Advertisement
২৯ জানুয়ারি ২০২৫
Madhyamik 2025 Preparation Tips

সামনে মাধ্যমিক, নজর ফোনের স্ক্রিনে! অভ্যাস বদলাবেন কী ভাবে? রইল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

দুপুরের ঘুম কেড়েছে মোবাইলের স্ক্রিন। পড়া হয়ে গেছে বলে বিকেল পালিয়ে খেলাধুলোর বদলে গেম খেলছে আঙুল। সময়ের সঙ্গে ছোটদের এই বদলে যাওয়া ছবিটা যাতে পরীক্ষায় প্রভাব না ফেলে, তা দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদেরও।

Mobile phone and school students.

প্রতীকী চিত্র।

পার্থ কর্মকার
শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০১
Share: Save:

আঙুলের গতি বেড়েছে, তবে সেটা খাতায় ঝটপট লেখার থেকেও বেশি সক্রিয় মোবাইলের স্ক্রিন স্ক্রলিংয়ে। পড়াশোনার সময়ে বইয়ের মতোই যেন অপরিহার্য এই যন্ত্রটি। তবে, সেই সঙ্গে কমছে মনোযোগও। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সিরা প্রতিদিন ৬ ঘণ্টা ৩৬ মিনিট মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনে মনোযোগ দিয়ে থাকে। রোজকার জীবনের মাঝে এই অভ্যাস মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীদের তো বটেই, তাদের অভিভাবকদেরও চিন্তার বড় কারণ।

তা হলে উপায়? অভিভাবকদের একটু অন্য রকম ভাবে এই অভ্যাসকে হাতিয়ার করে নিতে হবে। আগে মা-বাবারা হ্যারিকেনের কেরোসিনের গন্ধে ঝিমিয়ে পড়া বাচ্চাদের ভয় দেখাতেন, ঘুমোলে জীবনও অন্ধকার হয়ে যাবে। ঠিক একই ভাবে প্রযুক্তিনির্ভর যুগে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ধরে রাখতে ওই স্ক্রিনকেই ব্যবহার করতে হবে।

প্রতীকী চিত্র।

প্রযুক্তি হয়ে উঠুক বন্ধু:

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ছলেই প্রযুক্তির সদ্বব্যবহার শেখাতে হবে। এর জন্য অনলাইনে গণিত চর্চার মজার অ্যাপ, বিজ্ঞাননির্ভর বিষয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভিডিয়ো টিউটোরিয়াল, কিংবা বাংলা সাহিত্যের গল্প, উপন্যাস জানতে অডিয়োবুক শোনা যেতে পারে। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং আর্কষণীয় ছাঁচে বিষয়বস্তুর উপস্থাপন শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতি আগ্রহ আরও বৃদ্ধি করবে। তবে, সময়ের গণ্ডি বেঁধে দিতে হবে। দিনের নির্দিষ্ট সময়েই এই মজাদার পড়াশোনা হোক, অন্য সময়ে নজর থাকুক বই-খাতায়।

ফিরুক গল্পের আসর:

দাদু-ঠাকুমার মুখে রূপকথার গল্প শোনার সময় খুঁজে পাওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। তাঁরা না থাকলে মা-বাবা কিংবা বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের নিজেদের কাজের মাঝেই সময় বার করে মোবাইল, ট্যাব, কম্পিউটারের স্ক্রিনের বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে। পড়াশোনায় আরও মন বসাতে গল্পের আসরের মতো করেই ঘরোয়া ক্লাসের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

শখ ও কৌতূহলকে গুরুত্ব দিন:

শুধুমাত্র পাঠ্যবই ধরে মুখস্থ করার দিন পাল্টেছে। শিক্ষার্থীদের শখ এবং আগ্রহ কোন স্রোতে বইছে, সেটাও নজরে রাখুন। কেউ যদি ছবি আঁকতে চায়, তাকে সেটা শেখার বিষয়ে উৎসাহ দিন। বিজ্ঞান নিয়ে যদি আগ্রহ থাকে, তা হলে নিজে হাতে কোনও মডেল বানিয়ে দিতে বলুন। মনোযোগ বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা আদর্শ হাতিয়ার।

ছবি: সংগৃহীত।

প্রকৃতির সঙ্গেও কাটুক সময়:

একটানা স্ক্রিন টাইম বা বইয়ে মুখ ডুবিয়ে পড়াশোনার মাঝে কিছু সময়ের জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসার চেষ্টা করুন। অভিভাবকদের সপ্তাহে অন্তত এমন কোনও জায়গায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন, যেখানে পৃথিবীর পাঠশালার সঙ্গে আলাপচারিতা সম্ভব। পাখির ডাক শোনা, নদী বা পুকুরের জলজীবনের ব্যস্ততা কিংবা গাছের ছায়ায় বসে ক্লান্ত দুপুরের পরিবেশ উপভোগ করার অভ্যাস থাকলে, শিক্ষার্থীদের ক্লান্তিও দূর হবে।

অভিভাবকদের স্নেহশীল এবং দৃঢ় হওয়া প্রয়োজন:

মা-বাবা হিসাবে সন্তানদের বন্ধু হয়ে ওঠা প্রয়োজন। তাদের প্রতিটি সমস্যা এবং চিন্তাভাবনা মন দিয়ে শোনার পাশাপাশি, বন্ধুত্বের শৃঙ্খলাও বজায় রাখতে হবে। মোবাইলের পর্দায় রাত জেগে চাঁদ দেখার বদলে আকাশে চাঁদ দেখার বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন। এতে সংযমের শিক্ষার আদানপ্রদান হবে।

১০ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং ৩ মার্চ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শুরু। জীবনের বড় পরীক্ষার আগের সময়টা ছাত্রছাত্রীদের জীবনের একটা বাঁকবদলের মুহূর্ত। এই সময়ে তাদের মনোযোগের গাড়ি যাতে সঠিক পথে চালিত হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব অভিভাবকদের। প্রযুক্তি, প্রকৃতি, গল্প, শখ—সব কিছুকে মিশিয়ে অভিভাবকদের এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে তাঁদের সন্তানেরা সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

WB Madhyamik 2025 Expert Advice Parents Exam Fear
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy