নিজস্ব চিত্র।
পরিবেশ নিয়ে সচেতনতার অনেকগুলি অভিমুখ আছে। পরিবেশ রক্ষারও নানা অভিমুখ। গাছ লাগিয়ে যেমন পরিবেশ রক্ষা করা যায়, গাছ না কেটেও তেমনই পরিবেশ রক্ষা করা যায়। নতুন জলাশয় তৈরি করে যেমন পরিবেশ সমৃদ্ধ করা যায়, আবার পুরনো জলাভূমিগুলি না বুজিয়ে, তাকে বাঁচিয়ে রেখেও পরিবেশের যত্ন নেওয়া যায়। কিছু কিছু এমন ক্ষেত্র আছে যেখানে নির্দিষ্ট কোনও জিনিস ব্যবহার না করলে বা কোনও আচরণ থেকে বিরত থাকলে উপকৃত হয় আমাদের চারপাশের পরিবেশ। যেমন, আমরা যদি পাখিহত্যা না করি তবে জীববৈচিত্র রক্ষা পায়। তেমনই, আমরা যদি প্লাস্টিক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকি তবে উপকৃত হয় পরিবেশই। সারা দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহারের বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে বহুদিন থেকেই। নানা জায়গায় এ সংক্রান্ত সভা, পদযাত্রা হচ্ছে। গড়ে তোলা হচ্ছে জনমত। বলা হচ্ছে, প্লাস্টিক যেহেতু জৈব বস্তু নয়, তা ‘বায়োডিগ্রেডেবল’ নয়, সেহেতু তা পরিবেশের প্রভূত ক্ষতি করে। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা অঞ্চলের মানুষও যে সারা দেশে ঘটে চলা ‘প্লাস্টিক হটাও অভিযান’ সম্বন্ধে কিছু জানেন না, তা নয়। তথাপি এখানকার মানুষকে এখনও প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। বাগদা ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েতের ছবিটা মোটামুটি একই। হেলেঞ্চা, বাগদা, বয়রা, সিন্দ্রাণী, চরমণ্ডল, পাথুরিয়া-সহ বাগদার প্রায় সব বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলির তরফে মাঝে মাঝেই সচেতনতা-প্রচার চালানো হয়। কিন্তু ওইটুকুই। প্লাস্টিক ব্যবহার করলে ধরপাকড় বা জরিমানা করা হচ্ছে না। ফলে মানুষের মধ্যে বিশেষ হেলদোলও চোখে পড়ছে না। প্রায় সব বাজারের বিক্রেতাদের সুর মোটামুটি একই। তাঁরা জানান, তাঁরাও চান প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ হোক। কিন্তু ক্রেতারা জোর করে ক্যারিব্যাগ চাইছেন। বিপরীতে ক্রেতাদের দাবি, ‘দোকানিরা ক্যারিব্যাগ না দিলে আমরা কোথায় পেতাম? তাঁরা দিচ্ছেন বলেই আমরা নিচ্ছি।’ ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে চলা এই চাপান-উতোরে কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি হওয়াটা থেমে থাকবে না। পরিবেশের ক্ষতিবৃদ্ধি হচ্ছেই। থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিকের গ্লাস ব্যবহার করা থেকে কিছুতেই বিরত হচ্ছেন না তাঁরা। এলাকার বিভিন্ন চায়ের দোকানেও প্লাস্টিকের ভাঁড় ব্যবহার হচ্ছে। দোকানিরা জানান, প্লাস্টিক ভাঁড়ে খরচা কম। তবে আমরা কাগজের গ্লাসও দোকানে রাখছি। কোনও ক্রেতা আপত্তি জানালে তাঁকে কাগজের গ্লাসে বা মাটির ভাঁড়ে চা দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে ভোটকেন্দ্র প্লাস্টিকমুক্ত করতে এলাকার বিভিন্ন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এগিয়ে এসেছিলেন। কিছুদিন আগে বাগদা এলাকার কিছু স্কুলের পক্ষ থেকে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সব পদক্ষেপ সত্ত্বেও সামগ্রিক ভাবে এলাকাবাসীর সচেতনতা সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। পথে-ঘাটে বা বাজারে সাধারণ মানুষ এখনও প্লাস্টিক ব্যবহার করে চলেছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্লাস্টিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে নিয়মিত প্রচার চালানো হয়। কিন্তু এলাকা প্লাস্টিকমুক্ত রাখতে এলাকাবাসীরও বিশেষ ভূমিকা আছে। তাঁদের আরও সচেতন হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy