শিশুবিকাশ ও শিক্ষাবিজ্ঞান-এর প্রস্তুতি। প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আয়োজিত প্রাথমিক টেট দোরগোড়ায়। দীর্ঘ বেশ কয়েকবছর পর আয়োজিত হতে চলেছে এই পরীক্ষা এবং বহু প্রতীক্ষা, বহু তোড়জোড়ের পর আবার একবার কিছু নতুন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মুখে। এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না একেবারেই। বেশ কয়েক বছর পর পরীক্ষা হওয়ার দরুন পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও এবার প্রচুর এবং প্রতিযোগিতাও বেশ কঠিন। আগামী ১১ ডিসেম্বর ২০২২, হাতে চলেছে পরীক্ষা এবং শেষ মুহূর্তের জন্য বিষয়ভিত্তিক পরিকল্পনাগুলো ঝালিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। এই পরীক্ষার জন্য মূলত ৫টি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়, যার মধ্যে চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এবং পেডাগগি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাগ। এই অংশ থেকে ৩০ নম্বরের প্রশ্ন আসবে, সে জন্য শুধু নয়, শিক্ষক হিসেবে নিজের প্রস্তুতি আরেকবার রিভিজিট করার জন্যও এই অংশের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।
ট্রেনিং চলাকালীন যে বিষয়গুলো বইতে পড়ার সুযোগ হয়েছে, সেগুলোই ক্লাসরুমে কী ভাবে শিক্ষা-শিখন পদ্ধতিকে আরও উন্নত করতে পারে এই বিষয়টি পড়ার সময় সেই চিন্তা মাথায় রাখা জরুরি। এই সিলেবাসের মূলত তিনটি ভাগ পাওয়া যায়। প্রথমটি হল, বিকাশের নীতি এবং কিছু খুবই নির্দিষ্ট থিয়োরিটিক্যাল কনসেপ্ট। যেমন, বিকাশের ধারণা, বিকাশের বিভিন্ন দিক, সামাজিকীকরণে পিঁয়াজে ভাইগটস্কির থিয়োরি, কোলবার্গের নৈতিক বিকাশের তত্ত্ব বুদ্ধির তত্ত্ব ইত্যাদি। দ্বিতীয়টি হল, ইনক্লুসিভ এডুকেশন বা অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা, যেটি জানতে হলে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সংক্রান্ত ধারণা এবং ক্লাসরুমে কী ভাবে এই প্রতিবন্ধকতাগুলি সহ শিখন সম্ভব, এই বিষয়ে একটি বোধ তৈরি করা খুবই প্রয়োজনীয়। তৃতীয়টি, শিখন ও শিক্ষাবিজ্ঞান মূলত শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা, শিখনের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল, প্রেষণা ও প্রক্ষোভ ইত্যাদি। তা ছাড়াও বিভিন্ন মনোবৈজ্ঞানিক শব্দের ব্যাখ্যা এবং বিভিন্ন স্কুল অফ থট-এ জনবাদের নাম, বিশেষত আচরণবাদের মূল বিষয়বস্তু জানা দরকার। নতুনভাবে প্রকাশিত সিলেবাসে ফ্রয়েডের থিয়োরি যুক্ত হয়েছে।
আসলে প্রত্যেকটি থিয়োরি পড়ার সময় তার সঙ্গে অন্য থিয়োরির একটা ধারণাগত যোগসাজশ দরকার নইলে বিকাশের স্তর সম্পর্কে সঠিক পরিষ্কার ধারণা তৈরি হবে না এবং ধারণা তৈরি না হলে অচেনা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন হবে। তাই, প্রথম অংশটুকু যেখানে বিভিন্ন বিকাশের ডোমেন যেমন -- শারীরিক, মানসিক, সামাজিক বিকাশের কথা বা তত্ত্ব আমরা পাচ্ছি, যেখানে এরিকসন, কোলবার্গ বা ভাষা সংক্রান্ত বিকাশের স্তর ইত্যাদি পড়ছি, একটা সামগ্রিক বোধ তৈরি করতে হবে। অর্থাৎ শৈশবে কোন থিয়োরি অনুযায়ী শিশু কী শিখতে সক্ষম, কী বলতে সক্ষম, কী করতে সক্ষম — এই সমস্ত এক জায়গা থেকে শিখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে, সাদা পাতায় ছক কষে পড়ার থেকে ভাল উপায় হয় না। মনে রাখার সুবিধার্থে বিভিন্ন কালি ব্যবহার করা যেতেই পারে।
শিখনের তত্ত্বগুলি এই অংশে অন্যতম জরুরি ভাগ। বিশেষত, পাভলভ, স্কিনার এবং থর্নডাইকের তত্ত্ব। সঙ্গে এই তত্ত্বের ক্লাসরুমে ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা দরকার। বুদ্ধিমত্তার তত্ত্ব সম্পর্কে জানা, কোন তত্ত্বের প্রবর্তক কে এবং কার মতে বুদ্ধিমত্তা কয় প্রকার, এটি ছক করে মনে রাখতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গেই আমরা সামাজিক লিঙ্গ, ভাষা এবং চিন্তনের যোগসূত্র, শিখন পরিমাপের প্রশ্ন তৈরি করা এবং বিকাশের বিভিন্নতার জন্য মানুষের বিভিন্ন আচরণ সম্পর্কে অবগত হব। বিষয়গুলি সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি প্রশ্নোত্তর অভ্যাস করাও প্রয়োজন যা সামগ্রিকভাবে সাফল্য পেতে সাহায্য করবে।
এই প্রতিবেদনটি ‘রাইস এডুকেশন’-এর পক্ষ থেকে টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে সংকলিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy