব্যবহারিক প্রয়োগের সীমিত বলে জানিয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “একাদশ থেকে দ্বাদশে উত্তীর্ণ হতে গেলে প্রত্যেকটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর না থাকলে ফেল বলে গণ্য করা হবে। শিক্ষা সংসদের উল্লিখিত নিয়ম অনুযায়ী ল্যাঙ্গুয়েজ ও অন্যান্য বিষয়ে পাশ করার দু’টি নিয়ম থাকলেও এক জন পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে একটি নিয়মই ব্যবহার করা হবে। তাই “সাপ্লিমেন্টারি” সুযোগের পাশাপাশি ঝুঁকিও থাকছে।”
ধরা যাক, পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে কোন একজন পরীক্ষার্থী বাংলা-সহ আরও একটি বিষয় ইতিহাস-এ ৩০ শতাংশ নম্বর তুলতে পারল না। সে ক্ষেত্রে তার প্রথম পত্রের নম্বর যদি পাশ নম্বরের থেকে ৫ নম্বরের মধ্যে থাকে তা হলে ওই পড়ুয়া বাকি যে কোন একটি বিষয় সর্বাধিক নম্বর থেকে ওই নম্বর যুক্ত করা হবে। অর্থাৎ ৯(১) ধারা প্রয়োগ হবে। সে ক্ষেত্রে ইতিহাসে কম নম্বর পেলেও অতিরিক্ত বিষয়ের ভাল নম্বর পেলেও ৯(২) ধারা প্রয়োগ করা যাবে না। অর্থাৎ ইতিহাসে ‘সাপ্লি’ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে।
এ প্রসঙ্গে, বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সিমেস্টার পদ্ধতি চালু করতে গিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে শুধু ড্রপ আউটই বাড়াবে না, অহেতুক জটিলতা তৈরি হবে। যে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পদ্ধতি চালু করতে যাচ্ছে তাতে হয়তো সুযোগ বাড়ছে, কিন্ত ছাত্রছাত্রীদের উপর অনেক চাপ পড়বে এবং হতাশ হয়ে অনেকে লেখাপড়া ছেড়ে দেবে। এই চিন্তা উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, কিন্তু স্কুল শিক্ষায় এই ধারণা চলবে না।”
উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার সময়ও বেশ কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। একাদশের প্রথম ও দ্বাদশের তৃতীয় পরীক্ষা হবে এক ঘন্টা ১৫ মিনিটের। আর একাদশের দ্বিতীয় ও দ্বাদশের চতুর্থ সিমেস্টারের পরীক্ষা হবে দু’ঘণ্টার। যে সমস্ত বিষয়ে থিয়োরি ও প্র্যাকটিক্যালে ৫০ শতাংশ করে থাকছে তাদের ক্ষেত্রে সিমেস্টারে ভাগ করা হচ্ছে ২০ শতাংশ ও ৩০ শতাংশ করে। ২০ নম্বরের ক্ষেত্রে থাকছে ৪৫ মিনিট, আর ৩০ নম্বরের ক্ষেত্রে পরীক্ষার সময়সীমা থাকছে এক ঘন্টা ১৫ মিনিট।
উচ্চ মাধ্যমিকের সিমেস্টার পরীক্ষা ব্যবস্থায় নয়া নিয়ম নিয়ে খুশি নয় শিক্ষক মহল। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, “আমরা আগেই বলেছিলাম এই পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের গভীরতা বাড়বে না। যেনতেন প্রকারে শুধুমাত্র কিছু নম্বর পাইয়ে দেওয়া হবে। আমাদের আশঙ্কা কতটা বাস্তব বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করলে তা বোঝা যাচ্ছে। এখানে যে কোনও মূল্যে পাশ করিয়ে দেওয়াটাকেই প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy