প্রতীকী ছবি।
সার্চ ইঞ্জিন, অর্থাৎ ‘গুগল’ বা ‘মাইক্রোসফট’ যে জায়গা থেকে মানুষের সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে। সেই সার্চ ইঞ্জিন সামলাতে প্রয়োজন দক্ষ বিশেষজ্ঞদের। ইন্টারনেটের এই বিশেষ ক্ষেত্রে বর্তমানে কাজের সুযোগ রয়েছে প্রচুর। বিজ্ঞান, কারিগরি বিদ্যা, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে যাঁরা স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাচ্ছেন, তাঁরা এই ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’ (এসইও)-র বিভিন্ন শাখায়, বিশেষত অ্যানালিস্ট পদে কাজ করার কথা বিবেচনা করছেন। কিন্তু তার আগে এই বিষয়টি নিয়ে জেনে নেওয়া দরকার।
‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’ আসলে কী?
‘গুগল’, ‘মাইক্রোসফট’, ‘ইয়াহু’, ‘ইউটিউব’, ‘এওএল’, ‘মেটাগের’— এই সমস্ত চেনা অ্যাপ এবং সফটওয়্যারগুলি আসলে এক একটি সার্চ ইঞ্জিন। সোজা বাংলায়, এখানে পৃথিবীর মানুষের সমস্ত প্রশ্নের সমস্ত ধরনের উত্তর লুকিয়ে রয়েছে। এ বার এই উত্তরগুলো আসলে কতটা প্রাসঙ্গিক, কতটা সত্যি কিংবা কতটা মিথ্যে লুকিয়ে আছে, কী ভাবে সেই প্রশ্নগুলোর মধ্যে থাকা একটিমাত্র শব্দ সঠিক উত্তরের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে— এই সমস্ত বিষয় নিয়ে যে পদ্ধতিতে কাজ করা হয়, সেই পদ্ধতিকে বলা হয় ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’ বা সংক্ষেপে ‘এসইও’।
অ্যানালিস্টের কাজ কী?
যখন কোনও ব্যক্তি ইন্টারনেটে নিজের প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, তখন উল্টোদিকে, অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিনের সঙ্গে কাজ করা ব্যক্তিরা সব থেকে সেরা এবং সঠিক তথ্য সম্মিলিত ওয়েবসাইটগুলিকে সেরা ১০০র তালিকার মধ্যে সাজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রে একজন অ্যানালিস্ট ১ বা ১ এর বেশি ওয়েবসাইট নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন ‘অপটিমাইজ়িং টুল’ নিয়ে তাঁরা স্বাভাবিক ভাবে তাঁদের ওয়েবসাইটের তথ্য যাচাই করে নেন এবং সেরা ১০০ থেকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম সারির তালিকায় যাতে ওই ওয়েবসাইট জায়গা করে নিতে পারে, সেই বিষয়টি সুনিশ্চিত করে।
কী ভাবে এই পেশায় আসা যায়?
‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’ এখনও এই দেশে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত কোনও বিষয় নয়। তাই স্বীকৃত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ‘এসইও’-র কোর্স করার সুবিধাটুকুই এই দেশের পড়ুয়ারা পেতে পারেন। তবে যাঁরা দ্বাদশ শ্রেণি-সহ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়, বিশেষত, অঙ্ক এবং কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে রয়েছে বাড়তি সুবিধা। এ ছাড়াও বাণিজ্য বিভাগের যে পড়ুয়ারা ‘মার্কেটিং’ এবং ‘ডিজিটাল মার্কেটিং’ নিয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন, তাঁরাও এই পেশায় প্রবেশের সুযোগ পেতে পারেন।
কী কী বিষয়ে দক্ষতা থাকা দরকার?
‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন’-এ কাজ করার জন্য ‘জাভাস্ক্রিপ্ট’, ‘এইচটিএমএল’-র মতো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ় শিখে নিতে হবে আগ্রহী পড়ুয়াদের। একইসঙ্গে ‘গুগল অ্যানালিটিক্স’, ‘অ্যাডব অ্যানালিটিক্স’, ‘উপেরা’, ‘পিউইক প্রো’, ‘ফ্যাথম অ্যানালিটিক্স’-এর মতো মাধ্যমগুলিকে সঠিক ভাবে ব্যবহারের পদ্ধতি জানা প্রয়োজন। তবে শুধু এই মাধ্যমগুলি ব্যবহারেই সীমাবদ্ধ নয়। একইসঙ্গে প্রয়োজন রয়েছে ‘কন্টেট রাইটিং’, অর্থাৎ বিশেষ বিষয়ে লেখার মেধাও। কারণ যে সমস্ত ওয়েবসাইটের সঙ্গে কাজ করতে হবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই ওয়েবসাইটের জন্য ছোট ছোট উক্তি, শব্দবন্ধনী, বিজ্ঞাপন লিখে দিতে হয় ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন অ্যানালিস্ট’-দের।
কাজের সুযোগ কেমন?
এই পেশাটি সম্পূর্ণরূপে তথ্য প্রযুক্তি এবং কম্পিউটার নির্ভর। তাই যে সমস্ত পড়ুয়া ইন্টারনেটের বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল, তাঁরা এই পেশায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। এর পাশাপাশি, ‘গুগল’, ‘মাইক্রোসফট’-র মত বহুজাতিক সংস্থাতেও কাজের সুযোগ রয়েছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন অ্যানালিস্ট হিসেবে। এ ছাড়াও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিও নবীন পড়ুয়াদের দক্ষতার ভিত্তিতে ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ়েশন এগজিকিউটিভ’, ‘অ্যাফ্লিয়েটেট মার্কেটর’, ‘পে-পার-ক্লিক মার্কেটর’, ‘ডিজিটাল মার্কেটিং স্ট্যাটেজিস্ট’ পদেও নিয়োগ করে থাকেন।
বেতন?
এই পেশায় শুরুতে শিক্ষানবিশ হিসেবেই কাজের সুযোগ থাকে। কাজের দক্ষতার ভিত্তিতে ধীরে ধীরে পদোন্নতি হয়। তবে ছোট থেকে মাঝারি সংস্থায় কাজের ক্ষেত্রে ৫ থেকে ৬ অঙ্কের বেতনক্রম পাওয়ার সুযোগ রয়েছে দক্ষ ব্যক্তিদের। অভিজ্ঞতার নিরিখে সেই বেতনক্রম সংস্থা অনুযায়ী বাড়তে পারে।
তাই ইন্টারনেটের সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে উৎসাহ থাকলে পড়াশোনার পাশাপাশি পেশাদার কোর্স করে নিতেই পারেন পড়ুয়ারা। এতে শিক্ষানবিশির সুবিধা তো থাকছেই, সঙ্গে পেশায় প্রবেশের সুযোগও মিলে যেতে পারে সহজেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy