ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অবিলম্বে উদ্যোগী হতে হবে। বিধানসভায় বিল এনে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতে হবে। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি দেওয়া হল। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবি জানাল ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন’।
অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে শিক্ষার যে অব্যবস্থা চলছে তা দূর হোক অবিলম্বে। সরকারি শিক্ষার মান বৃদ্ধি পাক, যাতে পড়ুয়ারা সরকারস্বীকৃত স্কুলে যায়। বেসরকারি স্কুলগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে দ্রুত আইন আনা হোক সরকারের তরফে।’’
বর্তমানে নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্তদের সিংহভাগই চান তাঁদের ছেলেমেয়েরা পড়ুক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। আর সেই ব্যাপক চাহিদার সুযোগ নিয়ে বিগত কয়েকবছর ধরে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুলের রমরমা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই অভিযোগ। মাত্রাছাড়া ফি-সহ অন্যান্য খরচ লাগামহীন। যা অনেকেরই সাধ্যের বাইরে বলে জানাচ্ছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের আরও অভিযোগ, আইন থাকলেও সেই আইনকে কার্যত তোয়াক্কা না করেই ফি বৃদ্ধি করে যাচ্ছে স্কুলগুলি।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য ২০২২-এ সরকার ঘোষণা করেছিল, বেসরকারি স্কুলগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি বিল আনা হবে। সেই মতো মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলেই জানিয়েছিল সরকার। সূত্রের খবর, সেই বছরই ১০ জুন বিল পেশ করার কথা ছিল বিধানসভায়। তবে তা হয়নি সেই সময়। কিন্তু ঠিক পরের বছর ২০২৩-এ কলকাতা হাই কোর্টে ওই বিল নিয়ে একটি হলফনামা দেওয়া হয় সরকারের তরফে। সেখানেও উল্লেখ করা হয় ওই বছরের ৭ অগস্ট বিলটি ক্যাবিনেটে পাশ হয়েছে। সংবিধান মেনে তা রাজ্যপালের কাছে পাঠানোও হয়েছে। তার পরে দু’বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও বেসরকারি স্কুলগুলি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি করা বিল কী অবস্থায় রয়েছে তা জানত না কেউ বলেই অভিযোগ অভিভাবকদের।
তবে চলতি মাসের ১১ তারিখ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে খুব শীঘ্রই বিল আনা হবে। আর এখানেই একাংশ অভিভাবকদের দাবি সরকারের বক্তব্যের মধ্যেই রয়েছে ধোঁয়াশা। তাঁদের অভিযোগ, কখনও বলা হচ্ছে রাজ্যপালের কাছে পর্যন্ত চলে গিয়েছে বিল আবার কখনও বলা হচ্ছে বিল নতুন করে আনা হবে। তাঁরা চান দ্রুত সরকার এই মর্মে জটিলতা কাটিয়ে বিল এনে আইনে স্বীকৃতি দিক।
যদিও ২০১৭ সালের মে মাসে বেলাগাম ফি বৃদ্ধি আটকাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছিলেন। একটি ‘সেল্ফ রেগুলেটরি কমিটি’ গড়ার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। স্কুলের ফি নির্ধারণ করতে একটি সাব-কমিটিও তৈরি করা হয়েছিল। তার পর থেকে এত বছর কেটে গেলেও সেই কমিটির অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছে ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশন’।