পড়ুয়ার হাতে রোপনের জন্য চারাগাছ তুলে দিচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছবি: সংগৃহীত।
অনেক ত্যাগ ও তিতিক্ষার ফল ভারতের স্বাধীনতা। এই দিনটি আরও বিশেষ হয়ে ওঠে, যখন যোধপুর পার্ক বয়েজ়ের স্কুলের বাচ্চারা নিজেদের হাতে দেওয়াল পত্রিকা তৈরি করে। তাতে তারা নিজেরাই গল্প, কবিতা প্রবন্ধ লেখে। এই বিভিন্ন ধরনের লেখনী এবং ছবির মাধ্যমে পড়ুয়াদের দেশপ্রেম, বিজ্ঞানমনস্কতা, উদ্ভাবনী শক্তি, সৃজনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। তাই এই পত্রিকা প্রকাশনা ঘিরে পড়ুয়াদের উৎসাহ তাদের শিক্ষক হিসাবে আমাকে গর্বিত করে।
তবে শুধু বিশেষ দেওয়াল পত্রিকাই নয়, ‘ইকো ভয়েস’ নামে একটি পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত পত্রিকাও প্রকাশিত হয়ে থাকে এই দিনে। পরিবেশের রক্ষণাবেক্ষণ, সুস্থায়ী জীবনযাপনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ুয়াদের লেখনীতে প্রকাশ পায়। এই ছোট ছোট চেষ্টাগুলিই তাদের আগামীতে আরও সক্ষম এবং কর্তব্যপরায়ণ করে তুলবে বলে আমার বিশ্বাস।
স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে বছরের পর বছর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব পালন করে থাকি। এই দায়িত্ব কোথাও গিয়ে আমার দেশের নাগরিক হিসাবে যাবতীয় নৈতিক কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে, শিক্ষক হিসাবে পড়ুয়াদের প্রতি দায়বদ্ধতা বজায় রেখে দিনটিকে উদ্যাপনের এই আনন্দ ভোলার নয়। স্কুলের ছেলেমেয়েরা দেশের বিভিন্ন প্রদেশের লোকসংস্কৃতির চর্চা করে ‘বৈচিত্রের মাঝে ঐক্য’-র বার্তা দেয়। অনুষ্ঠানে শিক্ষকরাও সমান ভাবে অংশগ্রহণ করে পড়ুয়াদের উৎসাহ জোগান।
তবে শুধু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেই অবশ্য সীমাবদ্ধ থাকে না উদ্যাপন। স্কুলেই বৃক্ষরোপণ করা হয় এবং তাতে শিক্ষক থেকে পড়ুয়া— সকলেই অংশগ্রহণ করেন। তবে বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি পরিবেশকে রক্ষা করার যাবতীয় বিষয় নিয়ে আমরা পড়ুয়াদের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করি। একই সঙ্গে স্কুল প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করার কাজটাও আমরা সকলে মিলেই করি। এতে যেমন কাজ করার আগ্রহ পায় পড়ুয়ারা, তেমনই দলবদ্ধ ভাবে সব রকম কাজ করার বার্তাও আমরা তাদের দিতে পারি।
অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে প্রধান শিক্ষক হিসাবে পড়ুয়া এবং আমার সহকর্মীদের উদ্দেশ্যে নিয়মানুবর্তী এবং শৃঙ্খলাপরায়ণ হওয়ার বিষয়ে বক্তব্য পেশ করি। ছাত্রদের বোঝানোর চেষ্টা করি, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের যোগ্য মর্যাদা দিতে হলে প্রথমেই নাগরিক হয়ে ওঠার সমস্ত কর্তব্য পালন করতে হবে। নিয়মনীতি মেনে এগিয়ে চলতে হবে অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে। এক জন শিক্ষক হিসাবে আমার একটাই লক্ষ্য, ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy