ডিএলএড কোর্স সংগৃহীত ছবি
গত কয়েক দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকতার চাকরিপ্রার্থীদের জন্য নানারকম সুসংবাদের ঘোষণা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, বহু প্রতীক্ষিত প্রাথমিক টেট পরীক্ষাটি পুজোর পর আগামী ১৫ ডিসেম্বর আয়োজিত হবে। তাই পরীক্ষার্থীদের হাতে এখন সময় খুব কম পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। প্রাথমিক টেট পরীক্ষাটি দিতে গেলে যে সমস্ত যোগ্যতার প্রয়োজন, তার মধ্যে সবসময়ই বিএড ডিগ্রির প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়। কিন্তু এই বিএড ডিগ্রিটি ছাড়াও আরও একটি যোগ্যতা থাকলে যে প্রাথমিক টেট পরীক্ষাটি দেওয়া যায়, তা হয়তো অনেকেরই অজানা। এই যোগ্যতাটি হল— ডিএলএড ডিগ্রি। এই প্রতিবেদনে সেই ডিএলএড-এর ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
ডিএলএড কোর্সটি কী?
ডিএলএড কোর্সটির পুরো নাম ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন। এই কোর্সটি দু'বছর ব্যাপি একটি কোর্স। এটি কোনও ডিগ্রি কোর্স নয়, বরং একটি ডিপ্লোমা কোর্স। এই কোর্সটির মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই কোর্সটি দূরশিক্ষার মাধ্যমেও করা যায়। কোর্সটি চারটি সেমেস্টারে বিভক্ত থাকে। যে সমস্ত চাকরিপ্রার্থী প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে পড়াতে চান, তাঁদের জন্য এই কোর্সটি খুবই জরুরি। এই কোর্সে শুধু থিওরি পড়ানো ছাড়াও ইন্টার্নশিপ ও ক্লাসরুমে শিক্ষকতার ব্যবহারিক প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। কোর্সটিতে মূলত শিক্ষকতার প্রক্রিয়া, শিশুবিকাশের নানা দিক ও ছাত্রদের সঠিক ভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকার বিষয়ে পাঠ দেওয়া হয়।
ডিএলএড কোর্সটিতে ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা:
১.কোর্সটিতে ভর্তির জন্য প্রার্থীকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে।
২. প্রার্থীদের কোনও স্বীকৃত বোর্ড থেকে দ্বাদশ শ্রেণি বা তার সমতুল কোনও ক্লাসে ৫০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে এসসি, এসটি, ওবিসি,শারীরিক ভাবে অক্ষম ও প্রাক্তন সেনাকর্মীদের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়।
৩. যে প্রার্থীরা বাংলা, হিন্দি, উর্দু, নেপালি বা সাঁওতালি মাধ্যমে ভর্তি হতে চান , তাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ওই বিষয়গুলি অত্যাবশক বিষয় হিসেবে থাকতে হবে।
৪. প্রার্থীদের ইংরেজি ভাষাটি দ্বিতীয় বা অন্য ভাষা হিসেবে থাকতে হবে।
এ ছাড়াও, প্রার্থীদের সাবলীলভাবে কথা বলার দক্ষতা, সৃজনশীল চিন্তাধারা, ধৈর্য ও ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোর সহজাত দক্ষতা থাকা দরকার।
বয়ঃসীমা
জেনারেল ক্যাটেগরির প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়স ৪০ হতে হবে। ওবিসি প্রার্থীদের বয়সও ৩৮ বছরের বেশি হলে চলবে না।
কোর্সের সিলেবাস:
এই কোর্সে মূলত শিক্ষকতার বিভিন্ন কৌশল, বিভিন্ন দর্শন-তত্ত্ব ও সাম্প্রতিক ক্লাসরুম প্রবণতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি পড়ানো হয়। বিষয়গুলি হল— বর্তমান সমাজ, শৈশব ও শিশুবিকাশ, নিজেকে বোঝার প্রচেষ্টা, ইংরেজি ভাষার পেডাগগি, গাইডেন্স ও কাউন্সেলিং, কগনিশন,সমাজ-সংস্কৃতির প্রেক্ষিত, নেতৃত্ব ও পরিবর্তন, চারুকলা ও শিক্ষা।
চাকরির সুযোগ:
ডিএলএড কোর্সটি করে প্রাথমিক শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক, এডুকেশন কোঅর্ডিনেটর পদে বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুল, উচ্চমাধ্যমিক স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, নার্সারি স্কুল, ডে কেয়ার সেন্টার,ও বিভিন্ন কোচিং ক্লাসে পড়ানোর সুযোগ পেতে পারেন প্রার্থীরা।
বেতন:
কোর্সটি করে চাকরির পর প্রার্থীরা বার্ষিক ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা রোজগার করতে পারেন।
পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ডিএলএড কলেজগুলি হল:
১. সুভদ্রা পাল পিটিটিআই কলেজ, মুর্শিদাবাদ
২. সেন্ট মেরিজ কলেজ ব্যাচেলর অফ এডুকেশন আন্ড হায়ার স্টাডিস
৩. শহীদ ক্ষুদিরাম কলেজ অফ এডুকেশন
৪. সত্যকিঙ্কর দে অ্যাকাডেমি
৫. সেন্ট্রাল মডেল কলেজ অফ এডুকেশন
এই বছরের জন্য ডিএলএড কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু এই কোর্সটির খুঁটিনাটি জানা থাকলে পরবর্তীকালে বিএড না হলেও ডিএলএড কোর্সটি করে প্রাথমিকে সহজেই পড়াতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy