ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভা ভোট আসন্ন। আর ভোট মিটতে না মিটতেই শুরু হয়ে যাবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি। লম্বা ছুটির জেরে স্কুলের পঠন-পাঠন ও সামেটিভ পরীক্ষা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক মহল। পাশাপাশি পঠন-পাঠনেও তৈরি হবে বৈষম্য বলে মনে করছে শিক্ষক মহল।
ভোটের দিনক্ষণ এখন ঘোষণা হয়নি। তার আগেই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে শিক্ষাকেন্দ্রগুলি চাওয়া হচ্ছে। আর সব মিলিয়ে স্কুলের পঠন-পাঠন কত দিন বন্ধ থাকবে তা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষক মহল থেকে অভিভাবকেরা।
এখনও সরকারি ভাবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়নি। তার আগেই যদি বিভিন্ন স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে তা হলে স্কুলগুলির পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে একটি বৈষম্য তৈরি হবে। বাহিনীর থাকার জন্য যে সব স্কুলগুলি আগে থেকে নেওয়া হবে সেখানে ছুটি ঘোষণা করতে হবে। আর যেগুলি নেওয়া হবে না তারা ভোটের এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ক্লাস করাতে পারবে। ফলে পড়ুয়াদের একাংশের মূল্যায়ন হবে, আর এক অংশের হবে না। অর্থাৎ বৈষম্য তৈরি হবে পঠন পাঠনের ক্ষেত্রে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটি অংশের স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে, অন্য স্কুলগুলিতে আসবে না। ফলে আগামী দেড় মাস ব্যাপক বৈষম্য তৈরি হবে এই দুই স্কুলের পঠন-পাঠনের মধ্যে।’’ পাশাপাশি পর্ষদের প্রশ্ন, শুধু মাত্র পর্ষদের অধীনে থাকা স্কুলগুলি নেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলি কেন নেওয়া হচ্ছে না।
যোধপুর পার্ক গার্লসের সহ প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী অনেক আগে চলে আসায় আমাদের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার দিনক্ষণ পরিবর্তন করতে হয়েছে। মার্চের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে এই পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। তবে সমেটিভ পরীক্ষার সিলেবাস কী ভাবে শেষ হবে, তা নিয়ে এখনও আমরা চিন্তায় রয়েছি।’’
পাশাপাশি, বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শর্বরী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঠন-পাঠনের রোজকার যে সূচি থাকে সেটা মানা না হলেও ছাত্রীদের যথাসম্ভব স্কুলে এনে পাঠ্যক্রম শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভিভাবকদের মতামতের জন্য ডেকে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁরা মতামত জানালে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’
শিক্ষকমহলের একাংশের বক্তব্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি এত আগে দখল করলে পঠন-পাঠনের ক্ষতি হবে। স্কুল কমিশনারের কোনও নির্দেশ ছাড়াই কী ভাবে স্কুলগুলির দখল নিচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, তী নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সংগঠনগুলি। বঙ্গীয় শিক্ষকের শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘পর্ষদ ও শিক্ষা দফতরকে অন্ধকারে রেখে যে ভাবে স্কুলগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই পদ্ধতি ঠিক নয়। শিক্ষা দফতর ও পর্ষদের অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’’
গরমের ছুটি পড়ে যাবে রাজ্যে স্কুলগুলিতে। তার ফলে পঠনপাঠনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। ডিসেম্বরের পর থেকে শুরু হয়েছে পরীক্ষার মরশুম। সে ক্ষেত্রেও ব্যাহত হয়েছে পঠনপাঠন। সদ্য পরীক্ষা শেষে শুরু হয়েছে ক্লাস। এই সময় যদি আবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এক অংশের স্কুলগুলিকে নিয়ে নেয়, তা হলে পঠনপাঠনের বৈষম্য তৈরি হবে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বৈষম্যের থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ সময়ে সিলেবাস শেষ করা। একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যেহেতু স্মার্ট ফোন দেয়, সে ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যমেও ক্লাস করানো যেতে পারে। কিন্তু প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতায় সমস্যা দেখা দেবে।’’
ইতিমধ্যেই শিক্ষা দফতর ও পর্ষদকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর স্কুলে থাকা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে,প্রয়োজনে কমিশনকে চিঠি দিতে চলেছেন শিক্ষা মন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy