মায়ের সঙ্গে বংশিকা। নিজস্ব চিত্র।
সোমবার বোর্ডের ওয়েবসাইটে রেজ়াল্ট দেখে নিজের দু’চোখকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না বংশিকা। মায়ের জন্মদিনে এমন ‘সারপ্রাইজ’ দিতে পারবেন তা নিজেও কখনও ভাবেননি তিনি। সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই)-এর দ্বাদশের পরীক্ষায় ৫০০-এর মধ্যে ৪৯৬ নম্বর পেয়ে কলকাতায় সম্ভাব্য প্রথন স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন বংশিকা কোঠারি। শতাংশের নিরিখে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৯৯.২ শতাংশ।
সোমবার সকালে মায়ের জন্মদিনের ‘প্ল্যানিং’-এই ব্যস্ত ছিলেন বংশিকা। এর মধ্যে হঠাৎই দ্বাদশের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করে সিবিএসই। তার পর নির্ধারিত ওয়েবসাইটে নিজের ফল দেখে রীতিমত বাক্রুদ্ধ লক্ষ্মীপত সিংহানিয়া অ্যাকাডেমির হিউম্যানিটিজ় শাখার এই পড়ুয়া। খুশির জোয়ারে ভাসছে তাঁর পরিবারও।
কিন্তু কী ভাবে হল এমন অপ্রত্যাশিত ফল? কত জন গৃহশিক্ষকের সাহায্য নিয়েছেন স্কুল জীবনের এই বড় পরীক্ষার জন্য? বংশিকা বলেছেন, “একাদশ-দ্বাদশে আমার কোনও গৃহশিক্ষকই ছিল না! স্কুলেই পরীক্ষার জন্য সারা বছর প্রস্তুতি চলেছিল। বোর্ড পরীক্ষার আগে দু’টি প্রি বোর্ড পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল স্কুলের তরফে। ছিল প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা এবং অন্যান্য মূল্যায়ন পদ্ধতিও। এর ফলে কোন বিষয়ে ঠিক কোথায় কোথায় ভুল হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে শুধরে নেওয়ার অনেক সুযোগও পেয়েছি।” আর বাড়িতে? নিজের কোনও প্রস্তুতি? বংশিকার কথায়, “হ্যাঁ। তাও ছিল। দিনে এমনি তিন-চার ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। প্রায় প্রতিদিনই ইংরেজি-র বিভিন্ন দিক নিয়ে অনুশীলন করতাম। তবে শেষ এক মাসেই পরীক্ষার জন্য জোরকদমে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করেছি।”
মেয়ের এমন ফল দেখে চোখের জল যেন বাধই মানছে না বংশিকার মায়ের। তাঁর জন্মদিনে এমন ‘গিফট’ তাঁর ভাবনাতীত। স্কুল এবং মেয়ের প্রচেষ্টাকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন তিনি। তবে এ বিষয়ে মেয়ের ভিন্ন মত। বংশিকা জানিয়েছেন, স্কুলের সাহায্য থাকলেও মা-বাবা যদি তাঁর খারাপ সময়ে পাশে না দাঁড়াতেন, তা হলে কখনই এমন রেজ়াল্ট করা সম্ভব হত না। তাঁর আজকের সাফল্যের সমস্ত কৃতিত্ব তাঁর পরিবারের।
এখন কী স্বপ্ন এই তরুণীর? বলছেন, “আমার বরাবরই ইচ্ছে জার্নালিজ়ম বা সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ার। সেই লক্ষ্যেই এ বার সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।”
প্রসঙ্গত, এ বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল সিবিএসই-র দ্বাদশের পরীক্ষা। যা শেষ হয় ২ এপ্রিল। পরীক্ষা দিয়েছিলেন মোট ১৬২১২২৪ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাশ করেছেন ১৪২৬৪২০ জন। অর্থাৎ পাশের হার ৮৭.৯৮ শতাংশ। গত বছর ছিল ৮৭.৩৩ শতাংশ । এর মধ্যে ছেলেদের পাশের হার ৮৫.১২ শতাংশ এবং মেয়েদের পাশের হার ৯১.৫২ শতাংশ। অর্থাৎ পাশের হারে ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। পাশের হারের নিরিখে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে তিরুঅনন্তপুরম। তবে এ বছর কোনও মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে না বলে আগেই জানিয়েছিল বোর্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy