প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, আর মাত্র ৪ দিনের অপেক্ষা। আগামী ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ২টো ৩০ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে চলেছে টেট পরীক্ষা। প্রস্তুতির চূড়ান্ত লগ্নে দাঁড়িয়ে পুরো বিষয়গুলিকে গুছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। বিগত দুটি প্রবন্ধে আমরা শিশুমনস্তত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি কী কী পড়তে হবে, কোন কোন থিয়োরি গুরুত্বপূর্ণ, বিভিন্ন রকমের প্রতিবন্ধকতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ইত্যাদি। সিলেবাসটিকে আমরা তিনটি মূলভাগে ভাগ ভাবতে শুরু করেছি। তৃতীয় ভাগে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার পাশাপাশি যেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা হল শিক্ষকের পারদর্শিতা বা স্কিল। বিস্তারিতভাবে জানতে হবে ক্লাসরুম ম্যানেজমেন্ট, মাইক্রোটিচিং। সঙ্গে মূল্যায়ণ বা এভালুয়েশন, অ্যাসেসমেন্ট প্রণালী, প্রশ্নপত্র তৈরি করার পদ্ধতি জানতে হবে। শিক্ষাপ্রণালী হিসেবে আরোহ প্রণালী, অবরোহ প্রণালী, প্রকল্প পদ্ধতি, সমস্যা সমাধানের প্রণালী, হিউরিস্টিক পদ্ধতি জানা দরকার। এছাড়া ৫ই মডেল (নির্মিতিবাদ), ব্লুমের ট্যাক্সোনমি, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষার নীতি (থর্নডাইক) মনে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীর শিখনে সাহায্যকারী এবং অসুবিধা তৈরি করার ফ্যাক্টরগুলি জানতে হবে। মাসলোর প্রেষণা তত্ত্ব সবসময়ই জরুরি ছিল এবং ম্যাকক্লেলেন্ডের অ্যাচিভমেন্ট মোটিভেশন থিয়োরিও যোগ হয়েছে। আসলে, যা কিছু শিক্ষা-শিখনের জন্য প্রয়োজন, সবই ধারণাগত ভাবে জানতে হবে। সিলেবাসে উল্লেখিত থিয়োরিগুলো আরও একটু খুঁটিয়ে পড়তে হবে।
আরও পড়ুন:
এই সমস্ত কিছুর পরও সবথেকে জরুরি হল রিভিসন এবং প্র্যাকটিস। কনসেপ্টগুলোকে মনে রাখা খুব দরকার, শুধু মুখস্থ করলে স্পষ্টতা, নির্ভুলতা আসা মুশকিল। তাই নিজের রিডিং স্কিলের উপরে ভরসা রেখো। প্রত্যেকটি প্রশ্ন মন দিয়ে পড়ে উত্তর দিয়ো, যে হেতু নেগেটিভ মার্কিং নেই। সময় নিয়ে আগের কিছু বছরের প্রশ্নপত্র সমাধান করলে নিজের উপর আরও খানিক আত্মবিশ্বাস বাড়বে। উত্তর বাছার সময় এলিমিনেশন বা অপনয়ন প্রক্রিয়ার ব্যবহার করতে হবে, যদি মনে হয় উত্তরের অপশনগুলো কাছাকাছি বাছার সময়, যেটি বাস্তবে সম্ভব, সেই উত্তরটিই বেছে নিয়ো, আইডিয়াল বা আদর্শ বাস্তবে সম্ভব, এমন উত্তর না বাছাই করাই ভালো।
সবশেষে বলি, নিজের যত্ন নিয়ো, নিজের খাওয়া, ঘুম, একটু মাইন্ডফুল নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, হাঁটাচলা করা বা পছন্দের কাজ করার সময় রেখো । নইলে ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। নিজেকে মাঝে মাঝে মনে করানো দরকার, তুমি এই পরীক্ষার জন্য তৈরি। ভয় যেমন খুবই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসবে এই সময়ে, মাঝেমাঝে পরীক্ষায় সাফল্যের পর আনন্দটা নিয়েও ভেবো। অনেক শুভেচ্ছা।
এই প্রতিবেদনটি ‘রাইস এডুকেশন’-এর পক্ষ থেকে টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সংকলিত।