স্থাপত্যের ছন্দে গড়ে ওঠে জীবনের অবকাঠামো। প্রতীকী ছবি।
যে কোনও দেশের ইতিহাস, ভূগোল, সমাজ, সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক হল সেই দেশের স্থাপত্য। অন্য দিকে এই বিশেষ বিষয়টিই আবার প্রযুক্তি এবং কলাবিদ্যার সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা একটি শিল্প। শিল্পীর কল্পনার রঙে বাস্তবের বালি-সিমেন্টের অট্টালিকা তৈরি করার পদ্ধতির পোশাকি নাম স্থাপত্যশিল্প। বর্তমান যুগে দেশ থেকে বিদেশ, প্রায় সব জায়গাতেই প্রাদেশিক শিল্পকে স্থাপত্যবিদ্যার সাহায্যে বিভিন্ন আবাসন, বাংলো, কর্পোরেট বিল্ডিং, রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টের আওতায় আনা হচ্ছে। নগরায়নের পাশাপাশি, গ্রাম্য জীবনকেও অন্য রূপ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই কাজে নবীন স্থপতি শিল্পীদের চাহিদা বাড়ছে উত্তরোত্তর।
তাই এই বিশেষ বিষয়টিকে পাঠক্রমের পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের কাউন্সিল অফ আর্কিটেকচার বিভাগের অধীনে। বর্তমানে ভারতের মোট ৫৯৪ টি প্রতিষ্ঠানে স্থাপত্যবিদ্যা পড়ানো হয়ে থাকে।
এবার যারা স্নাতকস্তরে এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান, তাঁরা কী ভাবে শুরু করবেন?
যাঁরা বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া, বিশেষত, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা এবং রসায়নের মতো বিষয়গুলি রয়েছে যে সমস্ত শিক্ষার্থীদের, তাঁরাই এই বিশেষ বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীকালে পড়াশোনার সুযোগ পাবেন।
কোন প্রবেশিকা পরীক্ষাগুলিতে উত্তীর্ণ হতে হবে আগ্রহী পড়ুয়াদের?
ন্যাশনাল অ্যাপটিটিউট টেস্ট ইন আর্কিটেকচার নামক একটি প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হবে আগ্রহী প্রার্থীদের। এই পরীক্ষায় ন্যুনতম ৪০ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে তাঁদের। এছাড়াও জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়াম মেইন, জেনারেল এবিলিটি টেস্ট, আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স এগজ়ামের মতো প্রতিযোগিতামূলক প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে পরীক্ষার্থীদের।
কোন কোন ডিগ্রি কোর্সে পড়তে পারবেন পড়ুয়ারা?
স্থাপত্যবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনার জন্য স্নাতকস্তরে ব্যাচেলর অফ আর্কিটেকচার, ব্যাচেলর অফ প্ল্যানিং, ব্যাচেলর অফ টেকনোলজি আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যাচেলর অফ টেকনোলজি নাভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড ওশান ইঞ্জিনিয়ারিং - এই সমস্ত ডিগ্রি কোর্সে স্নাতক স্তরে পড়ার সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা।
এরপর স্নাতকোত্তর স্তরে মাস্টার অফ আর্কিটেকচার, মাস্টার অফ প্ল্যানিং, মাস্টার অফ প্ল্যানিং আরবান অ্যান্ড রুরাল প্ল্যানিং এবং মাস্টার অফ টেকনোলজি আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার সুযোগ থাকবে পড়ুয়াদের কাছে।
কোনও সার্টিফিকেশন কোর্স কী রয়েছে?
অন্যান্য শিল্পকেন্দ্রিক বিষয়ে মতো স্থাপত্যবিদ্যার ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু সার্টিফিকেশন কোর্সের সুযোগ। এই কোর্সগুলি করলে পেশায় প্রবেশের সুযোগ বাড়ে। ‘ইন্টালিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমস’, ‘জিওমেট্রিক ডায়মেনসনিং অ্যান্ড টলারেন্সিং ইউসিং এনএক্স ক্যাড’, ‘সেন্সর ফিউশন ইঞ্জিনিয়ার’, ‘সাসপেনশন ডিজ়াইন’-র মত বিভিন্ন কোর্স শিখে নিতে পারেন পড়ুয়ারা।
কাজের সুযোগ কেমন?
পড়াশোনা শেষ করার পর নবীন স্থপতিদের জন্য ইন্টার্নশিপ এবং চাকরির সুযোগ থাকবে। এছাড়াও আর্কিটেকচার ডিজ়াইনার, আর্কিটেকচার ইঞ্জিনিয়ার, ইন্টেরিয়র ডিজ়াইনার, আর্কিটেকচার ড্রাফটসম্যান, আর্কিটেকচারাল অ্যাসিস্ট্যান্ট, বিল্ডিং কনট্রাক্টর-সহ বিভিন্ন পদে চাকরির সুযোগ থাকছে পড়ুয়াদের জন্য।
তাই স্থপতি হওয়া মানে শুধু বাড়ি তৈরি করা নয়। কোনও একটি দেশের শিল্প, সংস্কৃতি, সমাজ, ইতিহাসের কথা লেখার কাজ করে থাকেন তাঁরা। এই বিদ্যায় পারদর্শীদের পেশার ক্ষেত্রে রয়েছে যথেষ্ট চাহিদা। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত বিদ্যায়ও সমান ভাবে দক্ষ হতে হবে পড়ুয়াদের। তবেই পেশায় প্রবেশের সুযোগ মিলবে দ্রুত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy