Advertisement
E-Paper

চাপে নতিস্বীকার নয়, অবশেষে ঘেরাওমুক্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

মঙ্গলবার পরীক্ষা নিয়ামক কমিটির বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত, এখনও পর্যন্ত যে ৪২ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি-র উপর ছাড়া হয়েছে।

JU

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। সংগৃহীত ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩০
Share
Save

অবশেষে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সাহায্যে বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের থেকে ঘেরাওমুক্ত হলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্য। ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঘেরাও থাকার পর শেষমেশ ক্যাম্পাস ছাড়লেন ভাস্কর গুপ্ত। মঙ্গলবার দুপুরে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং চলাকালীন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়ারা আজগুবি দাবি নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন। দীর্ঘ বাদানুবাদের পর অঙ্কে পাশ করানোর দাবি এবং স্কলারশিপের ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়কেই করাতে হবে— এই দাবি নিয়ে ঘেরাও শুরু করে পড়ুয়াদের একাংশ।

গতকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে গ্রেডকার্ড (পরীক্ষার ফলাফল) বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, বৃত্তি (স্কলারশিপ) পাওয়ার জন্য ‘দুর্নীতির আশ্রয়’ নেন পড়ুয়ারা। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত স্কলারশিপ আটকে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এর পরেই পড়ুয়াদের একাংশ তাঁদের দাবি নিয়ে কথা বলতে যান উপাচার্যের সঙ্গে। স্কলারশিপ আটকে যাওয়ায় অস্থায়ী উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও পড়ুয়াদের দাবি শুনতে নারাজ ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে দু’জন ছাত্রের সরকারি ওয়েবসাইটে আপলোড করা গ্রেডকার্ড দেখে সন্দেহ হয় আধিকারিরদের। এর পর দু’জনের নথি পরীক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ‌ফেরত পাঠানো হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়ার নম্বর বদলের অভিযোগ ওঠে। এর পর বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি বিকাশ ভবনকে জানায়। এখনও পর্যন্ত মোট ৪২ জন পড়ুয়া এই ধরনের ‘গ্রেডকার্ড’ বিকৃত করার কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন যে, এ বার থেকে প্রত্যেক পড়ুয়ার গ্রেডকার্ড যাচাই করা হবে। সেই মতোই তাঁরা বৃত্তি পাবেন। আপাতত পড়ুয়াদের বৃত্তি আটকে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত বলেন, “এই সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দুর্বৃত্তায়ন ঘটে গেছে। জীবনের প্রথম থেকেই তাঁরা দুর্নীতির আশ্রয় নিচ্ছেন। তবুও আশা রাখছি, তাঁদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। পরীক্ষা নিয়ামক কমিটি এঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও আমি তা নিতে দিইনি।”

মঙ্গলবার পরীক্ষা নিয়ামক কমিটির বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত, এখনও পর্যন্ত যে ৪২ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিল বা ইসি-র উপর ছাড়া হয়েছে। ফলাফল আপলোডের ক্ষেত্রে ‘চেকিং’-ও আরও কঠোর করবে বিশ্ববিদ্যালয়।

উল্লেখ্য, প্রতি ছ’মাস অন্তর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিমেস্টার পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষার গ্রেডকার্ডের ভিত্তিতে পড়ুয়ারা বৃত্তি পেয়ে থাকেন। অভিযোগ, সিমেস্টারে অঙ্কে অকৃতকার্য পড়ুয়ারা সেই বৃত্তি পাওয়ার জন্য ‘দুর্নীতির আশ্রয়’ নিয়েছেন। সরকারি ওয়েবসাইটে দেখা গিয়েছে, গ্রেডকার্ড আপলোড করার পর বহু পড়ুয়া পরীক্ষার নম্বর বদল করেছেন। অঙ্কে ফেল করেও কারচুপি করে নম্বর বাড়িয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো গ্রেডকার্ডের সঙ্গে সরকারি ওয়েবসাইটের গ্রেডকার্ডে অনেক ফারাক দেখা গিয়েছে। এই বিষয়টি সামনে আসতেই উপাচার্য কড়া পদক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন।

Jadavpur University JU VC Gherao

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}