Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
School Exhibition for students

পাঁচ দশক পর কলা এবং বিজ্ঞান প্রদর্শনী, স্কুলের আঙিনায় কচিকাঁচাদের ভিড়

পড়ুয়াদের তৈরি বিভিন্ন মডেল, চিত্রকর্ম, লেখা ইত্যাদি এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। থিম ‘সেভ দ্য আর্থ’ বা ‘পৃথিবী বাঁচাও’। বৃষ্টি উপেক্ষা করে কচিকাঁচাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

কলা এবং  বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলে প্রদর্শনী।

কলা এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলে প্রদর্শনী। নিজস্ব চিত্র।

অরুণাভ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ১৬:২৬
Share: Save:

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক পর স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলে প্রতিষ্ঠা দিবসে সাড়ম্বরে পালিত হল প্রাথমিক বিভাগের পড়ুয়াদের কলা ও বিজ্ঞান প্রদর্শনী। স্কুলের হাজার জন পড়ুয়ার মধ্যে ৮০ জন শিশুকে বাছাই করা হয়েছিল এর জন্য। তাদের শিল্পকর্ম নিয়েই এই আয়োজন। প্রদর্শনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘আর্টস্কেপ অ্যান্ড সায়েন্স ফেয়ার’। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সেখানে কচিকাঁচাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

১৮৩০ সালে কলকাতায় স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন রেভারেন্ড আলেকজা়ন্ডার ডাফ। তাঁর উদ্যোগ এবং রাজা রামমোহন রায়ের সহযোগিতায় ইউরোপীয় শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়াপত্তন হয়েছিল বাংলা তথা ভারতে। সেই সময় থেকেই স্কটিশচার্চ কলেজিয়েট স্কুলে পাশ্চাত্য শিক্ষাধারার আঙ্গিকে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হত।

প্রদর্শনী নিয়ে উৎসাহিত আট থেকে আশি সকলে।

প্রদর্শনী নিয়ে উৎসাহিত আট থেকে আশি সকলে। নিজস্ব চিত্র।

১৯৮০ সালের পর থেকে হঠাৎই পড়ুয়াদের নিয়ে এই ধরনের প্রদর্শনী স্কুলের শ্রেণিকক্ষেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। ২০২৪ সালে ফের নতুন উদ্যোগে ১২ জুলাই ‘আর্টস্কেপ অ্যান্ড সায়েন্স ফেয়ার’-এর আয়োজন করা হল। পড়ুয়াদের তৈরি বিভিন্ন মডেল, চিত্রকর্ম, লেখা ইত্যাদি এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। থিম ‘সেভ দ্য আর্থ’ বা ‘পৃথিবী বাঁচাও’।

স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ বিভাস সান্যাল বলেন, “পরবর্তী প্রজন্মকে তৈরি করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। তাই আমরা এই প্রদর্শনীর থিম ভাবনায় রেখেছি ‘সেভ দ্য আর্থ’।” শুধু শিশুদের কিংবা সমাজকে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন করা নয়, ডিজিটাল দুনিয়ার আকর্ষণে মুঠোফোনে বন্দি হয়ে পড়া শিশুদের বাস্তবমুখী করার উদ্দেশ্যেও নতুন করে এই প্রদর্শনীর উদ্যোগ।

প্রদর্শনী নিয়ে উৎসাহিত আট থেকে আশি সকলে।

প্রদর্শনী নিয়ে উৎসাহিত আট থেকে আশি সকলে। নিজস্ব চিত্র।

এই ধরনের প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে পেরে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা যথেষ্ট উচ্ছ্বসিত। তাদের থিম ভাবনায় উঠে এসেছে বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে জল সংরক্ষণ কিংবা পাশাপাশি পরিবেশ দূষণের জেরে নতুন করে আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠার মতো বিষয়। সেই সব ভাবনাকেই তারা নানা ভাবে রূপ দিয়েছে একদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে। যেমন পরমজিৎ থেকে দূর্বায়ণ, প্রত্যেকেই ফুটিয়ে তুলেছে পৃথিবীর পরিবেশ সঙ্কট।

স্কুলেরই প্রাক্তনী এবং বর্তমানে শিক্ষক সুব্রত দাস বলেন, “আমরা আমাদের স্কুলকে সর্বদাই একটি সার্বিক শিক্ষার ক্ষেত্র হিসাবে পেয়েছি। আমরা শুধুমাত্র লেখাপড়ার সীমানার গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতাম না। আমাদের খেলাধূলা বাংলায় অন্য স্কুলের সামনে নজির সৃষ্টি করেছে। কালের বির্বতনে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে পড়ুয়াদের নিয়ে যে প্রদর্শনীর উদ্যোগ থমকে গিয়েছিল, তা আবার ফিরে আসায় স্কটিশ পরিবারের শিক্ষক হিসাবে আমি গর্বিত।”

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে প্রদর্শনীতে মডেল তৈরি পড়ুয়াদের।

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে প্রদর্শনীতে মডেল তৈরি পড়ুয়াদের। নিজস্ব চিত্র।

দ্বিশতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে ইতিপূর্বে প্রাথমিক থেকে শুরু করে একাদশ শ্রেণিতেকো-এড শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছ ঐতিহ্যবাহী এই স্কুল। এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ২৬৫ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে ১০০ জন ছাত্রী। শুধু প্রদর্শনী নয়, আগামী দিনে কৃত্রিম মেধা সেটাও কেরিয়ারের অন্যতম অংশ হতে চলেছে। তা নিয়েও বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Art exhibition Students
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE