পড়ুয়াদের কাছে নতুন আগ্রহের বিষয় নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ। ছবি: সংগৃহীত।
তারাদের দেখতে কার না ভাল লাগে! মহাকাশ কত দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে? কত আকাশগঙ্গা লুকিয়ে রয়েছে তাতে? রাতের আকাশে ধ্রুবতারা, কালপুরুষদের দেখতে দেখতে এমন হরেক প্রশ্ন উঁকি দেয় মনে। সে সবেরই উত্তর খুঁজতে এ বার পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোটে পাঞ্চেত পাহাড়ের মাথায় চড়তে হতে পারে। সঙ্গে আবার গুরুগম্ভীর অধ্যাপকদের সঙ্গে ক্লাস। তা হলেই জানার সুযোগ হবে মহাকাশ রহস্যভেদের খুঁটিনাটি।
অ্যাস্ট্রোনমি, অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স এবং অ্যাস্ট্রোট্যুরিজ়ম— এই তিনটি বিষয়ে আগ্রহীদের জন্য আয়োজিত হচ্ছে একটি বিশেষ কোর্স। যার নাম ‘সার্টিফিকেট কোর্স ইন অবজ়ারভেশনাল অ্যাস্ট্রোনমি’। সত্যেন্দ্রনাথ বসু ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস (এসবিএনসিবিএস) এবং সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই কোর্সটির ক্লাস পরিচালিত হবে।
কেন সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই কোর্সের জন্য বেছে নেওয়া? এসবিএনসিবিএস-এর অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স অ্যান্ড হাই এনার্জি ফিজ়িক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রামকৃষ্ণ দাস বলেন, মহাকাশ এবং নক্ষত্র দেখতে ভালবাসেন কিংবা ব্রহ্মাণ্ডের রহস্যভেদে আগ্রহী, এমন ব্যক্তিদের পুরুলিয়ার নবনির্মিত মানমন্দিরে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার ক্লাস করানোর জন্য পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্রের অর্থানুকূল্যে পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোটের পাঞ্চেত পাহাড়ের উপরে আধুনিক টেলিস্কোপ বসিয়ে একটি অবজ়ারভেটরি পয়েন্ট তথা মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানেই হাতেকলমে সমস্ত খুঁটিনাটি আগ্রহীদের শেখানো হবে।”
বিজ্ঞান নিয়ে দ্বাদশ উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা এই কোর্সটি করার সুযোগ পাবেন। তবে বিজ্ঞান শাখায় স্নাতক কিংবা পদার্থবিদ্যা নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন, এমন ব্যক্তিরাও আবেদনের সুযোগ পাবেন।
সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চিরঞ্জীব বর্মণ বলেন, “এই কোর্সটি শুধুমাত্র পড়ুয়াদের জন্য নয়। জ্যোর্তিবিজ্ঞান চর্চায় আগ্রহী যে কোনও পেশার ব্যক্তিদের আবেদনও আমরা গ্রহণ করব। তাঁদের হাতকলমে টেলিস্কোপ পরিচালনা থেকে শুরু করে স্টার ফর্মেশনের খুঁটিনাটি— এই সমস্ত বিষয় শেখাবেন এসবিএনসিবিএস, সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপকরা।”
শুধু ক্লাসই নয়, কোন কোন সময়ে কী ভাবে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করতে হয়, নক্ষত্রদের কী ভাবে চিহ্নিত করতে হয়, পর্যবেক্ষণ শেষে তথ্য সংগ্রহ এবং তা বিশ্লেষণের পদ্ধতি— এই সমস্ত বিষয়গুলি শেখানো হবে কোর্সে। মোট দু’টি সিমেস্টারের মাধ্যমে বেসিক এবং অ্যাডভান্স বিষয়গুলি ভাগ করে শেখানো হবে। এ ক্ষেত্রে কেউ প্রথম সিমেস্টারের পরেই কোর্স সম্পূর্ণ করে শংসাপত্র পাওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে, প্রতিটি সিমেস্টার শেষে প্রজেক্ট ওয়ার্ক এবং প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দিতে হবে, যার ভিত্তিতেই অংশগ্রহণকারীদের শংসাপত্র দেওয়া হবে।
এসবিএনসিবিএস-এর অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্স অ্যান্ড হাই এনার্জি ফিজ়িক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ-ও জানিয়েছেন, শুধু জ্ঞান অর্জনই নয়, পুরুলিয়া গড়পঞ্চকোট এলাকায় অ্যাস্ট্রোট্যুরিজ়মের প্রসার বৃদ্ধিতে যে ধরনের পেশাদারি দক্ষতা থাকা প্রয়োজন, তা নিয়েও অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ দেওয়া হবে। কোর্সের ক্লাস শুরু হবে ২০২৫- এর জানুয়ারি মাসে। আগ্রহীরা সরাসরি এসবিএনসিবিএস-এর ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন জানাতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy